জলপাইগুড়ির ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে জলের লাইন। —নিজস্ব চিত্র।
গরম পড়তে না পড়তেই জলপাইগুড়ি শহরে শুরু হয়ে গিয়েছে পানীয় জলের সঙ্কট। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভার সরবরাহ করা জলের চাপ এতটাই কমে গিয়েছে যে শহরের বিভিন্ন এলাকায় কলগুলি দিয়ে জল পড়ছে সুতোর মতো। তাই বালতি ভরতে লেগে যাচ্ছে দীর্ঘ সময়। গরম বাড়লে পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে সেটা ভেবে বাসিন্দাদের অনেকেই আতঙ্কিত। সামনে পুরভোট। বিরোধী শিবির ভোটের প্রচারে জলকষ্টকে অস্ত্র করতে মরিয়া।
নির্বাচনী বিধির কারণে পুরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান মোহন বসু ওই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। যদিও পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি বছর গরমে শহরের কিছু এলাকায় জলকষ্ট দেখা দেয়। সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য ছ’টি গভীর নলকূপ বসানোর কাজ চলছে। নলকূপ ছাড়াও ৩টি আয়রন ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টও বসবে। কাজ শেষ হলে জলকষ্ট কমবে বলে দাবি। পরিস্রুত পানীয় জল সহজে মিলবে। যদিও ভোটের মুখে পুরসভার এমন আশ্বাসে গুরুত্ব দিতে নারাজ বিরোধী শিবির। পুরসভার বিদায়ী বিরোধী দল নেতা প্রমোদ মণ্ডল অভিযোগ করেন, “এক কথা শুনে শহরবাসী ক্লান্ত। শুধু গভীর নলকূপ বসিয়ে কি হবে। দীর্ঘদিন থেকে পাইপ লাইন পরিষ্কার করা হয় না। বেশ কিছু এলাকায় পাইপ ফুটো। পুর কর্তাদের জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি। সামনে ভোট। তাই ফের নলকূপের গল্প শোনানো হচ্ছে।”
যদিও জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী দাবি করেন, “কিছু দিনের মধ্যে শহরবাসী জানতে পারবেন পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাই কেউ সমস্যাকে জিইয়ে রেখে ইস্যু করার চেষ্টা করলে জবাব পাবেন।”
শহরে বেড়ে চলা পানীয় জলের কষ্ট এবার পুরভোটে ইস্যু হচ্ছে বলে দাবি করেছেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা প্রাক্তন কাউন্সিলার নির্মল ঘোষ দস্তিদারও। তিনি বলেন, “গরম পড়তে জলের সমস্যা যে ভাবে দেখা দিয়েছে, জানি না এবার পরিস্থিতি কি দাঁড়াবে। ভোটের প্রচারে জল কষ্টের কথা থাকবে।” একই বক্তব্য জেলা বিজেপি যুব মোর্চা সভাপতি জয়ন্ত চক্রবর্তীর।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩, ৯, ১০, ১১ এবং ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে পানীয় জলের সমস্যা ক্রমশ বাড়ছে। সবচেয়ে বেশি সমস্যা দেখা দিয়েছে ১০ নম্বর ওয়ার্ডে। স্থানীয় বাসিন্দা বিমান সরকার অভিযোগ করে জানান, সকালে পর থেকে জলের জন্য ছুটে বেড়াতে হয়। সামান্য উঁচু ট্যাঙ্কে জল উঠছে না। গৃহবধূ ভারতী চক্রবর্তী বলেন, “বাইরে থেকে জল এনে কাজ করতে হচ্ছে। এবার ভোট চাইতে এলে জানতে চাইব এই দুর্দশা কবে ঘুচবে।”
বাইরের কল থেকে বাসিন্দারা জল সংগ্রহ করবেন সেই উপায়ও নেই। অন্তত পাঁচটি ওয়ার্ডের বেশিরভাগ কলে তিরতির করে জল পড়ছে। ওই পরিস্থিতির জন্য বিভিন্ন বস্তি এলাকায় পানীয় জলের কষ্ট বাড়ছে বলে অভিযোগ। জেলা কংগ্রেস সভাপতি নির্মলবাবুর দাবি, “এতদিন পাহাড়িপাড়া এবং নতুনপাড়া এলাকায় জলের সমস্যা ছিল না। কিন্তু এবার গরমের শুরুতে সেখানেও জলকষ্ট দেখা দিয়েছে।” আইনজীবী স্বরূপ মণ্ডল জানান, “জলের চাপ অত্যন্ত কম থাকায় বাসিন্দাদের বড় অংশ সমস্যায় পড়েছে। আধঘণ্টাতেও মাঝারি মাপের বালতি ভরছে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy