বিজেপির আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কঞ্জিলাল ও আরএসপির আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন বিধায়ক নির্মল দাস। নিজস্ব চিত্র
অঞ্চল সম্মেলনে কার উপস্থিতি কেমন ছিল তা জানতে এ বার বিজেপির বিধায়ক ও পদাধিকারীদের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠালেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব। ইতিমধ্যেই কোচবিহারে তার নির্দিষ্ট নির্দেশিকা এসে পৌঁছেছে। তা পূরণ করে রিপোর্ট দিতে হবে।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সার্বিক ভাবে জেলায় অঞ্চল সম্মেলনে উপস্থিতির দৌড়ে এক নম্বরে রয়েছেন দলের জেলা সভাপতি সুকুমার রায়। বাকি বিধায়কদেরও উপস্থিতি খারাপ নয়। তবে অভিযোগ রয়েছে, কিছু অঞ্চলে হাতে গোনা কয়েকটি সম্মেলন হয়েছে। কিছু অঞ্চলে এখনও সম্মেলন হয়নি। অন্য দিকে, যে কোনও দিন রিপোর্ট চাওয়া হতে পারে ধরে নিয়ে, তার ভিত্তিতে নেতা-জনপ্রতিনিধিদের মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আলিপুরদুয়ারের গেরুয়া শিবির।
দুর্গাপুরে দলের কার্যকারিণী বৈঠকে দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক মঙ্গল পাণ্ডে রাজ্য বিজেপির নেতাদের কাছে অঞ্চল সম্মেলনে নেতাদের উপস্থিতি নিয়ে জানতে চেয়েছিলেন। সেই নেতাদের তালিকায় ছিলেন সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষেরা। অনেকের কাজ নিয়েই কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক যে খুব সন্তুষ্ট নন, তা জানিয়ে দিয়েছিলেন ওই বৈঠকেই। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার বলেন, ‘‘আমাদের জেলায় প্রত্যেকেই একাধিক অঞ্চল সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। রিপোর্ট আমরা পাঠিয়ে দেব।’’
উত্তরবঙ্গের মধ্যে কোচবিহার বিজেপির ‘শক্ত ঘাঁটি’ বলেই পরিচিত। কোচবিহারের বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক বর্তমানে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী। জেলায় বিজেপির ছ’জন বিধায়কও রয়েছেন। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিশীথ বেশ কয়েকটি গ্রামে বৈঠক করেছেন। কিন্তু তেমন ভাবে কোনও অঞ্চল সম্মেলনে যোগ দেননি। দলের জেলা সভাপতি সুকুমার কোচবিহার উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক। তিনি নিজের বিধানসভার ১৩ অঞ্চলেই সম্মেলনের কাজ শেষ করেছেন। তার মধ্যে ন’টি অঞ্চল সম্মেলনে নিজেই উপস্থিত ছিলেন। সার্বিক ভাবে অবশ্য প্রায় ২৫টি অঞ্চল সম্মেলনে সুকুমার উপস্থিত ছিলেন। নাটাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের ১৬টি অঞ্চলের মধ্যে ১৪টিতে সম্মেলন হয়েছে। সব ক’টিতে উপস্থিত ছিলেন ওই কেন্দ্রের বিধায়ক মিহির গোস্বামী। মাথাভাঙার ১৩টি অঞ্চলেই সম্মেলনের কাজ শেষ করেছে বিজেপি। প্রত্যেকটিতেই ছিলেন ওই কেন্দ্রের বিধায়ক সুশীল বর্মণ। তুফানগঞ্জের ১৫টির মধ্যে ১১টি অঞ্চল সম্মেলনে ছিলেন ওই কেন্দ্রের বিধায়ক মালতী রাভা। কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের ন’টির মধ্যে সাতটি অঞ্চলে সম্মেলন হয়েছে। পাঁচটিতে ছিলেন ওই কেন্দ্রের বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে। শীতলখুচির বিজেপি বিধায়ক বরেন বর্মণ জানান, তাঁর এলাকায় ১৫টি অঞ্চল রয়েছে। তার মধ্যে ১১টিতে সম্মেলন হয়েছে। সব ক’টিতেই তিনি উপস্থিত ছিলেন। কোচবিহারে দুটি অঞ্চল সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
অন্য দিকে, এ বারই প্রথম রাজ্যের বাকি জেলার সঙ্গে আলিপুরদুয়ারে দলের ব্লক ও অঞ্চল কমিটি গঠন করা হয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে, গত ডিসেম্বর মাস থেকে জেলায় অঞ্চল ধরে-ধরে সম্মেলনও শুরু হয়। যাতে দলের বিভিন্ন স্তরের নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের যোগ দিতে বলা হয়েছে। কোচবিহারের মতো আলিপুরদুয়ারেও দু’টি অঞ্চল সম্মেলনে যোগ দেন খোদ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর, জেলার অধিকাংশ গ্রাম পঞ্চায়েতেই অঞ্চল সম্মেলন শেষ হয়ে গিয়েছে। বাকি মাত্র চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতে। এরই মধ্যে দুর্গাপুরের বৈঠকে দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক নেতাদের থেকে অঞ্চল সম্মেলনের বিষয়ে জানতে চাওয়ায় চিন্তায় জেলার নেতাদের একাংশ। তাই দ্রুত মূল্যায়নের কাজ শুরু করে দিতে চাইছেন। বিজেপির আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি ভূষণ মোদক বলেন, “নেতাদের ব্লক ধরে-ধরে অঞ্চল সম্মেলনে যোগ দিতে বলা হয়েছিল। তাঁরা তা করেছেন। আগামী দিনে শীর্ষ নেতৃত্ব জেলা থেকে রিপোর্ট চাইতেই পারেন। সে জন্যই প্রত্যেকের কাজের দ্রুত মূল্যায়ন করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy