এনসেফ্যালাইটিসের আতঙ্কের ছায়া এ বার শ্রাবণী উৎসবেও। ময়নাগুড়ির জল্পেশ মন্দিরে রাত জেগে পুজো দিতে আসা ভক্তদের ভিড় কমেছে। দিনে পুজো দিয়ে ফিরে চলে যাচ্ছেন ভিন রাজ্যের ভক্তরা। তাঁদের অনেকে মন্দির সংলগ্ন এলাকার থিকথিকে জলকাদা দেখে এতটাই সন্ত্রস্ত, যে অন্য বছরের মতো সময় কাটানোর কথা ভাবছেন না। মন্দির কমিটির সম্পাদক গিরিন্দ্রনাথ দেব বলেন, “ভক্তরা এনসেফ্যালাইটিস আতঙ্কে ভুগছেন। অন্য বছরের মতো এ বার রাত জেগে পুজো দেওয়ার ভিড় নেই। অনেকে সকালে এসে দুপুরে ফিরে যাচ্ছেন। প্রশাসনকে সব জানিয়েছি।”
বিজ্ঞানীরা এনসেফ্যালাইটিসের সংক্রমণ এড়াতে যে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দিয়েছেন তার কিছুই মন্দির ও সংলগ্ন এলাকায় নেই বলে অভিযোগ। ভক্তদের অভিযোগ, মন্দির লাগোয়া দুটি পুকুর পাড় নোংরায় ভরা। আশপাশে খানাখন্দে জমা জল মশার আঁতুরঘরে পরিণত হয়েছে। মন্দিরের সামনে বাজারের পরিবেশ দেখে বোঝার উপায় নেই, জেলা জুড়ে মারণ রোগের প্রকোপ চলছে। বৃহস্পতিবার নেপালের ঝাপা জেলা থেকে পরিবার নিয়ে জল্পেশে পুজো দিতে আসেন বীরবাহাদুর থাপা ও গোপাল ছেত্রী। সংবাদ মাধ্যমে এনসেফ্যালাইটিসের প্রকোপের কথা জানার পরে তারা পুজো দিয়ে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মন্দিরের বাইরে পুকুর সংলগ্ন এলাকার নোংরা পরিবেশ দেখিয়ে আলিপুরদুয়ারের খোলটার বাসিন্দা পরেশ মল্লিক প্রশ্ন করেন, “কে বলবে এনসেফ্যালাইটিসে ১৭ জন মারা গিয়েছেন এই জেলায়। মশা ঘুরছে।” ময়নাগুড়ির বিডিও সংহিতা তলাপাত্র জানান, মন্দির চত্বর এলাকায় ব্লিচিং ও মশা মারার ধোঁয়া ছড়ানোর জন্য ব্লক স্বাস্থ্য কর্তাদের বলা হয়েছে। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সন্দীপ বাগ বলেন, “ফগিং মেশিন বাইরে থেকে আসবে। ওই কারণে অপেক্ষা করা হচ্ছে।” প্রশাসন ও মন্দির কমিটির উদাসীনতার মধ্যে গত ১৩ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে শ্রাবণী উৎসব। চলবে ১১ অগস্ট পর্যন্ত। প্রতি রবিবার তিস্তা নদীতে স্নান সেরে বাঁক কাঁধে প্রায় দশ কিলোমিটার দূরে জল্পেশ মন্দিরে পৌঁছে পুজো দেওয়া ওই উৎসবের রীতি। মন্দির সূত্রের খবর, গত রবিবার রাতে মন্দিরে মাত্র ছয় হাজার ভক্ত পুজো দিয়েছেন। তুলনায় দিনে ভিড় বেশি। পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভাপতি সুভাষ বসু বলেন, “গত বুধবার জেলা প্রশাসনের কর্তারা সভা করে কী ব্যবস্থা নিতে হবে জানান। শ্রাবণী উৎসবের প্রচার আগামী রবিবার থেকে শুরু হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy