Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

রহস্যমৃত্যু প্রধান শিক্ষকের, অভিযোগ বান্ধবীর বিরুদ্ধে

হাইস্কুলের এক প্রধান শিক্ষকের অস্বাভাবিক মৃত্যুকে ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে রায়গঞ্জ শহরে। রাজীব বসাক (৪৩) নামে ওই শিক্ষককে খুন করা হয়েছে বলে তাঁর স্ত্রীর দাবি। যদিও পুলিশের কাছে মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। পুলিশ জানায়, মৃতের প্যান্টের পকেটে ছ’টি ঘুমের ওষুধ মিলেছে। বিষক্রিয়াতেই মৃত্যু হয়েছে বলে ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গিয়েছে।

রাজীব বসাক

রাজীব বসাক

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৪ ০৩:০৩
Share: Save:

হাইস্কুলের এক প্রধান শিক্ষকের অস্বাভাবিক মৃত্যুকে ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে রায়গঞ্জ শহরে। রাজীব বসাক (৪৩) নামে ওই শিক্ষককে খুন করা হয়েছে বলে তাঁর স্ত্রীর দাবি। যদিও পুলিশের কাছে মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনও স্পষ্ট নয়।

পুলিশ জানায়, মৃতের প্যান্টের পকেটে ছ’টি ঘুমের ওষুধ মিলেছে। বিষক্রিয়াতেই মৃত্যু হয়েছে বলে ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গিয়েছে। নেশাজাতীয় কোনও তরল বা ঘুমের ওষুধ খাওয়ার কারণেই বিষক্রিয়া হয়েছে কি না, তা জানতে মৃতের ভিসেরা পরীক্ষা করানোর জন্য কলকাতায় পাঠিয়েছে পুলিশ।

রাজীববাবুর বাড়ি রায়গঞ্জের রবীন্দ্রপল্লি এলাকায়। তিনি রায়গঞ্জের বন্দর উদয়চন্দ্র বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক। পুলিশ সূত্রের খবর, শনিবার রাত সওয়া ১২টা নাগাদ রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে ওই শিক্ষককে নিয়ে যান শহরের খরমুজাঘাট এলাকার বাসিন্দা গীতা বসু। কিন্তু, চিকিৎসকেরা রাজীববাবু মারা গিয়েছেন জানাতেই গীতাদেবী হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান বলে অভিযোগ। রবিবার রাজীববাবুর স্ত্রী তথা রায়গঞ্জের প্রমোদাসুন্দরী হাইস্কুলের পদার্থবিদ্যার শিক্ষিকা সোনালি বসাক গীতাদেবী, তাঁর স্বামী গোবিন্দ বসু ও গীতাদেবীর ভাই সুশান্ত দাসের বিরুদ্ধে রায়গঞ্জ থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন।

প্রধান শিক্ষক রাজীব বসাকের স্ত্রী-কন্যা। ছবি: তরুণ দেবনাথ

পুলিশ জানায়, অভিযুক্তেরা পলাতক। পুলিশ বারবার গীতাদেবীর বাড়িতে হানা দেয়। এ দিন অভিযুক্তদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, দরজায় তালা। মৃতের পরিবার সূত্রে জানা যাচ্ছে, একসঙ্গে স্কুলে ও কলেজে পড়াশোনার সুবাদে গীতাদেবীর সঙ্গে রাজীববাবুর পরিচয় দীর্ঘদিনের। সোনালিদেবী এ দিন বলেন, “গীতা আর আমার স্বামীর মধ্যে ভাল বন্ধুত্বের সম্পর্ক রয়েছে বলেই ভাবতাম। এমনিতে স্বামী দেরি করেই বাড়ি ফিরতেন। শনিবারও দেরি হওয়ায় ফোন করে খোঁজখবর করি। এরই মধ্যে রাত দেড়টা নাগাদ গীতা আমাকে ফোন করে জানায়, আমার স্বামী ওর বাড়িতে চা খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। পরে জানতে পারি, স্বামী মারা গিয়েছেন।” সোনালিদেবীর অভিযোগ, কোনও আক্রোশ থেকে গীতাদেবী স্বামী ও ভাইকে নিয়ে রাজীববাবুকে বিষ মেশানো চা খাইয়ে খুন করেছেন।

গীতাদেবীর বাপের বাড়িতেও এ দিন অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তদের পাওয়া যায়নি বলে জানান রায়গঞ্জ থানার আইসি গৌতম চক্রবর্তী। তবে পুলিশ জেনেছে, বড় ছেলেকে নিয়ে তিন দিন ধরে গোবিন্দবাবু কলকাতায় রয়েছেন। শনিবার গীতাদেবী বাড়িতে একাই ছিলেন। পুলিশ জানতে পেরেছে, সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ রাজীববাবু সেখানে যান। তদন্তকারী অফিসারদের তাই ধারণা, রাতে গীতাদেবীর বাড়িতেই কোনও ঘটনা ঘটেছে। তার পরে রাজীববাবুকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রোগীকে ভর্তি করানোর সময় গীতাদেবীর নাম নথিভুক্তও রয়েছে। কিন্তু, রাজীববাবুর মৃত্যু হয়েছে জেনেই ওই মহিলা উধাও হয়ে যাওয়ায় রহস্য বেড়েছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE