স্কুল পরিচালন সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিরোধী জোটের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে চারজন জখম হয়েছেন বলে দাবি করল দু’পক্ষ। রবিবার দুপুর নাগাদ ঘটনাটি ঘটে রাজগঞ্জের প্রধানপাড়া গমিরুদ্দিন হাইস্কুলে। যদিও জলপাইগুড়ির পুলিশ কর্তারা জখম কোন ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি কী না জানে না। জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জেমস কুজুর বলেন, “এলাকায় সামান্য উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু কেউ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে কি না বলতে পারব না। নির্বাচন ঠিক মতো হয়েছে।” পরিচালন সমিতির ছ’টি আসনের সবক’টিতেই জয়ী হন তৃণমূল সমর্থক প্রার্থীরা।
স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায়ের দাবি, “জখম ব্যক্তিদের মধ্যে মহম্মদ ঝরু এবং মহম্মদ খইরুল নামে দুজন তাঁদের সমর্থক। মহম্মদ ঝরুকে গুরুতর জখম অবস্থায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এবং মহম্মদ খইরুলকে মগরাডাঙি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।” তৃণমূল নেতৃত্ব অভিযোগ করেন, সশস্ত্র সিপিএম সমর্থকদের হামলায় তাঁদের দলের ২ সমর্থক মারাত্মকভাবে জখম হয়। যদিও সিপিএম নেতৃত্ব ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁদের পাল্টা অভিযোগ, তৃণমূল সমর্থকদের তাণ্ডবে দলের কর্মী সমর্থকরা স্কুলের আশপাশে যেতেই পারেনি। পিটিয়ে নির্বাচনী এজেন্ট সহ দুজনকে বার করে দেওয়া হয়। পরে নিজেদের মধ্যে গোলমালে তৃণমূলের দুজন জখম হয়। খগেশ্বরবাবু বলেন, “সিপিএম, বিজেপি, কংগ্রেস, এসইউসি কর্মীরা একজোট হয়ে আমাদের কর্মীদের উপরে হামলা চালায়। একজনকে ছুরি মারে। অন্যজনের মাথা ফাটিয়ে দেয়।”
সিপিএমের রাজগঞ্জ জোনাল কমিটির সদস্য অমূল্য রায় বলেন, “আমরা বিরোধীরা এবার একজোট হয়ে প্রার্থী দিয়েছিলাম ঠিকই। গত শনিবার বিকেলের পর থেকে তৃণমূল সমর্থকরা স্কুল ঘিরে রাখে। কেউ ধারেকাছে যেতে পারেনি।” তিনি জানান, এদিন সকালে মহম্মদ রফিকুল নামে আমাদের নির্বাচনী এজেন্ট স্কুলে ঢুকলে পিটিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে দলের পঞ্চায়েত সদস্য মহম্মদ ময়জদ্দিনকেও পেটানো হয়। সন্ত্রাস চালানোর পর তৃণমূল নেতৃত্ব তাঁদের দুজন কর্মীকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর মিথ্যা কথা প্রচার করছে। অমূল্যবাবুর বলেন, “যাঁরা হাসপাতালে ভর্তি বলা হচ্ছে তাদের একজন তো বিকেলের পর থেকে এলাকায় দাপিয়ে বেড়ায়। সে কেমন করে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি, তা বোঝা গেল না।”
ছয় আসনের ওই স্কুল পরিচালন কমিটি দখলের জন্য সকাল থেকে এলাকা উত্তেজনা ছিল। বেলা বাড়তে শুরু হয় মহাজোটের সমর্থকদের সঙ্গে তৃণমূল সমর্থকদের বচসা। সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, নির্বাচনী এজেন্টকে মারধর করা ছাড়াও স্কুলের বাইরে থাকা কর্মীদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়। যে সমস্ত অভিভাবক বিরুদ্ধে ভোট দিতে পারে তাঁদেরও এলাকা থেকে তৃণমূল নেতৃত্ব ভয় দেখিয়ে ভোট দিতে বাধা দেন।
যদিও তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, পরাজয় নিশ্চিন্ত বুঝে উত্তেজনার সৃষ্টি করে নির্বাচনকে ভণ্ডুল করার জন্য সিপিএমের নেতৃত্বে মহাজোটের সমর্থকরা লাঠিসোটা নিয়ে তাঁদের কর্মী সমর্থকদের উপরে হামলা চালায়। পরে অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে বিরাট পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy