বাসে ওঠার জন্য ব্যস্ত যাত্রীরা। ফাইল চিত্র।
আগের তিন দিনের তুলনায় বৃহস্পতিবার শহরে বেসরকারি বাস বেশি বেরোনোয় কিছুটা স্বস্তি মিলেছিল বাসযাত্রীদের একাংশের। শুক্রবার বেসরকারি বাসের সংখ্যা ফের বেশ কিছুটা কমে যাওয়ায় হয়রানি ফিরে এল। সেই সঙ্গে এ দিন মিনিবাস নামানোর কথা থাকলেও, আদতে তার সংখ্যা ছিল হাতেগোনা।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বেসরকারি বাস বৃহস্পতিবার নেমেছিল প্রায় ১০০০টি। আর বেসরকারি বাস মালিকদের সংগঠনগুলির দেওয়া হিসেব অনুযায়ী, এ দিন সেই সংখ্যা ছিল ৬৫০-র মতো। এ ছাড়া বাসের ট্রিপও কমেছে বলে জানাচ্ছেন বাস-মালিকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, কিছু নতুন রুটে এ দিন বেসরকারি বাস চালু হলেও চার দিন ধরে যে রুটগুলিতে বাস চলছিল, তার বেশ কয়েকটিতে এ দিন তা চলেনি। প্রসঙ্গত, সাধারণত দিনে কলকাতায় ৬ হাজার বেসরকারি, ২ হাজার মিনি এবং ১ হাজারের মতো সরকারি বাস চলে।
কেন বাসের সংখ্যা কমল? বেসরকারি বাস সংগঠনগুলির দাবি, গত চার দিন ধরে যাত্রিসংখ্যা কম। অফিসের সময়ে বাসে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীদের অনেক সময়ে পুলিশ নামিয়ে দিচ্ছিল। ফলে ওই সময়ে ট্রিপ বাড়িয়ে লাভ হচ্ছিল না তাঁদের। বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেটের সহ সভাপতি টিটো সাহা আবার বলেন, ‘‘অনেক বাস-কর্মী দূরে থাকেন। তাই বাসের সব কর্মী এখনও কাজে যোগ দেননি। রোটেশন অনুযায়ী বাস-কর্মীরা কাজ করেন। গত কয়েক দিন যাঁরা বাস চালাচ্ছেন, তাঁরা এ দিন কাজে আসেননি। যাঁদের কাজে যোগ দেওয়ার কথা, তাঁদের অনেকে দূরে থাকায় আসতে পারেননি। এই কারণেও কিছু রুটের বাস চলেনি।’’
আরও পড়ুন: ‘লকডাউনে বসে ছিলাম, সেই টাকাটা তুলে নিতে হবে তো!’
ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক প্রদীপনারায়ণ বসু বলেন, ‘‘কিছু নতুন রুটে এ দিন বাস চালানো হলেও কর্মীর অভাবে
বাসের ট্রিপ কমেছে।’’ মানিকতলা মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা এক বাস কন্ডাক্টর বলেন, ‘‘ট্রেন এবং মেট্রো না-চলা পর্যন্ত পর্যাপ্ত যাত্রী মিলবে না। কারণ, শহরতলি থেকে অফিস করতে আসা যাত্রী প্রায় নেই বললেই চলে। ফলে লাভ করার মতো যাত্রী হচ্ছে না আমাদের।’’
এ দিন কত সংখ্যক সরকারি ও বেসরকারি বাস চলেছে, তা জানতে বেশ কয়েক বার ফোন করা হলেও পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী ফোন ধরেননি। পরে
হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ করলে তিনি উত্তর দেন, ‘‘নট ইন্টারেস্টেড।’’
তবে পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সরকারি বাস চলেছে এক হাজারের মতো। যা বৃহস্পতিবারের তুলনায় ১০০- এর মতো বেশি। কিন্তু অভিযোগ, যে রুটগুলিতে যাত্রী বেশি নয়, এমন কিছু রুটে সরকারি বাস এ দিন বেশি চলেছে। যেমন শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নিউটাউন যাওয়ার বাস, সেক্টর ফাইভ যাওয়ার সরকারি বাসের দেখা মিলছে। অথচ ওই সব রুটে যাত্রী কম। ফলে বাস ফাঁকা যাচ্ছে। আবার ধর্মতলা বা অফিস পাড়ায় যাওয়ার যাত্রী বেশি হলেও সেই সব রুটে বাসের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় বেশ কম। সেই সঙ্গে সরকারি বাসগুলোর আসন পূর্ণ হয়ে গেলে তারা স্টপে দাঁড়ায়নি। টালিগঞ্জ এলাকাতেও গিয়ে দেখা যায়, কম যাত্রীর বাস রুটে বেশি সংখ্যক সরকারি বাস। অথচ হাওড়াগামী বা বিবাদী বাগগামী এলাকায় বাস কম আসছে।
এ দিন উল্টোডাঙা মোড়ে দেখা যায়, এক সরকারি বাসের ইনস্পেক্টর শান্তিরাম বসাক রাস্তায় নেমে যাত্রীদের ডাকছেন। তিনি বলেন, ‘‘যে জায়গায় যাত্রী বেশি যেতে চাইছেন, সেই অনুযায়ী বাসের গন্তব্যস্থল ঠিক করে বাস চালাচ্ছি।’’
বিকেলে ধর্মতলায় দেখা যায়, বেসরকারি বাস বেশ কিছুটা সময় পর পর আসছে। সরকারি বাস ভর্তি থাকায় দরজা বন্ধ। এক অফিস ফেরত যাত্রী বলেন, ‘‘সরকারি বাস দাঁড়াচ্ছে না। বেসরকারি বাস দেরিতে আসছে। এই ভাবে চললে ভোগান্তি আবার আরও বাড়বে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy