ভক্তিনগর থানা এলাকার মামলা যাতে জলপাইগুড়ি জেলা আদালতের আওতা থেকে সরানো না-হয়, সেই আর্জি সহ গত শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের স্মারকলিপি জমা পড়ল। ওই আর্জি খতিয়ে দেখা হবে বলে মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসও মিলেছে বলে, দাবি করেছে জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশন।
স্মারকলিপি নিয়ে গত শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে নবান্নে দেখা করেছেন বার কাউন্সিল সদস্য গৌতম দাস। সে সময় মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে ছিলেন জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তীও। বার অ্যাসোসিয়েশন এবং জলপাইগুড়ির বিভিন্ন নাগরিক মঞ্চের দাবির কথা মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁরা জানান। তৃণমূল সূত্রের দাবি, আগামী ৩ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর জলপাইগুড়িতে আসার কথা রয়েছে। সে সময়ে মুখ্যমন্ত্রী ভক্তিনগর নিয়ে ঘোষণাও করতে পারেন বলে জানা গিয়েছে। সেই ঘোষণার কথা মুখ্যমন্ত্রীর ঘর থেকেই সৌরভবাবু জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সহ অনান্যদের জানিয়ে দেন। সৌরভবাবু বলেন, “জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশন যে দাবি তুলেছে তা যুক্তিপূর্ণ। আমি সেই দাবিকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দিয়েছি। তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। জলপাইগুড়িতে এসে এ বিষয়ে ঘোষণাও করতে পারেন।”
জলপাইগুড়ি জেলার ভক্তিনগর থানাকে নিয়ে ২০১২ সালের অগস্ট মাসে শিলিগুড়ি কমিশনারেট তৈরি হয়। শিলিগুড়ি পুলিশের অর্ন্তভুক্ত হলেও, ভক্তিনগর থানার মামলাগুলি জলপাইগুড়ি জেলা আদালতেই বিচারের জন্য পাঠানো হতো। সম্প্রতি আলিপুরদুয়ার জেলা গঠিত হওয়ার পরে রাজ্য সরকারেরই একটি বিজ্ঞপ্তিতে ভক্তিনগর থানাকে জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশের অধীনে দেখানো হয়নি। তা নিয়ে ফের আন্দোলন শুরু হয় জলপাইগুড়িতে। জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশন এবং নাগরিক মঞ্চের অভিযোগ, জলপাইগুড়ি জেলা আদালতের আওতা থেকেও ভক্তিনগরকে সরিয়ে দিতে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন স্তরে পুলিশের তরফে নানা আর্জি পাঠানো শুরু হয়। এর পরে আন্দোলনের মাত্রা আরও বেড়ে যায় জলপাইগুড়িতে। নাগরিক কনভেনশন ডাকা হয়। তখনই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।
স্মারকলিপিতে দাবি করা হয়, ভক্তিনগর থানা এলাকাকে জলপাইগুড়ি জেলা আদালতের আওতা থেকে যেন বাইরে নেওয়া না-হয়। জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অভিনন্দনবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি পাঠানো হয়েছিল। তা নিয়ে সরকারি সূত্রে আশ্বাস মিলেছে।” এদিকে, শুধু ভক্তিনগর নয় জলপাইগুড়ি জেলার কোন অংশই যাতে ভবিষ্যতে কেটে না নেওয়া হয়, তার আর্জি জানিয়ে আগামী বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলবেন জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশন এবং নাগরিকদের একটি প্রতিনিধি দল। ওই দিন স্পোর্টস ভিলেজ উদ্বোধনের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর শহরে আসার কথা রয়েছে। এ দিন শনিবার আদালত চত্বরে নাগরিক কনভেনশন করে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বার অ্যাসোসিয়েশনের স্টিয়ারিং কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক গৌতম পাল বলেন, “আমরা আশাবাদী। মুখ্যমন্ত্রী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। ভক্তিনগরকে পুলিশ কমিশনারেট থেকে বের করে আনার আর্জিও মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হবে।” কনভেনশনের সভাপতিত্ব করেন আইনজীবী সুদীপ্তকান্ত ভৌমিক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy