Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Firhad Hakim

বিতর্কে ফিরহাদ, খোঁচা পার্থের

নিশানায় যিনি, তিনি পুরমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। পুলিশ জানিয়েছে, থানায় হামলা ও পুলিশ পেটানোর অভিযোগ চেতলার ১৭ নম্বর বস্তির স্থানীয় তৃণমূল নেত্রী পুতুল হালদার, প্রতিমা ওরফে পূর্ণিমা দাস ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে।

পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও ফিরহাদ হাকিম।

পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও ফিরহাদ হাকিম।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৯ ০৩:৫১
Share: Save:

টালিগঞ্জ থানায় রবিবার রাতে পুলিশ পেটানোর ঘটনা সম্পর্কে অভিযোগের আঙুল উঠেছে রাজ্যের এক মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ কিছু লোকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, পুলিশ হামলাকারীদের ধরার পরে ওই মন্ত্রীর মাধ্যমে এলাকার কিছু লোক থানায় যায় এবং ধৃতকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসে। মঙ্গলবার রাতে তাদের একাংশ ফের ধরা পড়ে।
নিশানায় যিনি, তিনি পুরমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।

পুলিশ জানিয়েছে, থানায় হামলা ও পুলিশ পেটানোর অভিযোগ চেতলার ১৭ নম্বর বস্তির স্থানীয় তৃণমূল নেত্রী পুতুল হালদার, প্রতিমা ওরফে পূর্ণিমা দাস ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার বিকেলেই লালবাজারের গোয়েন্দারা পুতুল ও তাঁর বোন পূর্ণিমাকে গ্রেফতার করেছে। আজ, বুধবার তাঁদের আদালতে হাজির করানো হবে। ওই দিন কী ঘটেছিল, তার রিপোর্ট মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মার কাছে জমা দেন ডিসি (সাউথ) মিরাজ খালিদ।

ওই ঘটনায় চারজন গ্রেফতার হলেও মূল অভিযুক্ত পুতুলের ছেলে সোনু এবং ভাইপো আকাশ-সহ বাকিরা পলাতক ছিল। মঙ্গলবার গভীর রাতে মূল অভিযুক্ত আকাশ বসু এবং তার দুই সঙ্গী রণজয় হালদার এবং অক্ষয় রঞ্জনকে গ্রেফতার করা হয়। ফিরহাদ অবশ্য আগেই দৃঢ় ভাবে জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘‘আইন আইনের পথে চলবে। এ রাজ্যে আইনের শাসন ছিল, আছে, থাকবে। এ রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ঠিকই আছে। বিচ্ছিন্ন ভাবে সমাজবিরোধী থাকেই। এই ঘটনাটিও বিচ্ছিন্ন ঘটনা। পুলিশ এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যথেষ্ট সক্ষম।’’

এর মধ্যে রাজ্যের প্রবীণ মন্ত্রী ও তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য বিষয়টিতে তাৎপর্যপূর্ণ মাত্রা যোগ করে। পার্থবাবু এ দিন বলেন, ‘‘ভোট আর প্রশাসন এক নয়। ভোট রাজনীতিকে সামনে রেখে এ কাজ করা যায় না। কেউ প্রশাসনে থেকে প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে থাকলে, তারও তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা হওয়া দরকার।’’ পর্যবেক্ষকদের মতে, পুলিশ পেটানোর ঘটনায় ফিরহাদের অনুগামীদের ভূমিকার বিরুদ্ধেই পার্থবাবু মুখ খুললেন। পার্থবাবুর আরও বক্তব্য, ‘‘আইন মেনে পদক্ষেপ না করা হলে এমন ঘটতেই থাকবে। এমন চললে একদিন প্রশাসনকে কেউ মানবে না।’’

পাঁচ বছর আগেও আলিপুর থানায় ঢুকে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠেছিল ফিরহাদের অনুগামীদের বিরুদ্ধেই। এক গোয়েন্দা অফিসার জানান, পুতুলের ছেলে সোনু ওরফে গুল্লু এবং ভাইপো আকাশকে ধরতে পুলিশ বস্তিতে ঢুকলে মহিলা বাহিনী পুলিশকে ঘিরে ধরে। সেই সুযোগে অভিযুক্তেরা পালায়। পুতুলেরই বোনপো রণজয় হালদারের বিরুদ্ধে রবিবার রাতে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গোলমাল পাকানোর অভিযোগ ওঠে। পুলিশ তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। বোনপোর ফোন পেয়ে পুতুল বস্তির ৪০-৫০ জন মহিলা নিয়ে থানায় ঢোকেন এবং রণজয়কে ছাড়ানোর চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ।

পুলিশের দাবি, তাতেও কাজ না হওয়ায় পুতুল আরও লোক ডাকেন। শ’খানেক লোক নিয়ে থানায় পৌঁছন পুতুলের মেয়ে নিশা, ছেলে সোনু ওরফে গুল্লু, পুতুলের ভাইপো আকাশ-সহ মেঘা, শুভ, লাল্টু ও চুন্না। অভিযোগ, থানায় ঢুকে ওই বাহিনী প্রথমে মহিলা পুলিশদের উর্দি ধরে টানেন। বাদ যাননি পুরুষ কর্মীরাও। এমনকি, ওসি অনুপ ঘোষের ঘরে ঢুকে গালিগালাজও করেন। থানা লক্ষ্য করে ইট, পাথর ছোড়েন। জবাবে পুলিশ লাঠিচার্জ করায় বস্তির লোকজন যান ফিরহাদের বাড়িতে। মঙ্গলবার পুতুলের মেয়ে নিশা বলেন, ‘‘মেয়র একজনকে আমাদের সঙ্গে পাঠান। পুলিশ আমাদের অভিযোগ নেয়। রণজয়কে ছেড়ে দেয়।’’ নিশার অভিযোগ, পুলিশই মারধর করে। পুলিশ জানায়, নিশা এক সময় চেতলা থানায় সিভিক ভলান্টিয়ার ছিলেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy