Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

বিচারকের বাড়িতেই শুনানি

পুলিশ দেরি করে অভিযুক্তদের আদালতে হাজির করানোয় আদালত তাদের গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ তুলেছিলেন আইনজীবীরা। পরে নিজের বাড়িতে বিশেষ আদালত বসিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া ওই অভিযুক্তদের নিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত বিচার করলেন মহকুমা আদালতের এক ম্যাজিস্ট্রেট।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৬ ০২:৩৩
Share: Save:

পুলিশ দেরি করে অভিযুক্তদের আদালতে হাজির করানোয় আদালত তাদের গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ তুলেছিলেন আইনজীবীরা।

পরে নিজের বাড়িতে বিশেষ আদালত বসিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া ওই অভিযুক্তদের নিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত বিচার করলেন মহকুমা আদালতের এক ম্যাজিস্ট্রেট। বুধবার দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরে গঙ্গারামপুর মহকুমা আদালতের ওই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশের মধ্যে সাড়া পড়ে গিয়েছে। একাংশের দাবি, এমন ঘটনা বিরল না হলেও জেলায় প্রথম। দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, ‘‘প্রয়োজন হলে বিচারক যে কোনও সময়ে আদালত বসিয়ে শুনানি করতে পারেন। সেই ক্ষমতা আদালতের রয়েছে।’’

বুধবার দুপুর প্রায় দেড়টা নাগাদ গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ নন্দনপুর এলাকা থেকে আগের রাতে ধৃত পাঁচজন এবং প্রাণসাগর এলাকা থেকে দু’জন মিলিয়ে মোট ৭ জন অভিযুক্তকে ওই মহকুমা আদালতে হাজির করায়। তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের জেরে এক সিভিল পুলিশের উপর হামলা এবং বোমাবাজি ও আগ্নেয়াস্ত্রের অভিযোগে ধৃত পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে আদালতে পাঠিয়েছিলেন সংশ্লিষ্ট গঙ্গারামপুর থানার আইসি সমীর দেওসা। কিন্তু পুলিশ সময়মতো আসামীদের আদালতে উপস্থিত না করার অভিযোগে আদালত অভিযুক্তদের গ্রহণ করেনি। ধৃত ওই পাঁচজনকে নিয়ে ফের গঙ্গারামপুর থানায় ফিরে যেতে হয় পুলিশকে। অথচ কাউকে গ্রেফতার করার পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশকে আদালতে পেশ করতে হয়। ওই নিয়ম লঙ্ঘনের জেরে বিড়ম্বনায় পড়ে অস্বস্তি বাড়তে থাকে গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ কর্তৃপক্ষের।

অবশেষে সমস্যা সমাধানে আদালতই এগিয়ে আসে। মহকুমা আদালতের ভারপ্রাপ্ত এসিজেএম (অ্যাসিন্ট্যান্ট জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট) সোনালি গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়ে দেন রাতেই ওই অভিযুক্তদের বিচারের জন্য আদালত বসবে। খবর পেয়ে পুলিশ গাড়ি ছুটিয়ে কুশমন্ডি ব্লক থেকে তুলে আনেন বুনিয়াদপুরের মহকুমা আদালতের সরকারী আইনজীবী দিলীপ রায়কে। খবর পেয়ে রাতে চলে আসেন আদালতের জেআরও অরুণাংশু ঘোষ-সহ অন্য কর্মীরা। আদালতের বড়বাবু থেকে স্টেনো, পুলিশ এসকর্ট থেকে আসামী পক্ষের আইনজীবী অভীক সিংহ, সোয়েল রানা, লব তালুকদারেরা। মহকুমা আদালত ভবনের পাশে ভাড়া বাড়িতে থাকেন বিচারক সোনালী গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি তাঁর বাড়ির দোতালা ঘরে এজলাস বসান। রাত ৯টায় শুরু হয় শুনানি।

প্রাণসাগর এলাকা থেকে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগে ধৃত পুরুষ ও মহিলাকে বিচারক জামিনে মুক্তি দেন। বাকি নন্দনপুরের সংঘর্ষ ও সিভিক পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে ধৃত পাঁচজনকে ৩ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন এসিজেএম সোনালী গঙ্গোপাধ্যায়। আইনজীবী অভীক সিংহ বলেন, ‘‘আদালতের কাজ যখন শেষ হয় তখন রাত ১২টা পেরিয়ে গিয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Police judge victim Arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE