তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি তাঁর বাবা এবং মাকেও তলব করল ইডি। সম্পত্তির বিস্তারিত তথ্য নিয়ে সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিতে হবে তাঁদের। অভিষেককে যে দিন ডাকা হয়েছে, সেই সপ্তাহেই অন্য এক দিন হাজিরা দিতে বলা হয়েছে অভিষেকের বাবা অমিত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মা লতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তলব যে করা হয়েছে তা ইডি সূত্রে জানা গেলেও ঠিক কত তারিখে, কখন তাঁদের ডাকা হয়েছে, এখনও পর্যন্ত সেই তথ্য মেলেনি।
লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অভিষেককে আগামী ৩ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টার সময়ে সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির হতে বলেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। ঘটনাচক্রে, আগামী ২ এবং ৩ অক্টোবর বাংলার বকেয়া পাওনা চেয়ে দিল্লিতে ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। কর্মসূচি চলাকালীন অভিষেকেরও দিল্লিতে থাকার কথা। সেই সময়েই ইডির তলব ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
এর আগে লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস মামলায় অভিষেকের মা লতার সম্পত্তির হিসাব চেয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি অমৃতা সিংহ এই সংক্রান্ত মামলায় ইডির তদন্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি জানিয়েছিলেন, এই তদন্তের নিট ফল শূন্য। কারণ, সংস্থা এবং সংস্থার সিইও অভিষেকের বিষয়ে ইডি বিশদে তথ্য দিতে পারেনি। এই সংক্রান্ত আরও কিছু তথ্য আদালতে জমা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি সিংহ। তালিকায় ছিল অভিষেকের মা লতার সম্পত্তির খতিয়ান, যিনি ওই সংস্থার ডিরেক্টর ছিলেন। মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ২৯ সেপ্টেম্বর। তার মধ্যে এই তথ্য ইডিকে আদালতে জমা দিতে হবে।
সংস্থার বাকি ডিরেক্টরদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল কি না, তাঁদের সম্পত্তির খোঁজখবর করা হয়েছে কি না, প্রশ্ন তুলেছিলেন বিচারপতি সিংহ। অভিষেকের বাবা-ও লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডসের অন্যতম ডিরেক্টর। ইডি সূত্রে খবর, অভিষেকের বাবা এবং মাকে তাঁদের সম্পত্তির হিসাব, মিউচুয়াল ফান্ড এবং সম্পত্তির যাবতীয় দলিল-দস্তাবেজ নিয়ে সিজিও কমপ্লেক্সে যেতে বলা হয়েছে।
তৃণমূলের কর্মসূচির দিনই ইডির সমন নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে অভিষেক এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি নাম না করে আক্রমণ করেছেন কেন্দ্রীয় সরকারকেও। অভিষেক লিখেছেন, ‘‘ঠিক যখন বাংলার পাওনা চেয়ে আমাদের দিল্লিতে যাওয়ার কথা, সেই সময়েই তলব করা হল আমাকে। অতএব বোঝা যাচ্ছে কারা আসলে ভীত এবং সন্ত্রস্ত। কারা ভয়ে কাঁপছে!’’ যদিও বাবা-মাকে তলবের বিষয়ে সমাজমাধ্যমে কিছু জানাননি অভিষেক।
এর আগে একাধিক বার অভিষেক এবং তাঁর স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তলব করেছিল ইডি। তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে এক বার দিল্লিতেও হাজিরা দিয়েছিলেন অভিষেক। কিছু দিন আগে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র কো অর্ডিনেশন কমিটির প্রথম বৈঠকের দিনও ডেকে পাঠানো হয়েছিল অভিষেককে। কমিটির সদস্য হিসাবে সেই বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা ছিল অভিষেকের। কিন্তু তিনি শেষ পর্যন্ত সেই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেননি তিনি। পরিবর্তে ইডির সমনে সাড়া দিয়েছিলেন। পঞ্চায়েত ভোটের আগে অভিষেকের নবজোয়ার যাত্রার সময়েও তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু প্রচারে ব্যস্ত থাকায় অভিষেক জানিয়েছিলেন, তাঁর পক্ষে ওই সময় প্রচার ছেড়ে ইডির দফতরে যাওয়া সম্ভব নয়। ভোট শেষ হওয়ার পর ইডি ডাকুক। তিনি যাবেন। সেই মতো সেপ্টেম্বরের শুরুতে অভিষেককে ডাকা হয়। কিন্তু এ বারও তাঁর বৈঠক ছিল। অভিষেক অবশ্য কথা রাখেন। বৈঠকে না গিয়ে ইডির দফতরে যান এবং বেরিয়ে বলেন, ‘‘এই দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের নিট ফল শুধু শূন্য নয়, মাইনাস টু। তবে আমাকে আবার ডাকলে আবার আসব।’’ তার পর এক মাসও কাটেনি। এর মধ্যেই আবার সমন এসে পৌঁছল অভিষেকের কাছে। অভিষেকের বাবা-মাকে ইডি এই প্রথম ডেকে পাঠাল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy