ঘটা করেই কোচবিহার শহরে চালু করা হয়েছিল সিটি বাস পরিষেবা।—ফাইল চিত্র।
কোচবিহারে বাসিন্দাদের সুবিধার জন্য চালু করা উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের (এনবিএসটিসি) ‘সিটি বাস’ পরিষেবা শিকেয় উঠেছে বলে অভিযোগ। কোচবিহার শহরের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের পাশাপাশি লাগোয়া গুড়িয়াহাটি ও রাজারহাট এলাকার বাসিন্দারা চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ২০০১ সালে পর্যায়ক্রমে চারটি সিটি বাস চালু হয়। তারমধ্যে ৩টি বাসের পরিষেবা দুই মাসের বেশি সময় থেকে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। নিউ কোচবিহার বাসস্ট্যান্ড থেকে পিলখানা রুটে একটি সিটি বাস চালু রয়েছে।
সেটি অবশ্য সময়সূচির তোয়াক্কা না করে খেয়ালখুশি মতো চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। তারপরেও বন্ধ রুট চালু কিংবা অনিয়মিত সিটি বাস পরিষেবা চাঙা করার ব্যাপারে নিগম কর্তৃপক্ষের কোন হেলদোল নেই বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। পরিস্থতির জেরে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে এ বার আন্দোলনের প্রস্তুতি শুরু করেছেন বাসিন্দারা। এনবিএসটিসি-র ম্যানেজিং ডাইরেক্টর সুবল রায় বলেন, “নিগমের বাস চালক ও কন্ডাক্টরদের অনেকে স্বেচ্ছাবসর নেওয়ার জন্য কিছু রুটে পরিষেবা দিতে সমস্যা হচ্ছে। তাছাড়া সিটি বাসের একাধিক রুট অলাভজনক হয়ে পড়েছিল।”
নিগমের পরিচালন বোর্ডের সদস্য আবদুল জলিল আহমেদ বলেন, “মূলত চালকের অভাবে তিনটি সিটি বাস চালানো যাচ্ছে না। একটি বাস অবশ্য চলছে। পুজোর আগে শূন্যপদ পূরণ হলে পরিষেবা স্বাভাবিক করা যাবে বলে আশা করছি।”
ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা জানান, ২০১১ সালে নাটাবাড়ির বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ নিগমের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকার সময় সিটি বাস পরিষেবা চালু হয়। প্রথমে দুটি রুটে দুটি বাস দিয়ে পরিষেবা চালু হয়। কিছুদিনের মধ্যে চাহিদার জেরে আরও দুটি সিটি বাস নামানো হয়। মহিলা কন্ডাক্টর, রবীন্দ্র সংগীত শোনানার মত চমকও দেওয়া হয়। শহরের নিউবাসস্ট্যান্ড থেকে লঙ্কাবড়, বকুলতলা ও রাজারহাট রুটের ৩টি সিটি বাস পরিষেবা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পুলিশ লাইন, স্টেশন রোড, পান্থশালা রোড, ২ নং কালীঘাট রোড, ব্যাঙচাতরা রোড, কাছারি মোড়, গুঞ্জবাড়ি মোড়ের মত শহর ও সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের যাতায়াতে ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে রিকশা। একই সঙ্গে অলাভজনক হয়ে পড়ায় সিটি বাস বন্ধের ব্যাপারে নিগম কর্তৃপক্ষের যুক্তি উড়িয়ে দিয়েছেন বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, প্রতিটি রুটেই পর্যাপ্ত ভিড় হত। ফলে লোকসানের অজুহাত মেনে নেওয়া যায় না। নাগরিক অধিকার সুরক্ষা মঞ্চের সভাপতি রাজু রায় বলেন, “সিটি বাসে ভিড় হত না, লাভ হয়নি এই যুক্তি মানা যায় না। তা না হলে বাসের সংখ্যা বাড়ানো হত না।” বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিরোধীরা। বিজেপির জেলা সম্পাদক নিখিল দে বলেছেন, “এনবিএসটিসির সঠিক পরিকল্পনা না থাকাতেই মানুষ পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy