গত ২ জানুয়ারি দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন মালদহের তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার খুনের ঘটনায় ধৃতদের মধ্যে তিন জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করল পুলিশ। শুক্রবার পুলিশ সূত্রে খবর, দুলাল ওরফে বাবলার খুনে ব্যবহৃত একটি নাইন এমএম পিস্তল, দু’টি ওয়ান শটার পিস্তল উদ্ধার হয়েছে। তা ছাড়াও গত ২ জানুয়ারি আততায়ীরা যে পোশাক পরে বাবলাকে (দুলালের ডাক নাম) খুন করতে এসেছিল, সেগুলোও পাওয়া গিয়েছে।
মালদহের ইংরেজবাজার পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর খুনে গ্রেফতার হন টিঙ্কু ঘোষ, শামি আখতার, অভিজিৎ ঘোষ-সহ সাত জন। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে খুনে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রগুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ। আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়াও সাতটি কার্তুজ মিলেছে। তা ছাড়া অভিযুক্তেরা সে দিন যে জামাকাপড় এবং জুতো পরেছিলেন, সেগুলোও মিলেছে। এতে তদন্তপ্রক্রিয়া আরও সহজ হল বলে মনে করছে পুলিশ।
গত ২ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ইংরেজবাজার শহরের ঝলঝলিয়ার কাছে নিজের প্লাইউড কারখানার সামনে খুন হন দুলাল। বাইকে চেপে এসে তিন জন দুষ্কৃতী দুলালকে লক্ষ্য করে পর পর গুলি করে। হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও বাঁচানো যায়নি তাঁকে। দুলালের মৃত্যুতে পুলিশি গাফিলতির কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী মমতা। তিনি জানান, বাবলার উপর আগেও আক্রমণ হয়েছে। তিনি পুলিশি নিরাপত্তা পেতেন। কিন্তু কিছু দিন আগে তা তুলে নেওয়া হয়। অন্য দিকে, তৃণমূল নেতা দুলাল খুনে একে একে সাত জনকে পাকড়াও করে পুলিশ। খুনে ‘মূল চক্রী’ হিসাবে উঠে এসেছে তৃণমূলের মালদহ শহরের সভাপতি নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি এবং তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ স্বপন শর্মার নাম। তাঁরা বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে। তিন দিন পর শুক্রবার দুলাল খুনে অভিযুক্ত নরেন্দ্রনাথ এবং স্বপনকে আদালতে হাজির করা হয়। এর মধ্যে নরেন্দ্রনাথকে দল থেকে বহিষ্কৃত ঘোষণা করেছে তৃণমূল।
পুলিশ জানিয়েছে, ইংরেজবাজারের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলরকে খুনের জন্য ৫০ লক্ষ টাকার সুপারি দেওয়া হয়েছিল। খুনের কারণ ‘অর্থনৈতিক লেনদেন সংক্রান্ত’ বলে জানিয়েছে পুলিশ। তদন্তে উঠে এসেছে, পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে বার বার এলাকা পরিবর্তন করছে দুলাল-খুনে দুই অভিযুক্ত রোহন রজক ও বাবলু যাদব। শিলিগুড়ি থেকে নেপাল এবং উত্তরপ্রদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে তারা। খুনের দিন ব্যবহৃত বাইকের চালক আশরাফ খানও ফেরার। আশরাফ ‘শার্প শুটার’। তাঁর উপরেই দায়িত্ব ছিল দুলালের মৃত্যু নিশ্চিত করা।
যদিও এখনও পুলিশি তদন্তে আস্থাশীল নন মৃতের স্ত্রী চৈতালি ঘোষ সরকার। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘‘তদন্তে সন্তুষ্ট নই। এর শেষ দেখতে চাই।’’ তিনি এ-ও বলেন, ‘‘রাজনীতি করার সঙ্গে সঙ্গে আমি একজন আইনজীবীও। আমি এটা ভাল করে বুঝতে পারছি যে, এই ঘটনায় আরও অনেকে যুক্ত রয়েছেন। ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে কি না, সেটা বলব না। তবে আমার দল এবং প্রশাসনের উপর বিশ্বাস রয়েছে, তারা অভিযুক্তদের বার করবে। আমি অপেক্ষায় রয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy