Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
রেশনও কম

একশো দিনের টাকা মেলে না, অনটন সাবেক ছিটে

একশো দিনের কাজের টাকা মিলছে না। বেসরকারি জায়গায় কাজ নেই। প্রয়োজনের তুলনায় রেশনও মিলছে কম। ডাল সেদ্ধ, ভাতই এখন সম্বল সাবেক ছিটমহলের ত্রাণশিবিরের বাসিন্দাদের।

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:৪৬
Share: Save:

একশো দিনের কাজের টাকা মিলছে না। বেসরকারি জায়গায় কাজ নেই। প্রয়োজনের তুলনায় রেশনও মিলছে কম। ডাল সেদ্ধ, ভাতই এখন সম্বল সাবেক ছিটমহলের ত্রাণশিবিরের বাসিন্দাদের।

দিনহাটার ত্রাণশিবিরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত এক বছর ধরে তাঁরা একশো দিনের প্রকল্পে নানা কাজ করেছেন। ত্রাণশিবিরের পাশে আলাদা আলাদা ভাবে প্রত্যেকে কেঁচো সার তৈরি করেছেন। সব মিলিয়ে ব্যাঙ্ক থেকে কারও দশ হাজার কারো পনেরো হাজার টাকা পাওয়ার কথা। সেই টাকা নিতে প্রতিদিন ব্যাঙ্কে যাচ্ছেন তাঁরা। অথচ টাকা পাচ্ছেন না। কাছুয়া বর্মন, মফিজুদ্দদিন মিয়াঁরা বলেন, “যা রেশন সরকার দেয় তাই দিয়ে অর্ধেক মাসও ঠিক মতো চলে না। এই অবস্থায় একশো দিনের কাজের টাকা একটা বড় সম্বল আমাদের। এ বারে সেটাও পাচ্ছি না।”

দিনহাটার মহকুমাশাসক কৃষ্ণাভ ঘোষ ওই বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, “বাসিন্দারা এ ব্যাপারে আমাকে কিছু জানাননি। কেন টাকা পাচ্ছেন না তা খোঁজ নিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।” দিনহাটা ১ ব্লকের বিডিও পার্থ চক্রবর্তী জানান, যখন যেমন বরাদ্দ পাওয়া যাচ্ছে সেই হিসেবে একশো দিনের কাজের টাকা দেওয়া হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে ওই বাসিন্দাদের কিছু অ্যাকাউন্ট হোল্ড করে রাখার কথা জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, “সমস্যা দ্রুত মেটাতে ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।” দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, “আমি সঠিক ভাবে জানি না। বিশদে খোঁজ নেব।”

প্রশাসন সূত্রের খবর, দিনহাটা ত্রাণশিবিরে ৫৮টি পরিবার রয়েছে। পরিবার পিছু প্রত্যেককে কার্ড দেওয়া হয়েছে। ওই কার্ডেই কোনও পরিবার থেকে দু’জন আবার কোনও পরিবার থেকে চার জন কাজ করেছেন। কাছুয়া বলেন, “গত বছরের জানুয়ারি মাসে আমরা একবার একশো দিনের কাজের টাকা পাই। তার পরে বহুদিন কাজ করেছি। কিন্তু টাকা পাইনি। এই অবস্থায় আমাদের সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।”

এমনিতে প্রশাসনের তরফে পরিবার পিছু মাসে ৩০ কেজি চাল, কেরোসিন তেল ৫ কেজি, সরিষার তেল ৫ কেজি, মুসুর ডাল ৫ কেজি, গুড়ো দুধ এক কেজি ও দেড় কেজি লবণ দেওয়া হয়। পরিবারে পাঁচ জনের বেশি থাকলে চাল পাঁচ কেজি বেশি দেওয়া হয়। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ওই রেশনে তাঁদের সারা মাস যায় না। মাসের শেষের দিকে প্রায় সবার ঘর ফাঁকা হয়ে পড়ে। তখন নিজেদের পকেটের টাকা দিয়েই সব কিনতে হয় তাঁদের। মতিয়ার রহমান বলেন, “কাজ নেই। তাই সব্জি কিনতে পারি না। প্রশাসন যে ডাল দেয় তাই সেদ্ধ করে অল্প অল্প করে খাই। মাছ, মাংসের কথা তো ভাবতেই পারি না।” আরেক বাসিন্দা কৃষ্ণ অধিকারী বলেন, “একশো দিনের কাজের টাকা দ্রুত হাতে পেলে অনেক উপকার হয়।”

অন্য বিষয়গুলি:

hundred days work
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE