ফুলহার নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
মাটি মাফিয়াদের উৎপাতে বিপন্ন জাতীয় সড়কের উপর নির্মিত সেতু। এই অভিযোগ তুলে নিজের দলের নেতার বিরুদ্ধেই সরব হলেন মালদহের রতুয়ার তৃণমূল বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়। যাঁর বিরুদ্ধে সমর এই অভিযোগ তুলেছেন, তৃণমূলের রতুয়া এক নম্বর ব্লকের সভাপতি সেই ফজরুল হকের অবশ্য দাবি, এ কথা সর্বৈব মিথ্যা।
সম্প্রতি রতুয়ায় ফুলহার নদীর আশপাশে ‘নতুন’ দৃশ্য দেখতে পাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক। তাঁর অভিযোগ, মাফিয়ারা ফুলহার নদীর উপরে থাকা ১৩১-এ জাতীয় সড়কের সঙ্গে সংযোগকারী সেতুর তলদেশ থেকে মাটি কাটছে। তার জেরে ক্ষতি হচ্ছে সেতুটির। তা ধসে পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সমর। তিনি অভিযোগ করেছেন, বিজেপির সংখ্যালঘু সেলের সহ-সভাপতি শেখ ইয়াসিনের পরামর্শে এমন কাজে মাটি মাফিয়াদের মদত দিচ্ছেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ফজরুল। রতুয়া থানার আইসি, ভূমি এবং ভুমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকদের একাংশও ওই কাজে যুক্ত বলে অভিযোগ। শাসকদলের নেতাদের একাংশের সঙ্গে যোগসাজশ করে এই কর্মকাণ্ড তাঁরা চালাচ্ছেন বলেও অভিযোগ সমরের। তাঁর আশঙ্কা, এর ফলে বিপদের মুখে দাঁড়িয়ে রতুয়ার মহানন্দাটোলা এবং বিলাইমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় দেড় লক্ষ মানুষ।
এ প্রসঙ্গে সমর বলেন, ‘‘মা-মাটি-মানুষের সরকারকে হেয় করার জন্য এ সব করা হচ্ছে। এরা উপরে তৃণমূল, আসলে বিজেপির হয়ে কাজ করছে। সেতু ফেলে দেওয়ার চক্রান্ত করা হচ্ছে। থানার আইসিও মদত দিচ্ছেন। রতুয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। এ ছাড়া পুলিশ কর্তা জাভেদ শামিম-সহ অনেককে মৌখিক ভাবে জানিয়েছি। তেমন হলে মুখ্যমন্ত্রীকেও লিখিত জানাব।’’
ফুলহার নদীর উপর নির্মিত ওই সেতুর সঙ্গে স্থানীয় বিধায়কের আবেগের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন অনেকেই। সে কথা মেনে নিয়েই তৃণমূলের মালদহ জেলার সভাপতি আব্দুল রহিম বক্সির বক্তব্য, ‘‘বিধায়কের অভিযোগের সপক্ষে যথার্থ প্রমাণ রয়েছে। সেতুর বিষয়টি উনি ভাল জানেন। আমরা বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্বের নজরে আনব। তেমন হলে ব্লক সভাপতিকে শোকজও করা হতে পারে।’’
যাঁর বিরুদ্ধে সমরের এই অভিযোগ, সেই ফজলুর ক্ষোভের সুরে বলছেন, ‘‘উনি পাগল হয়ে গিয়েছেন। আমি এক জন শিক্ষক। আমার বাবাও শিক্ষক ছিলেন। আমাদের পরিবারের একটা শিক্ষা-সংস্কৃতি আছে। আমার বিরুদ্ধে কোনও মামলা নেই। যা দু’একটি আছে তা সমরেরই করা। দম থাকলে এই বিষয়টি নিয়ে উনি সিবিআই তদন্তও করাতে পারেন। অবান্তর কথা বলছেন।’’
রতুয়ায় তৃণমূলের মধ্যে এই দ্বন্দ্বের আবহ দেখে বিজেপির দক্ষিণ মালদহ সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ির খোঁচা, ‘‘মাটি নিয়ে কোটি টাকার কারবার চলছে। তার ভাগ নিয়ে গন্ডগোল দেখা দেওয়াতেই এই পরিস্থিতি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy