ছবি: পিটিআই।
জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে অসমে যা হচ্ছে, তা অন্য বিষয়। বাংলায় এখন এনআরসি চালুর প্রশ্ন নেই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সরকারি বৈঠকে তিনি ওই ‘রাজনৈতিক’ প্রসঙ্গে আলোচনা করেননি বলে বুধবার জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই মন্তব্যের জেরেই এনআরসি-প্রশ্নে বাংলার শাসক দলের সুর নরমের অভিযোগ তুলে তোপ দাগল বিরোধীরা।
বাংলায় কোনও ভাবেই এনআরসি চালু করা যাবে না, এই দাবিতে গত সপ্তাহে কলকাতার রাজপথে মিছিল করেছিলেন স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী। তারও কয়েক দিন আগে এনআরসি রুখতে রাজ্য বিধানসভায় একমত হয়ে প্রস্তাব পাশ করেছিল তৃণমূল, কংগ্রেস ও বামেরা। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ নিয়মিতই হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন, বাংলায় এনআরসি হবে এবং তাতে দু’কোটি মানুষের জায়গা হবে না। অথচ এখন মুখ্যমন্ত্রীই এনআরসি অসমের বিষয় বলে উল্লেখ করায় সরব হয়েছেন বাম ও কংগ্রেস নেতারা। সরকারি বৈঠকে রাজনৈতিক আলোচনা করা যায় না বলে বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে চেয়েছেন শাসক শিবিরের নেতৃত্ব। তাঁদের আরও বক্তব্য, এনআরসি অসম চুক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত— এটাই বোঝাতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, এই চাপান-উতোরের দিনেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আবার বলেছেন, সারা দেশেই তাঁরা এনআরসি চালু করতে চান।
আড়াই বছর পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক হল মুখ্যমন্ত্রী মমতার। বৈঠকের পরে প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এনআরসি-প্রসঙ্গ সেখানে ওঠেনি। তার প্রেক্ষিতে বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘চার-পাঁচ পুরুষ ধরে রাজ্যে বসবাসকারী মানুষ এখন কাগজের খোঁজে হন্যে। সিবিআই তদন্তের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে মুখ্যমন্ত্রী এতই মরিয়া যে, মানুষের আশঙ্কার কোনও গুরুত্ব তাঁর কাছে থাকল না? বিধানসভায় আমাদের প্রস্তাবে তৃণমূল সমর্থন করল, উনি নিজে রাস্তায় নেমে হুঙ্কার দিলেন পারলে দু’জনের গায়ে হাত দিয়ে দেখাও! আমরা বলছি, আমাদের লাশের উপর দিয়ে এনআরসি করতে হবে! আর মুখ্যমন্ত্রী সামনে প্রধানমন্ত্রীকে পেয়েও এক বার বলবেন না?’’ বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলেন, ‘‘বাংলায় যদি এনআরসি চালু হওয়ার কোনও ব্যাপার না থাকে, তা হলে বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ হল কেন? সেটা কি প্রহসন? মুখ্যমন্ত্রীর তার মানে গোপন কোনও এজেন্ডা আছে?’’
বিরোধীদের আক্রমণের মুখে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বোঝাতে চেয়েছেন, সরকারি বৈঠকে রাজ্যের দাবি-দাওয়া ছাড়া অন্য বিষয়ে কথা হয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘দুই প্রশাসনিক প্রধানের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। বাংলার নানা দাবিদাওয়া নিয়েই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ তো দেখছি বৈঠকে গেলেও বিপদ, না গেলেও বিপদ!’’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহের সঙ্গে আজ, বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের দিকে নজর রাখছে বিরোধী শিবির। আর এই আবহে বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহের মন্তব্য, ‘‘যদি এটা অসমেরই ব্যাপার, তা হলে এখানে কীসের প্রতিবাদ? বাংলায় আতঙ্ক তৈরি করার জন্য ওঁর তো মানুষের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত!’’ বাংলায় গণ-প্রতিবাদ চেয়েই ২৭ সেপ্টেম্বর রাজভবন অভিযানের ডাক দিয়েছে নাগরিকপঞ্জি-বিরোধী যুক্ত মঞ্চ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy