ভোরে শিলিগুড়ির বিধান মার্কেটে মাংসের দোকানে গিয়েই চমকে যান শিলিগুড়ির সুদীপ্ত মোহন সরকার। যে পাঁঠার মাংস ছিল বুধবারেও ৫৫০ টাকা কেজি। তা কি না ৭০০ টাকা কেজি দর হাঁকছেন দোকানি! প্রতিবাদ করেও লাভ নেই। কারণ, ততক্ষণে আরেক ক্রেতা তাঁকে ঠেলে দু’কেজির বরাত দিয়ে ফেলেছেন।
শুক্রবার মালদহের ইংরেজবাজারের এলআইসি মোড়ে গিয়ে একই অভিজ্ঞতা বাঁধ রোডের বাসিন্দা অনন্ত সাহার। কেজি প্রতি ৮০ টাকা দাম বেড়ে গিয়েছে। তাঁকে মাংস বিক্রেতা হবিবুর রহমান জানিয়ে দিলেন, আলমপুরের হাট থেকে তাঁদেরও বেশি দাম দিয়ে খাসি কিনে আনতে হয়েছে। ফলে তাদেরও বেশি দামেই মাংস বিক্রি করতে হবে। অগত্যা অনন্তবাবু মকদমপুর বাজার থেকে কিনলেন ১৬০ টাকা কেজি দরে ব্রয়লার মুরগি। ইংরেজবাজার পুরসভার উপ-পুরপ্রধান দুলাল সরকার বলেন, ‘‘ফাটকাবাজি হলে পদক্ষেপ হবে।’’
ছবিটা প্রায় একই রায়গঞ্জেও। মাম্পি সরকার বলেন, ‘‘প্রতি বছরই হোলির দিন খাসির মাংসের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়।’’ মোহনবাটী বাজারের খাসির মাংস বিক্রেতা মহম্মদ জাহিদ জানান, প্রতি বছরই হোলির দিন পাইকারি বাজারে খাসির দাম বেড়ে যায়। ইসলামপুরের মাংস বিক্রেতা মহম্মদ সালাম বলেন, জোগানের চেয়ে চাহিদা বেশি, তাই এই অবস্থা। রায়গঞ্জের পুরপ্রধান সন্দীপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘দাম নিয়ন্ত্রণে কী করণীয়, তা দেখে হবে।’’
শামুকতলার বাসিন্দা পরিমল দেবনাথের মতো অনেকেই জানান, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মাংসের দাম বাড়িয়ে দেওয়া একটি রীতিতে পরিণত হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘কেন প্রশাসন আগে থেকে সতর্ক হয় না, তা বুঝি না।’’ জলপাইগুড়ির মাংস বিক্রেতা শ্যামল দাস বললেন, ‘‘হাটে পাঁঠা পাওয়াই যাচ্ছে না। তাই দাম বেড়ে গিয়েছে।’’ জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, ‘‘জলপাইগুড়িতে মাংসের দাম নিয়ন্ত্রণে কোনও ব্যবস্থা নেই। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কিছু বিক্রেতা ক্রেতাদের থেকে যা খুশি দাম নিচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে কথা বলব।’’
আমিষে আগুন
শিলিগুড়ি
• পাঁঠা-৬০০-৬৫০ টাকা কেজি
• খাসি-৫৫০-৬০০ টাকা কেজি
• দেশি মুরগি- ২৮০ টাকা কেজি
• ব্রয়লার মুরগি- ১৬০ টাকা কেজি
জলপাইগুড়ি
• পাঁঠা ৫০০ টাকা কেজি থেকে হয়েছে ৬০০-৭০০
• দেশি মুরগি ছিল ৩০০, হয়েছে ৩৫০-৩৭০
• ব্রয়লার ছিল ১৬০, হয়েছে ২০০
মালদহ
• খাসি ৫২০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা (৪৫০-৪৭০) প্রতি কেজি
• দেশি মুরগি ২৮০ টাকা থেকে হয়েছে ৩৫০ টাকা প্রতি কেজি
• ব্রয়লার মুরগি দাম ১৬০ টাকা প্রতি কেজি। দাম বাড়েনি।
কোচবিহার
• পাঁঠা ৫৫০ টাকা থেকে হয়েছে ৬০০ টাকা প্রতি কেজি
• ব্রয়লার ১৫০ টাকা থেকে ১৮০
• দেশি মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা
• খাসি ৫০০ থেকে হয়েছে ৫৬০
আলিপুরদুয়ার
• পাঠার মাংস ৬০০। হয়েছে ৭০০ টাকা।
• দেশি মুরগির মাংস, ছিল ২৫০ টাকা কেজি। হয়েছে ২৯০- ৩০০
• ব্রয়লার ১৮০ ছিল। একই আছে।
বালুরঘাট
• পাঁঠা ৫০০ টাকা থেকে ৫৮০।
• খাসি ৪৮০ টাকা থেকে ৫৫০।
• দেশি মুরগি ২৮০ থেকে ৩২০।
• ব্রয়লার ১৫০ থেকে ২০০।
রায়গঞ্জ
• দিশি মুরগি সাধারণত ২৪০ হয়েছে ২৮০ থেকে ২৯০
• খাসি ৫০০, হয়েছে ৫৬০
• ব্রয়লার ১৮০ ছিল, সেই দামই আছে।
কোচবিহারেও পাঁঠা, ব্রয়লারের দাম বেড়েছে। মাংস বিক্রি হয়। ব্রয়লার বিক্রি হয় ১৮০ টাকা দরে। দুটিরই দাম কয়েকদিন আগেও খানিকটা কম ছিল। পাঁঠার মাংস ৫৫০ টাকা ও ব্রয়লার ১৬০ টাকায় বিক্রি হয়।
বিক্রেতা সুদাম রবিদাস বলেন, ‘‘কেজিতে গড়ে ৫০ টাকা বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। আমরাও যে বেশি দামে কিনেছি।’’ কোচবিহার পুরসভার ভূষণ সিংহ বলেন, ‘‘সত্যিই বিক্রেতারা বেশি দামে কেনায় দাম বেড়েছে না ফাটকা বাজি কিছু হয়েছে খোঁজ নিচ্ছি। সেই মতো ব্যবস্থা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy