মাস্ক পরা, আরও আড়াল খুঁজতে মাখায় ব্যাগ চাপিয়েছেন এক ব্যক্তি। জলপাইগুড়িতে একটি মদের দোকানের সামনে। নিজস্ব চিত্র
হঠাৎ আকাশ কালো করে ঝোড়ো হাওয়া বইল। খানিকক্ষণ বৃষ্টিও হয়ে গেল। তবু, তা লাইন ভাঙাতে পারল না। কারও কারও কাছে ছাতা ছিল ঠিকই, তবে যাদের তা নেই তাঁরা বৃষ্টিতে ভিজেই লাইনে দাঁড়িয়ে থাকলেন। দোকানের সামনে টাঙানো পোস্টারে লেখা ‘নো মাস্ক, নো মদ!’ ‘সামাজিক দূরত্বের বিধি মানুন।’ এই দুই নির্দেশই অক্ষরে অক্ষরে মানলেন লাইনে দাঁড়ানো সকলে। এমনিতে জলপাইগুড়ির বাজারে, রাস্তায় বহু মানুষকে প্রতিদিনই মাস্ক ছাড়া দেখা যায়। কিন্তু সোমবার মদের দোকানের সামনে দাঁড়ানো সকলকেই নির্দেশ মানতে দেখা গেল। লাইন ফস্কানোর ভয়ে যে ক্রেতারা বৃষ্টিতে মাথা বাঁচাতে ছুটে যাননি, তাঁরা যে বিধি ভাঙার ঝুঁকিও নেবেন না সেটাই স্বাভাবিক।
লকডাউনের সময় সোমবারই প্রথম মদের দোকান খুলল। এ দিন জলপাইগুড়ি শহরের সব দোকানের সামনেই ভিড় উপচে পড়ে। কিন্তু বেনিয়ম দেখা যায়নি কোথাও। কদমতলার মদের দোকানের সামনে দাঁড়ানো পুলিশের মন্তব্য, “নিয়ম ভাঙলে যদি মদ না মেলে, সেই ভয়েই মনে হয় সকলে বাধ্য থেকেছেন।” প্রথমে জানা গিয়েছিল, সকাল দশটা থেকে মদের দোকান খুলবে। যদিও দোকান খোলে দুপুর তিনটেয়, বন্ধ হয়েছে সন্ধে ৬টায়।
লকডাউন শুরুর পর থেকে মদের দেদার কালোবাজারির অভিযোগ উঠেছে। শেষ পর্যন্ত মদের দোকান খোলার কথা শোনায় তর সয়নি অনেকের। রাত থাকতেই জলপাইগুড়ির ডিবিসি রোডের মদের দোকানের সামনের সিঁড়িতে, পিচ রাস্তায় নিজেদের নাম চক দিয়ে, ইটের গুঁড়ো দিয়ে লিখে রেখেছিলেন অনেকে। সামাজিক দূরত্ব মেনে যাতে সকলে দাঁড়ান সে কারণে মদের দোকানের সামনে চকের দাগ দেওয়া হয়েছিল রবিবার সন্ধ্যায়। রাত কিছুটা বাড়তে দেখা যায় ডিবিসি রোডের দোকানের সামনে চকের গোল দাগের মাঝে নাম লেখা। মদ কেনার জন্য সম্বর্ধনাও মিলেছে এ দিন। জলপাইগুড়ির দিনবাজারে মদের দোকান খোলার পরে প্রথম যিনি মদ কিনেছেন তাঁকে মালা পরিয়ে সম্বর্ধনা দেন কয়েকজন। একটি শশা, আপেল ও জলের বোতল উপহার দেওয়া হয়। যিনি সম্বর্ধনা পেলেন তিনি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। তাঁর কথায়, ‘‘মদ খাওয়া নিয়ে অনেক গঞ্জনা সহ্য করতে হয়েছে। তবে মদ কিনে এমন সম্মান পাব তা ভাবনার বাইরে ছিল। অমি অভিভূত।’’
এ দিন মাত্র তিন ঘণ্টার জন্য দোকান খোলা ছিল। অনেকের আশঙ্কা ছিল, দেরি করলে সব ফুরিয়ে যাবে। তাই আগেই হয়েছিল লম্বা লাইন। প্রত্যেকে পরেছিলেন মাস্ক, কেউ কেউ রুমাল বা কাপড়ের বাঁধন কপাল পর্যন্ত তুলে ফেলেছিলেন, মাঝে শুধু চোখ দুটো ফাঁকা। কেউ মাথায় চাপিয়ে নিয়েছিলেন ব্যাগ। পুলিশের তরফে খবর, মদের দোকানের সামনে এ দিন কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy