শিলিগুড়ির টেবল টেনিস খেলোয়াড়দের একাংশের বিরুদ্ধে ভুয়ো শংসাপত্র দিয়ে বয়স ভাড়ানোর অভিযোগ পুলিশে জানানো হতেই তা নিয়ে হইচই পড়ে। অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য পাল্টা অভিযোগ এবং নানা ভাবে চাপ বাড়ানো হচ্ছিল বলে দাবি করা হয়। তার জেরেই অভিযোগকারী তথা শিলিগুড়ির অপর এক টেবল টেনিস খেলোয়াড়ের বাবা জিতেন জানাকে সম্প্রতি তা প্রত্যাহার করে নিতে হয়েছে বলে টেবিল টেনিস মহলেই অভিযোগ উঠেছে।
যে সাত জনের বিরুদ্ধে বয়স ভাঁড়ানোর অভিযোগ উঠেছিল তাঁদের অভিভাবকদের একাংশের তরফেও নানা প্রভাবশালী মহলে ধরাধরি শুরু হয়। এমনকী, অপর এক খেলোয়াড়ের বাবা কৌশিক নাথ জিতেনবাবুর বিরুদ্ধে তাঁর ছেলের বয়স ভাড়ানোর অভিযোগ এনে পুলিশে পাল্টা অভিযোগ জানান। চাপানউচরের জেরে শেষপর্যন্ত উভয়পক্ষই অভিযোগ প্রত্যাহার করেন।
ওই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। শিলিগুড়ি থানার আইসি বিকাশকান্তি দে বলেন, “স্বেচ্ছায় উভয়পক্ষই আমাদের কাছে এসে পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার করতে চেয়েছেন।” জিতেনবাবু জানান, শিলিগুড়ি থানায় ছাড়া সিবিআইয়ের কাছেও তিনি অভিযোগ জানিয়েছিলেন। চাপে পড়ে থানায় করা অভিযোগ তোলার বিষয়টি ঠিক হলে তার বয়ান কী হবে জিতেনবাবু লিখে দেন। সেই মতো ২১ ডিসেম্বর উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে তাঁকে সই করতে বলা হয়।
জিতেনবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগকারী কৌশিকবাবু জানিয়েছেন, এখনই এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলার নেই। জিতেনবাবু বলেন, “নানা জায়গা থেকে চাপ আসছিল। একা আমার পক্ষে এ ভাবে লড়াই চালানোও সমস্যা। পুলিশ প্রশাসন থেকেও সহযোগিতা মিলছিল না। তাই অভিযোগ প্রত্যাহার করেছি।”
জিতেনবাবুর ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ হয়েছিল। সেই কারণেই কী তিনি আলোচনার মাধ্যমে অভিযোগ প্রত্যাহার করলেন? জিতেনবাবু বলেন, “একেবারেই তা নয়। আমাকে চাপ দিয়ে এক সময় ছেলের বয়স কমানোর জন্য শংসাপত্র তৈরি করে দিতে বলা হয়েছিল। ছেলে যেখানে অনুশীলন করত তাদের কথা না শুনলে সমস্যা হতে পারে বলে সেই মতো চলেছিলাম। বিষয়টি ঠিক হবে না বুঝে ওই শংসাপত্র ব্যবহার করতে নিষেধ করেছিলাম। ভুয়ো শংসাপত্র দেখিয়ে ছেলেকে কোথাও খেলাইনি।”
জিতেনবাবুর অভিযোগ, টেনিস সংগঠন কর্তাদের একাংশ খেলোয়াড়দের বয়স ভাঁড়ানোর ক্ষেত্রে মদত দেন। সম্প্রতি নর্থ বেঙ্গল টেবল টেনিস অ্যাসোসিয়েশনের এক সদস্য কমিটির কাজকর্ম নিয়ে সরব হয়ে আদালতেও মামলা করেছেন। আদালত থেকে এই কমিটির কাজকর্মে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। স্থগিতাদেশের পরেও কমিটি বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় দল পাঠানো, অনুশীলন শিবির চালানো এবং প্রতিদিনের কাজকর্ম আগের মতোই করছে বলে অভিযোগ।
নর্থ বেঙ্গল টেবল টেনিস অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম কর্মকর্তা অনুপ বসু সংস্থার কাজকর্ম নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ তুলে আদালতে মামলা করেন। অনুপবাবুর অভিযোগ, একই বছর দুই বার বার্ষিক সাধারণ সভা করে নির্বাচন ছাড়াই কমিটির সদস্যকে বদল করা হয়েছে। তা ছাড়া বয়স ভাঁড়ানোর যে অভিযোগ উঠেছে তাতে খেলোয়াড়দের হেনস্থা হতে হচ্ছে সংস্থার কাজকর্মের জেরেই। সংগঠনের সভাপতি অজুর্ন মান্তু ঘোষ এবং তাঁর স্বামী তথা সম্পাদক সুব্রত রায় বলেন, “আদালত থেকে চিঠি পাওয়ার পর আমরা সংগঠনের কোনও ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করছি না। আদালতের বিচারাধীন বলে এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলতে পারব না।” দল পাঠানোর বিষয়টি বছরের শুরুতেই ফেডারেশনকে জানানো থাকে বলে সুব্রতবাবুর ঘনিষ্ঠ মহল দাবি করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy