ডিওয়াইএফআইয়ের উত্তরকন্যা অভিযান ঘিরে শিলিগুড়িতে উত্তেজনা। দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে তর্কবিতর্ক এবং সংঘর্ষে জড়ালেন বাম কর্মী এবং সমর্থকেরা। পুলিশের হাতে আটক সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়-সহ বেশ কয়েক জন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে শিলিগুড়ির বর্ধমান রোড, নৌকাঘাট, তিনবাত্তি মোড়, উত্তরকন্যা-সহ একাধিক এলাকা।
বেকারদের চাকরি, চাকরি না-হওয়া পর্যন্ত সরকারিভাবে ভাতা প্রদান-সহ বিভিন্ন দাবিতে উত্তরকন্যা অভিযানের ডাক দিয়েছিল বামেদের যুব সংগঠন। এ জন্য আগে থেকে বর্ধমান রোড, নৌকাঘাট, তিনবাত্তি মোড়, উত্তরকন্যা-সহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যারিকেড করে পুলিশ। তার মধ্যে ডিওয়াইএফআইয়ের নেতাকর্মীরা অভিযান শুরু করেন। দফায় দফায় গোলমাল শুরু হয়। দুপুর ২টো থেকে জমায়েত শুরু হয়েছিল জলপাই মোড়ে। আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, বিভিন্ন এলাকা, বিশেষ করে উত্তরবঙ্গ থেকে যাঁরা তাঁদের আন্দোলনে যোগ দিতে আসছিলেন, তাঁদের আটকে দিচ্ছে পুলিশ। বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে সেখান থেকে দুপুর ৩টে নাগাদ নৌকাঘাট পার করে তিনবাত্তির দিকে এগিয়ে যান মীনাক্ষীরা। তবে এ বার বেশ কয়েকটি ব্যারিকেড দিয়েছিল পুলিশ। তার মধ্যে একটি ছিল নৌকাঘাটে। দ্বিতীয় ব্যারিকেড ছিল তিনবাত্তি মোড় থেকে ৫০০ মিটার দূরে। তৃতীয় ব্যারিকেডটি তিনবাত্তি মোড়ে। লোহার বিশাল ব্যারিকেড পার করতে গিয়ে পুলিশের বাধা পান আন্দোলনকারীরা। এশিয়ান হাইওয়ে এক প্রকার বন্ধ হয়ে যায়।
মিছিলের শুরুর দিকে প্রথম ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে গিয়েছিলেন মীনাক্ষীরা। কিন্তু দ্বিতীয় ব্যারিকেড ভেঙে এগোতে পারেননি তাঁরা। মীনাক্ষীদের সঙ্গে পুলিশের বচসা শুরু হয়। বাম নেত্রী জানান, তাঁরা ডেপুটেশন জমা দিয়ে চলে আসবেন। শান্তিপূর্ণ ভাবে মিছিল করছেন। পুলিশের দাবি, আন্দোলনকারীরা প্রথম থেকে তাদের আক্রমণ করছে। পাশাপাশি পুলিশ জানিয়ে দেয়, ঘটনাস্থলে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। তাই জমায়েত করা যাবে না। ওই ভাবে ঘণ্টাখানেক চলে তর্কবিতর্ক। এক সময়ে রাস্তায় বসে পড়েন ডিওয়াইএফআইয়ের কর্মীরা। এক সময়ে তাঁরা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন। শুরু হয় পুলিশি প্রতিরোধ। প্রথমে জলকামানের সামনে পড়েন মীনাক্ষীরা। তার পরে চার রাউন্ড কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় মিছিল। শুরু হয় পুলিশের লাঠিচার্জ। পাল্টা ইট উড়ে যায় পুলিশের দিকে। শেষ পর্যন্ত মীনাক্ষী-সহ ১৯ জনকে আটক করে পুলিশ। তাঁদের সকলকে এনজেপি পুলিশ স্টেশনে যাওয়া হয়েছে। অন্য দিকে, পুলিশের মারে দীপক বিশ্বাস নামে মালদহের বামনগোলার এক বাসিন্দা গুরুতর আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ। তাঁকে পুলিশই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছে।