টাকার অভাবে শিকেয় উঠেছে ভাত-রুটি খাওয়া। দু’বেলা পেট ভরাতে এখন ভরসা বাড়ি থেকে আনা ছাতু আর গাড়িতে মজুত থাকা পেঁয়াজ।
তিনদিন ধরে ছাতুর সঙ্গে পেঁয়াজ খেয়েই দিন কাটছে বর্ধমানের বাসিন্দা জাকির শেখের। তাঁর মতোই বাড়ি থেকে আনা চিড়ে খেয়ে কোনও রকমে পেট ভরাচ্ছেন খণ্ডঘোষের বাসিন্দা ভীম রায়। শুধু জাকির কিংবা ভীমই নয়, একই অবস্থা জাতীয় সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা শ’য়ে শ’য়ে ট্রাক চালকের। তাঁরা বলেন, ‘‘গাড়ি নিয়ে যেতে দিচ্ছে না পুলিশ। তাই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আমাদের।’’ যদিও পুলিশের দাবি, জাতীয় সড়ক থেকে এখনও জল নামেনি। যাত্রীবাহী গাড়ি ধীর গতিতে জলের উপর দিয়েই চলাচল করছে। এমন অবস্থায় পণ্যবোঝাই লরি জলের মধ্যে বিকল হয়ে গেলে যাত্রীবাহী গাড়ি চলাচলও বন্ধ হয়ে যাবে। তাই দেখে শুনে গাড়ি চালানো হচ্ছে জাতীয় সড়কে।
পুরাতন মালদহের নারায়ণপুরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক এখনও জলমগ্ন। রায়গঞ্জের কালুয়ামাটিতে জলের তোড়ে ভেঙে গিয়েছে জাতীয় সড়ক। একই সঙ্গে রাস্তায় কোমর সমান জল থাকায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে ৮১ নম্বর জাতীয় সড়ক। সপ্তাহ দুয়েক ধরে বন্ধ রয়েছে ট্রেন চলাচলও। ফলে মালদহ-বুনিয়াদপুর হয়ে রায়গঞ্জ দিয়ে শিলিগুড়ি গামী যাত্রীবাহী গাড়ি চালানো হচ্ছে। সুষ্ঠভাবে যাতে যাত্রীবাহী গাড়ি চলাচল করতে পারে, তারজন্য কার্যত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে পণ্যবোঝাই লরি। তাই মালদহের বৈষ্ণবনগরের ১৮ মাইল, এনটিপিসি মোড়, কালিয়াচকের সুলতানগঞ্জ, ১৬ মাইল, ইংরেজবাজারের মধুঘাট, সুস্থানি মোড়, পুরাতন মালদহের নারায়ণপুর, গাজল, আলাল, দেওতলা প্রভুতি এলাকায় দেখা যাচ্ছে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে পণ্য বোঝাই ট্রাক। সাতদিন ধরে জাতীয় সড়কের উপরে গাড়িতেই দিন কাটাতে হচ্ছে ট্রাক চালক ও সহকারি চালকদের।
গুয়াহাটির বাসিন্দা অমর সিংহ ও সাজিদ খান বলেন, ‘‘হরিয়ানা থেকে ভুট্টা বোঝাই করে আমরা গুয়াহাটি যাচ্ছিলাম। বন্যার কারণে পুলিশ ট্রাক আটকে দিয়েছে। দিনের পর দিন হোটেলে তিন বেলা দু’জনের খাওয়া টাকা নেই।’’ এদিকে, গাড়িতে মজুত থাকা পেঁয়াজ, ফল সাতদিন ধরে আটকে থাকায় নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন চালকরা। নাদাব আলি, আক্রাম খানরা বলেন, ‘‘দ্রুত গাড়িতে মজুত পেঁয়াজ, ফল রফতানি করতে না পারলে লক্ষাধিক টাকা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।’’ যদিও পুলিশ জানিয়েছে, বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হলে তবেই ফের ট্রাকগুলি যেতে দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy