কৃষি আইনের প্রতিবাদে কলকাতায় সিপিএম-র মিছিল। নিজস্ব চিত্র।
প্রায় সাড়ে তিন মাস ধরে বিধানসভার অধিবেশন ডাকার দাবি জানিয়ে আসছে বিরোধী বাম ও কংগ্রেস। শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, বিধানসভার অধিবেশন ডেকেই কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের বিরোধিতা করা হবে। কিন্তু কেন্দ্র-বিরোধী অবস্থানে এক হয়েও আসন্ন অধিবেশনে প্রস্তাবে সর্বসম্মতি হবে কি না, সেই প্রশ্নে সংশয় দেখা দিচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার প্রেক্ষিতে বাম ও কংগ্রেস পরিষদীয় নেতৃত্বের দাবি, কেন্দ্রের ‘কালা কানুনের’ সর্বাত্মক নিন্দার পাশাপাশি এ রাজ্যে ২০১৪ ও ২০১৭ সালে পাশ হওয়া কৃষিপণ্য সংক্রান্ত আইনেরও বিরোধিতা করতে হবে। এমতাবস্থায় বাম ও কংগ্রেস জানিয়ে রেখেছে, প্রস্তাবের খসড়া দেখে তবেই তারা অবস্থান ঠিক করবে। পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘বিরোধীরা শুধু রাজনৈতিক লাভের অঙ্ক কষতে ব্যস্ত! সরকার প্রস্তাব আনলে সব দিক দেখেই আনবে। ওদের এত ভাবতে হবে না!’’
বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান মঙ্গলবার বলেছেন, ‘‘চাপে পড়ে মুখ্যমন্ত্রী এখন অধিবেশনের কথা বলেছেন, ভাল কথা। কিন্তু শুধু অধিবেশন ডাকলেই হল না। বিজেপি নেতারাই বলে বেড়াচ্ছেন, রাজ্যের আইন কেন্দ্রকে পথ দেখিয়েছে। দুই আইনেরই বিরোধিতা করতে হবে।’’ তাঁরা কি আশা করেন অ-বিজেপি দলগুলির সর্বসম্মত প্রস্তাব হবে? মান্নানের জবাব, ‘‘প্রস্তাব না দেখেই কী ভাবে বলা যাবে? সরকারি ভাবে আমরা পরিষদীয় নেতৃত্ব কোনও প্রস্তাবের কথা জানি না।’’ বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীও এ দিন বলেছেন, ‘‘কেন্দ্রের সর্বনাশা আইনের বিরুদ্ধে সর্বসম্মত প্রস্তাবই আমরা চাই। কিন্তু শুধু ভাষণবাজি করলে হবে না! রাজ্যের দু’টো আইনের বিরোধিতা করতে হবে। কৃষকদের জন্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের নিশ্চয়তা কী ভাবে রাজ্য দেবে, সেই ব্যাপারেও স্পষ্ট বক্তব্য চাই।’’ প্রস্তাবের খসড়া নিয়ে সরকার পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় কোনও আপত্তি নেই বলেও সুজনবাবু জানিয়েছেন।
এরই মধ্যে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ আবার অনাস্থা প্রস্তাবের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমার মনে হয়, উনি ভেবেচিন্তে অধিবেশন ডাকুন। যদি অনাস্থা এসে যায়, সরকারটাই পড়ে যাবে। আমার মনে হয়, সে সাহস উনি করবেন না! আমরাও অনাস্থা আনতে পারি। আমাদের কাছেও ভাল সংখ্যা আছে। বিধায়ক যাঁরা ঘোষণা করেছেন, আছেন। যাঁরা ঘোষণা করেননি, সেই সংখ্যাও বড়।’’ তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়ের কটাক্ষ, ‘‘উনি বিধানসভার নিয়মকানুন কিছুই জানেন না! অন্তত ৩০ জন বিধায়ক ওঁদের কাছে না থাকলে ওঁরা অনাস্থা আনতে পারবেন না। এখন ওঁদের কাছে রয়েছেন ১৪ জন।তবে সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি এক হয়ে গেলে আমাদের আর কী বলার থাকবে?’’
কেন্দ্রের তিনটি কৃষি আইন এবং বিদ্যুৎ (সংশোধনী) বিল বাতিলের দাবিতে কৃষকদের আন্দোলনের সমর্থনে এ দিন সন্ধ্যায় শহরের নানা দিক জুড়ে ৮টি মিছিল হয়েছে কলকাতা জেলা সিপিএমের ডাকে। গোলপার্ক থেকে হাজরা মোড় পর্যন্ত মিছিলে ছিলেন সুজনবাবু। ধাপা থেকে এন্টালির পথে মিছিলে ছিলেন সিপিএমের কলকাতা জেলা সম্পাদক কল্লোল মজুমদার। মিছিল শেষে রাস্তায় দাঁড়িয়েও সুজনবাবুর হুঁশিয়ারি, কৃষকের স্বার্থ রাজ্য সরকার না দেখলে মোদী সরকারের মতোই জনতার দরবারে তাদের বিচার হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy