দার্জিলিঙের রাস্তায় ছাতা মাথায় খুদে। —নিজস্ব চিত্র।
শরৎকালে হাঁসফাঁস করা গরম পাহাড়ে। সকালে ‘হিমের পরশ’ থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গলদঘর্ম পরিস্থিতি দার্জিলিং শহরে। দিনের বেলায় শহরের রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা। হাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৩০ বছরের উষ্ণতার রেকর্ড ভেঙেছে পাহাড়ে। শুধু দার্জিলিংই নয়, কালিম্পং, সিকিমেও একই পরিস্থিতি। চাহিদা বাড়ছে ফ্যান এবং বাতানুকূল যন্ত্রের। গত কয়েক দিন ধরে পাহাড়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে। সোমবার তাপমাত্রা ২৮ ডিগ্রির আশপাশে। আবহাওয়া দফতর বলছে, ক্রমশ উষ্ণতা বাড়ছে পাহাড়ে। শিলিগুড়ি থেকে জলপাইগুড়ি— কোথাও তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি তো কোথাও ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেপ্টেম্বরের শেষে দিকে পাহাড়ে শীতের আমেজ অনুভূত হয়। কিন্তু শরতে পাহাড়বাসীর মধ্যে শুরু হয়েছে ফ্যান, এসি কেনার ধুম। গরমের কারণে পর্যটকেরাও দুপুরে হোটেলের বাইরে বেরোচ্ছেনই না। বিকেলের পর ভিড় বাড়ছে ম্যাল-সহ শহরের অন্যত্র।
সিকিম আবহাওয়া দফতরের তথ্য বলছে, সিকিমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দার্জিলিঙে দুপুরে তাপমাত্রা ছিল ২৭.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া তাদংয়ে ৩১.২, শিলিগুড়িতে তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। সিকিম আবহাওয়া দফতরের ডিরেক্টর গোপীনাথ রাহা বলেন, ‘‘নব্বইয়ের দশকের পর এই সময়ে এত গরম দেখা যায়নি পাহাড়ে। এখন ২৮ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা মানে অনেকটাই বেশি। তবে বিকেলের পর থেকে তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, মঙ্গলবারের পর থেকে বিক্ষিপ্ত জায়গায় বৃষ্টি শুরু হতে পারে। বেশ কিছু জায়গায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।’’
গরমের জন্য পাহাড়ে পর্যটকের সংখ্যাও কমে আসছে। পর্যটন সংস্থাগুলো জানাচ্ছে, এটা পর্যটনের মরসুম নয়। তবু সেপ্টেম্বরে হোটেলগুলিতে ‘বুকিং’ নেহাত কম থাকে না। কিন্তু গরমের কারণে সেই সংখ্যাও তলানিতে পৌঁছেছে। ‘হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্ক’-এর সম্পাদক সম্রাট স্যানালের কথায়, ‘‘গরমই অন্যতম কারণ। পাহাড়ে পর্যটকের সংখ্যা খুবই কম। ম্যাল দিনের বেলা মোটামুটি ফাঁকাই থাকছে। তবে দার্জিলিং শহরে তাপমাত্রা বাড়লেও পাহাড়ের গ্রামীণ জায়গাগুলোতে তাপমাত্রা কিন্তু স্বাভাবিকই রয়েছে। অন্য দিকে, ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ থাকার ফলে পর্যটকদের একাংশ হয়তো ভাবছেন দার্জিলিঙে যাতায়াত এখন বন্ধ। কিন্তু সেটা তো নয়।’’
দার্জিলিং বেড়াতে এসে গলদঘর্ম পর্যটকেরা। হাওড়া থেকে কয়েক দিনের জন্য পাহাড়ে বেড়াতে এসেছেন অনামিকা সেনগুপ্ত। তিনি বলেন, ‘‘ওখানে এখন বেশ গরম। একটু স্বস্তির কারণে দার্জিলিং এসেছিলাম। কিন্তু গত দু’দিন ধরে এখানে যা গরম, তাতে হোটেলের বাইরে বেরোনো দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিকেলের পর ছাড়া আমরা কেউই বাইরে যাচ্ছি না।’’ শিবরাজ সিংহ নামে আর এক পর্যটক বলেন, ‘‘পাহাড়ে এমন পরিস্থিতি হবে ভাবতে পারিনি। এই সময়ে আগেও দার্জিলিঙে এসেছি। কিন্তু এ রকম আবহাওয়া দেখিনি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘বড় বড় বিল্ডিং তৈরি হচ্ছে পাহাড় জুড়ে। এমন পরিস্থিতি একটা সময়ে যে হবে, এটাই তো স্বাভাবিক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy