Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

বর্ধিত হারে ট্রেড লাইসেন্স ফি নেওয়া নিয়ে বিতর্ক

বোর্ড মিটিংয়ে ট্রেড লাইসেন্স ফি কমানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। অথচ তার পরেও শিলিগুড়ি পুর কর্তৃপক্ষ বর্ধিত হারে ফি নেওয়ায় বিতর্ক দানা বেঁধেছে। বৃহস্পতিবার তা নিয়ে অভিযোগও তুলেছেন বিরোধী বামেরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৪ ০৩:৩৫
Share: Save:

বোর্ড মিটিংয়ে ট্রেড লাইসেন্স ফি কমানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। অথচ তার পরেও শিলিগুড়ি পুর কর্তৃপক্ষ বর্ধিত হারে ফি নেওয়ায় বিতর্ক দানা বেঁধেছে। বৃহস্পতিবার তা নিয়ে অভিযোগও তুলেছেন বিরোধী বামেরা। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১২ সালের অগস্টে শিলিগুড়ি পুরসভা ট্রেড লাইসেন্স ফি বৃদ্ধি করে। ওই সিদ্ধান্ত যথাযথ পদ্ধতি মেনে হয়নি এবং মাত্রাতিরিক্ত হারে ফি বাড়ানো নিয়ে তার পর থেকেই অভিযোগ ওঠে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে প্রশ্ন তোলেন কাউন্সিলররা অনেকেই। মেয়র ওই বোর্ড মিটিংয়ে জানিয়ে দেন শীঘ্রই বিশেষ বৈঠক ডেকে ফি কমানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিরোধী বাম কাউন্সিলরদের অভিযোগ, এর পর গত ১ মার্চ কাউন্সিলরদের নিয়ে বিশেষ বৈঠক ডেকে সিদ্ধান্ত হয় বর্ধিত হারের পরিবর্তে পুরনো হারেই ফি নেওয়া হবে। অথচ বোর্ড মিটিংয়ে ফি কমানোর সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে অবৈধ ভাবে বর্ধিত হারে তা নেওয়া হচ্ছে। পুরসভার ক্ষমতাসীন কংগ্রেসি পুরবোর্ডের পাল্টা দাবি, তাঁরা ফি কমানোর ব্যাপারে নিয়ম জানতে চাইলে রাজ্য সরকার জানিয়ে দেয় এ ভাবে তা কমানো যায় না। তাই বর্ধিত হারে ফি নিতে হচ্ছে।

মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “ট্রেড সাইসেন্স ফি কমানোর সিদ্ধান্তের বিষয়টি রাজ্য সরকারকে জানানো হয়েছিল। সরকারের পুর বিষয়ক দফতর জানিয়েছে, বোর্ড মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফি কমানো যাবে না। তাই বর্ধিত হারেই ফি নিতে হচ্ছে। তবে কী করা যায় আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।” পুর দফতরের ওই নির্দেশ কেন কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক ডেকে বা বোর্ড মিটিংয়ে জানিয়ে দেওয়া হল না সেই প্রশ্নও তুলেছে বামেরা। তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলরদের তরফে কৃষ্ণ পাল বলেন, “মেয়র ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রতারণা করছে। অন্যায় ভাবে মাত্রাতিরিক্ত হারে ফি বাড়ানো হয়েছে। তখন তো রাজ্য সরকারকে জানানো হয়নি। এখন রাজ্য সরকারকে দোষারোপ করছে এই বোর্ড। নির্বাচনের সময় বামেরা তা নিয়ে সুবিধা নিতে চাইছে।”

এ দিন পুরসভার বিরোধী দলনেতা মুন্সি নুরুল ইসলাম বলেন, “ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে অভিযোগ জানিয়ে চলতি সপ্তাহে মেয়রের সঙ্গে আমরা দেখা করেছিলাম। নিয়ম ভেঙে বর্ধিত হারে ফি নেওয়া হচ্ছে। দোষ ঢাকতে ব্যবসায়ীরা স্বেচ্ছায় ফি জমা দিচ্ছেন বলে তাঁদের দিয়ে সাদা কাগজে মুচলেকাও লিখিয়ে নেওয়া হচ্ছে। অথচ বোর্ড মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয় বর্ধিত হারে ফি নেওয়া হবে না। পুরসভা সর্ম্পূণ বেআইনি কাজ করছে।” মেয়র গঙ্গোত্রীদেবী অবশ্য জানান, বিষয়টি নিয়ে জটিলতা না কাটা পর্যন্ত ফি নেওয়া বন্ধ রাখা হয়েছিল। ব্যবসায়ীরাই তাঁদের কাজের সুবিধের জন্য লাইসেন্স চাইছিলেন। তাই তাঁদের আবেদন মতো ফি নেওয়া হচ্ছে। কোনও মুচলেকা নেওয়া হচ্ছে না।

এ দিন পুরসভায় সার্বিক কাজকর্ম নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেও অভিযোগ তোলেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর অভিযোগ, পুরসভার আধিকারিকদের একাংশ ভোটের কাজে ব্যস্ত। মেয়র এবং তাঁর পরিষদরাও নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত থাকায় নিয়মিত পুরসভায় আসছেন না। তাতে পুর পরিষেবা ভেঙে পড়েছে। শহর জুড়ে মশার উপদ্রব বাড়লেও কর্তৃপক্ষের নজর নেই। বর্ষার আগে নিকাশি নালা পরিষ্কারের কাজ হচ্ছে না। পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজও বন্ধ। কাউন্সিলরদের উন্নয়ন তহবিলের টাকা পাচ্ছেন না। দুঃস্থ বাসিন্দাদের ছয় মাসের ভাতা বকেয়া পড়ে রয়েছে।

মেয়র অবশ্য বলেন, “সব বিষয়ে অভিযোগ করা বামেদের পুরোনো অভ্যাস। আমি এবং মেয়র পারিষদরা নিয়মিত অফিসে আসছি। প্রতিদিন নানা কাজের আলোচনা হচ্ছে। কোনও পরিষেবা ব্যহত হয়নি।” ভাতা বকেয়া থাকার ব্যাপারে মেয়র জানান, ভাতার টাকা বিলির চেকে সই হয়ে গিয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অ্যাকাউন্টে তা জমা পড়ে যাবে। কাউন্সিলরদেরও এলাকা উন্নয়নের টাকা দ্রুত দেওয়া হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

trade licence siliguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE