Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

তোলা নিত কারা, খোঁজ নিচ্ছে দলও

আলিপুরদুয়ার পুরসভার এক সময়ের চেয়ারম্যান দীপ্ত চট্টোপাধ্যায়জানান, আলিপুরদুয়ার পুরসভার কোনও বিদায়ী কাউন্সিলর এ ধরনের কাটমানি কিংবা তোলাবাজির সঙ্গে যুক্ত নন। তাঁর কথায়, “আমাদের আলিপুরদুয়ারে এই সংস্কৃতিটাই নেই।”

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৯ ০৩:৩৭
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে এ বার কাটমানি ও তোলাবাজিতে যুক্ত নেতাদের চিহ্নিত করে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠল আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূলের অন্দরে। যাঁরা তোলাবাজিতে ইন্ধন দিয়েছেন, তাঁদেরও চিহ্নিত করার দাবি উঠেছে। অবিলম্বে বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে, যে নেতারা গররাজি হচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নালিশ জানানোর হুঁশিয়ারি দিতে শুরু করেছেন নেতৃত্বের একাংশ।

গত মঙ্গলবার কলকাতার নজরুল মঞ্চে দলের কাউন্সিলরদের নিয়ে সভা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই সভাতেই তোলাবাজির টাকা ফেরত দিতে দলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেন তিনি। একই সঙ্গে ‘চোরেদের’ যে তিনি দলে রাখবেন না তাও ওই সভা থেকে পরিষ্কার ভাবে জানিয়ে দেন তিনি।

সূত্রের খবর, নজরুল মঞ্চে মমতার ওই সভায় আলিপুরদুয়ার পুরসভার তৃণমূলের সাত বিদায়ী কাউন্সিলরও উপস্থিত ছিলেন। যাঁদের মধ্যে ছিলেন আলিপুরদুয়ার পুরসভার এক সময়ের চেয়ারম্যান দীপ্ত চট্টোপাধ্যায়ও। যিনি তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার টাউন ব্লক কমিটির সভাপতির দায়িত্বেও রয়েছেন। দীপ্ত জানান, আলিপুরদুয়ার পুরসভার কোনও বিদায়ী কাউন্সিলর এ ধরনের কাটমানি কিংবা তোলাবাজির সঙ্গে যুক্ত নন। তাঁর কথায়, “আমাদের আলিপুরদুয়ারে এই সংস্কৃতিটাই নেই।”

জেলা তৃণমূল মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রী তথা আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের সভাধিপতি শীলা দাস সরকার বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ আমাদের শিরোধার্য। কিন্তু এ টুকু বলতে পারি আমাদের জেলা পরিষদের সব কাজই ই-টেন্ডারের মাধ্যমে হয়। ফলে এখানে কাটমানির কোন প্রশ্নই নেই। আমাদের জেলা পরিষদের কোনও সদস্য তোলাবাজির সঙ্গেও যুক্ত নন।’’

কিন্তু তৃণমূলের নেতা-নেত্রীদের এই দাবি উড়িয়ে দিচ্ছেন দলের নেতাদেরই একাংশ। তাদের অভিযোগ, আলিপুরদুয়ার থেকে শুরু করে ফালাকাটা কিংবা কালচিনি থেকে কুমারগ্রাম—সর্বত্রই নেতাদের একটি অংশ সরাসরি কাটমানি ও তোলাবাজির সঙ্গে যুক্ত। এমনকি অনেক নেতা জমি মাফিয়া কিংবা জলাশয় দখলের চক্রের সঙ্গেও জড়িয়ে রয়েছেন। বছরের পর বছর ধরে তা এ ধরনের অবৈধ কাজ করে চললেও দলের শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাই নিচ্ছেন না। আর নেতাদের একাংশের এই অবৈধ কাজের ফলেই এ বারের লোকসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে দলকে বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে।

আলিপুরদুয়ার জেলার তৃণমূলের প্রবীণ নেতা জহর মজুমদারের অভিযোগ, “আমি আগেও বলেছি, আলিপুরদুয়ার জেলায় দলের অনেক নেতাই তোলাবাজি, কাটমানি, জমি মাফিয়া কিংবা পুকুর বোজানোর ঘটনায় জড়িত। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী অবিলম্বে ওই নেতাদের চিহ্নিত করে তোলবাজি ও কাটমানির টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করতে হবে। তা না হলে এ ধরনের ঘটনায় জড়িত নেতাদের বিস্তারিত তথ্য আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে জানাব। সেই সঙ্গে যাদের ইন্ধনে এই কাজ হচ্ছে তাঁদের তথ্যও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরব।”

বিষয়টি নিয়ে অবশ্য নীরব তৃণমূলের জেলা শীর্ষ নেতৃত্ব। দলের জেলা সভাপতি মোহন শর্মা বলেন, “এই মুহুর্তে আমি আলিপুরদুয়ারে বাইরে রয়েছি। তাই কোনও বিষয় নিয়ে এখন কিছু বলব না।”

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Alipurduar Cut Money
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy