Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Balurghat

‘নেই রাজ্যে’র বাসিন্দা ওঁরা

দু’টি হস্তচালিত নলকূপের উপর ভরসা করে পানীয় জলের জোগান গ্রামে।

বাসন্তী কিস্কু। নিজস্ব চিত্র

বাসন্তী কিস্কু। নিজস্ব চিত্র

অনুপরতন মোহান্ত
চকডাঙা (বালুরঘাট) শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:৪৪
Share: Save:

বন দফতরের বেহাল দোগাছি ফরেস্ট পর্যন্ত পাকা রাস্তা। তার পর দু’পাশে ধান জমির মাঝ বরাবর সরু এবড়ো খেবড়ো আলপথ। ওই পথ ধরে দু’পাশে জঙ্গলে ঘেরা তপন ব্লকের সীমানায় বালুরঘাটের চকডাঙা গ্রাম। ঢুকতেই দেখা গেল ভাঙা ঘরের সামনে বসে আছেন এক বৃদ্ধা, বিধবা। বছর তেষট্টির বাসন্তী কিস্কু। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে কোনও মতে দিন কাটছে তার।

প্রশ্ন: সরকারি প্রকল্পের টাকা পাচ্ছেন তো?

বাসন্তী: কোথায় আর পাচ্ছি!

প্রশ্ন: কোনটা পাচ্ছেন না?

বাসন্তী: বার্ধক্য ভাতা পাচ্ছি না। শরীরে কাজ করার বল নেই। খাটতেও পারি না। প্রতিবেশীদের দয়ায় কোনও রকমে বেঁচে আছি।

বালুরঘাট শহর থেকে মাত্র প্রায় ৬ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত চকডাঙা যেন যোগাযোগ সমস্যায় পাণ্ডববর্জিত এক গ্রাম। মাত্র ১৬ ঘর জনজাতির পরিবারের বাস। লোকসংখ্যা মাত্র ৬২ জন। চাষবাসের কাজ করেই সকলের বেঁচে থাকা। একটু এগোতেই দেখা হল বৃদ্ধ বানো রামের সঙ্গে।

প্রশ্ন: সরকারি প্রকল্পে কী পান?

বানো: ঝড়ে ঘর ভাঙার টাকা পাইনি। পঞ্চায়েতে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।

দু’টি হস্তচালিত নলকূপের উপর ভরসা করে পানীয় জলের জোগান গ্রামে। বিদ্যুৎ পৌঁছেছে। কিন্তু এখনও সরকারি সেচের ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। ফলে বৃষ্টির জলে বছরে একবার আমন ধান চাষ। তার পর চারদিক জুড়ে শুধু ধূ ধূ জমি। বাইরের ব্যবসায়ীরা জমি লিজ় নিয়ে পাম্প ভাড়া করে বোরো ও আনাজ চাষ করেন। এলাকার ছোট চাষি ভীম সরেন, দিলীপ বাস্কেরা শুকনো মুখে তাকিয়ে দেখেন। মাত্র দেড় বিঘা জমির উপর চার জনের সংসার চলে না দিলীপ বাস্কের।

প্রশ্ন: সরকারি প্রকল্পের কোনও টাকা পেয়েছেন?

দিলীপ: গত বন্যায় ফসলের ক্ষতিপুরণের টাকা মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন। দীর্ঘদিন ডুবে থাকায় ধান নষ্ট হয়ে যায়। পঞ্চায়েতে আবেদন করেও ফসলের ক্ষতিপূরণের টাকা পাইনি।

কথার ফাঁকে মাটির বারান্দায় এসে ঝুমরি মুর্মু, বালকে সরেনদের মতো একদল বিধবা বৃদ্ধা জড়ো হন।

প্রশ্ন: বার্ধক্য ভাতা পান?

ঝুমরি: দুয়ারে সরকারে ফর্ম জমা করেছি। এখনও পাইনি।

যক্ষ্মায় আক্রান্ত বছর পঁয়তাল্লিশের শিবলাল মুর্মু।

প্রশ্ন: ওষুধ পান?

শিবলাল: ওষুধ নিতে যেতে হয় প্রায় ৫ কিমি দূরের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। ওই কাশীপুর গ্রামেই রেশন দোকান, উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র, ডাকঘর। ভোট দিতেও এখানেই যেতে হয়। বোয়ালদার গ্রাম পঞ্চায়েত দফতর আরও দূরে।

(পরেরদর্পণআগামী সোমবার)

অন্য বিষয়গুলি:

Balurghat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy