ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উন্নয়নের লক্ষ্যে ধারাবাহিক সেমিনারের আয়োজন করতে গিয়ে বেকার ও শিল্পোদ্যোগীদের একাংশের ক্ষোভ ও প্রশ্নের মুখে পড়লেন প্রশাসনিক কর্তারা। রাজ্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প দফতরের নির্দেশে ও পশ্চিম দিনাজপুর চেম্বার অব কমার্সের সহযোগিতায় মঙ্গলবার ইটাহার হাইস্কুল চত্বর, কালিয়াগঞ্জের রানিং বুলেট ক্লাব মাঠ ও হেমতাবাদ থানা মাঠে ‘প্রথম প্রয়াস’ নামে তিনটি পৃথক সেমিনারের আয়োজন করে জেলা প্রশাসন। বেকার, ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোগী মিলিয়ে তিনটি সেমিনারে সব মিলিয়ে হাজির হয়েছিলেন স্থানীয় প্রায় ৫০০ জন। জেলা শিল্প উন্নয়ন দফতর ও প্রশাসনের আধিকারিকেরা তাঁদের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প স্থাপন করার ব্যাপারে নানা পরামর্শ দেওয়া হয়। প্রশাসনের তরফে সবরকম সহযোগিতা করারও আশ্বাস দেন তাঁরা।
ইটাহারে আয়োজিত ওই সেমিনারে সেই আশ্বাস দিতে গিয়েই বেকার ও শিল্পোদ্যোগীদের একাংশের ক্ষোভ ও প্রশ্নের মুখে পড়েন জেলা শিল্প উন্নয়ন আধিকারিক শুভানু ধর, জেলা গ্রামোন্নয়ন সেলের প্রকল্প আধিকারিক অশোককুমার মোদক, ইটাহারের বিডিও বাপ্পা গোস্বামী, জয়েন বিডিও আবু আলম সহ প্রশাসনিক কর্তারা। সেমিনার চলাকালীন ইটাহার সদর এলাকার বাসিন্দা বিপ্লব গাঙ্গুলী নামে এক ব্যক্তি উত্তেজিত হয়ে বলেন, “জেলার অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বেকার সমস্যার সমাধানের কথা বলে আপনারা জেলায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উন্নয়নের জন্য নানা পরামর্শ দিচ্ছেন। আমার নিজস্ব জমি আছে। গত নয় বছর ধরে প্রশাসনের কাছে একাধিকবার আবেদন করা সত্বেও একটি ইটভাটা খোলার অনুমতি পাচ্ছি না। ব্যাঙ্কে গিয়েও ঋণ পাচ্ছি না।”
নাসিরুদ্দিন খান নামে এক শিল্পোদ্যোগীর ক্ষোভ, গত ১০ বছর ধরে তিনি প্রশাসনের দরজায় দরজায় ঘুরলেও তাঁর শৌচাগার রিং ও পাইপ কারখানার রেজিষ্ট্রেশন পুনর্নবীকরণ করাতে পারেননি। এমনকী, সরকারি উদ্যোগে কারখানার কর্মীদের বিমার ব্যবস্থাও হয়নি। তিনি বলেন, “কারখানার রেজিষ্ট্রেশন পুনর্নবীকরন না হওয়ায় সরকারি সুযোগ সুবিধা পাচ্ছি না। বিমার ব্যবস্থা না হওয়ায় কাজ করতে গিয়ে মাটি চাপা পড়ে কোনও শ্রমিক মারা গেলে তাঁর পরিবারেরও দায় নেওয়ার কেউ নেই। এরকম চলতে থাকলে জেলায় শিল্পের উন্নয়ন হওয়া সম্ভব নয়।”
এদিন ওই সেমিনারে হাজির ছিলেন ইটাহারের দুর্গাপুর এলাকার বাসিন্দা তৃণমূল কংগ্রেস নেতা তথা চালকলের মালিক উত্তম সাহা ও রায়গঞ্জের নেতাজিপল্লি এলাকার বাসিন্দা পেশায় ঠিকাদার অঞ্জন রায়। তাঁরা বলেন, জেলায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রসারে সারা বছর প্রচার চালাতে হবে।” আজ বুধবার চোপড়া ও ইসলামপুর, কাল, বৃহস্পতিবার গোয়ালপোখর-১ ও ২ ও শুক্রবার করণদিঘি ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় শিবিরের আয়োজন করেছে জেলা প্রশাসন। এরপর আগামী ১৯ অক্টোবর রায়গঞ্জে বিদ্যাচক্র স্কুলমাঠে জেলাভিত্তিক সেমিনার হওয়ার কথা। পশ্চিম দিনাজপুর চেম্বার অব কমার্সের সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর কুন্ডু ও ইটাহার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক প্রলয় গঙ্গোপাধ্যায় জানান, কৃষি, কুটির, মাছ, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, পোশাক তৈরি সহ যে সমস্ত ঘরোয়া সামগ্রী বাসিন্দাদের প্রতিদিন দরকার হয়, সেইসব শিল্প গড়ার ব্যপারে প্রশাসন তাঁদের সচেতন করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy