উৎস: মশার আঁতুরঘর। নিজস্ব চিত্র
ডেঙ্গি উপসর্গ নিয়ে আরও দু’জনের মৃত্যু হল শিলিগুড়িতে। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে মাটিগাড়ার একটি নার্সিংহোমে মহম্মদ শাহনওয়াজ (১৭) নামে এক ছাত্রের মৃত্যু হয়। তার বাড়ি ১ নম্বর ওয়ার্ডের ধরমনগর এলাকায়। শাহনওয়াজের মৃত্যুর শংসাপত্রে চিকিৎসক পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন ‘কম্প্লিকেটেড ডেঙ্গি’তে ওই কিশোর মারা গিয়েছে। এ দিন বিকেলে প্রধাননগরের একটি নার্সিংহোমে মারা যান আরতি সেন (৪৫) নামে এক মহিলা। বাড়ি বাঘা যতীন কলোনিতে। তাঁর ছেলে বিশ্বজিতের দাবি, চিকিৎসক ডেঙ্গি হয়েছে বলেই জানিয়েছিলেন। এই নিয়ে ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে শহরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল পাঁচ জন।
শাহনওয়াজ একাদশ শ্রেণির এক ছাত্র। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার বিভিন্ন অঙ্গ অকেজো হয়ে পড়েছিল। আরতিদেবী কয়েক দিন ধরেই জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। তবে বাড়িতে সে ভাবে জানাননি। একদিন আগে এক চিকিৎসকের প্রাইভেট চেম্বারে দেখান। এ দিন শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে পরিবারের লোকেরা নার্সিংহোমে ভর্তি করান। বাড়ির লোক দাবি করেন, আরতিদেবীর রক্ত পরীক্ষায় এনএসওয়ান পজিটিভ-ই পাওয়া গিয়েছে।
এর পরে ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজ নিয়ে পুরসভা এবং স্বাস্থ্য দফতরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। দার্জিলিং জেলা স্বাস্থ্য দফতর অবশ্য মৃত্যু ডেঙ্গিতেই হয়েছে এখনই বলতে চায়নি। এক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘বিষয়টি স্বাস্থ্য দফতরে জানানো হয়েছে। ডেঙ্গিতে মৃত্যু কি না স্বাস্থ্য দফতরই জানাবে।’’ এর আগে ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে তিন জনের মৃত্যুর বিষয়টি স্বাস্থ্য দফতর এখনও কিছু জানায়নি বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে। মেয়র অশোক ভট্টাচার্য চিন সফরে রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘শুক্রবার শহরে ফিরব। মৃত্যুর বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি।’’
মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কালী পুজোর সময় থেকেই জ্বরে আক্রান্ত হয় শাহনওয়াজ। ২৭ অক্টোবর তাকে বর্ধমান রোডের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত মঙ্গলবার রাতে মাটিগাড়ায় অপর একটি নার্সিংহোমে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। তার প্লেটলেট ২০ হাজারে নেমে গিয়েছিল। ডেঙ্গিতে কিডনি-সহ বিভিন্ন অঙ্গ অকেজো হয়ে পড়তে থাকায় বুধবার রাতে চিকিৎসক ভেল্টিলেটরে রাখার পরামর্শ দেন। শেষ পর্যন্ত ভোর রাতে ওই তরুণের মৃত্যু হয়। তাঁর মৃত্যুতে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত তরুণের বাবা সামসের আহমদ গত বছর ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেই অবস্থায় স্ট্রোক হয়। তিনি এক প্রকার পঙ্গু হয়ে ঘরে বসে রয়েছেন। কাজকর্ম সব সময় করতে পারেন না। আগে গাড়ি, হোটেল বুকিংয়ের এজেন্ট হিসেবে কাজ করতেন। শাহনওয়াজ ছাড়াও আরও দুই ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছে তাঁর। সময়ের কাজ না-করতে পারায় তাঁর ভাই মহম্মদ শের আফগানই সংসার চালাতে সাহায্য করেন। তাঁর শিশু সন্তান গুলাম আহমদ রাজাও জ্বরে আক্রান্ত।
স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিযদ শঙ্কর ঘোষ, ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মালতি রায়, ২ নম্বর বরো চেয়ারম্যান স্নিগ্ধা হাজরা এ দিন মৃতের বাড়িতে যান।
কাউন্সিলর স্বীকার করেন, ‘‘ব্লিচিং, লেবার সমস্যার জন্য ওয়ার্ডে ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজে কিছু সমস্যা হচ্ছে।’’ এলাকার প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা তৃণমূল নেতা সঞ্জয় পাঠক জানান, এলাকার অন্তত ১০ জন জ্বর নিয়ে হাসপাতাল, নার্সিংহোমে ভর্তি রয়েছেন। তাঁদের একাংশের ডেঙ্গি হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy