Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

শিক্ষাকর্তাকে মারধরে আন্দোলনে উপাচার্যও

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও কাজকর্ম ব্যাহত হয়নি বলে দাবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। 

আন্দোলন: গৌড়বঙ্গে শুরু হল প্রতীকী কর্মবিরতি। নিজস্ব চিত্র

আন্দোলন: গৌড়বঙ্গে শুরু হল প্রতীকী কর্মবিরতি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৯ ০৪:১৪
Share: Save:

উন্নয়ন আধিকারিককে রাস্তায় ফেলে মারধরের ঘটনার প্রতিবাদে এবারে আন্দোলনে নামলেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, আধিকারিক ও শিক্ষাকর্মীরা। তাঁদের অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রতীকী কর্মবিরতি ও অবস্থান আন্দোলনে সামিল হলেন খোদ উপাচার্য স্বাগত সেনও। বুধবার বেলা ১২টা থেকে বুকে কালো ব্যাচ পড়ে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে ও পরে উপাচার্যের দফতরের বাইরে ওই আন্দোলন কর্মসূচি চলে। প্রথম পর্বে উপাচার্য থেকে শুরু করে রেজিস্ট্রার বিপ্লব গিরি সহ সকলেই আন্দোলনে সামিল হন। পরে উপাচার্য তার চেম্বারে চলে যান, বাইরে আন্দোলন চলে।

পালা করে চলেছে আন্দোলন। তাতে অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও কাজকর্ম ব্যাহত হয়নি বলে দাবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের।

ওই হামলার ঘটনা নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর হস্তক্ষেপও দাবি করলেন আন্দোলনকারীরা। শুধু তাই নয়, সেই দাবিতে গণস্বাক্ষর সম্বলিত একটি স্মারকলিপিও এ দিন মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীকে পাঠানো হয়েছে। সূত্রে খবর, পুরো ঘটনা নিয়ে উপাচার্য টেলিফোনে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথাও বলেন।

গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন আধিকারিক রাজীব পুততুণ্ডর উপর হামলার ঘটনার পর ২৪ ঘন্টা কেটে গেলেও অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে পুলিশ গ্রেফতার করতে না পারায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্ষোভও ছড়িয়েছে। এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন চলাকালীন আন্দোলনকারীদের বক্তব্যে সেই ক্ষোভের কথা উঠেও আসে। বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পথে উন্নয়ন আধিকারিকের উপর প্রকাশ্য দিবালোকে ওই হামলার ঘটনার জেরে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিক থেকে শুরু করে অধ্যাপকরাও। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একটি পুলিশ ক্যাম্প চালু করার দাবি জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার বেলা ১২টা নাগাদ ইংরেজবাজার শহরের এক নম্বর গভর্নমেন্ট কলোনির বাড়ির সামনে থেকে টোটোয় চেপে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন আধিকারিক রাজীব। অভিযোগ, বাড়ি থেকে কিছুটা দূর আসার পরে একটি বাইকে করে আসা দুজন দুষ্কৃতী টোটোর পথ আগলে দাঁড়ায় ও টোটো থেকে টেনে হিঁচড়ে নামিয়ে নিয়ে রাজীববাবুকে এলোপাথাড়ি মারধর করে। নাক-মুখ ফাটিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর আর্ত চিৎকারে আশেপাশের লোকজন ছুটে এলে দুই দুষ্কৃতী পালিয়ে যায়। স্থানীয়রাই রাজীববাবুকে উদ্ধার করে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। পরে তাঁকে সিসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়। এদিন অবশ্য দুপুরের দিকে তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়েছে। ওই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে ইংরেজবাজার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয় মঙ্গলবারই।

এ দিনের আন্দোলনে সবরকম মতপার্থক্য ভুলে দোষীদের শাস্তির দাবিতে সরব হন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, কর্মীরা।

উপাচার্য স্বাগত সেন বলেন, “উন্নয়ন আধিকারিককে আক্রমণের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। কোনও এক জায়গা থেকে উস্কানি দেওয়া হচ্ছে এবং দুষ্কৃতীরা এসে চাপ সৃষ্টি করছে, মারধরের ঘটনা ঘটাচ্ছে।” জেলার এক পুলিশ কর্তা বলেন, “সব দিক খতিয়ে দেখে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE