—ফাইল চিত্র।
সঙ্গিনী দখলের লড়াইয়ে জখম হওয়ার এক মাসের মাথায় মৃত্যু হল জলপাইগুড়ির আপালচাঁদের জঙ্গলে থাকা মাকনা হাতির। তবে তার চিকিৎসার পদ্ধতি এবং সেই সংক্রান্ত ‘দীর্ঘসূত্রিতা’ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। হাতিটির চিকিৎসা দ্রুত করতে সম্প্রতি নির্দেশ দেন রাজ্যের বনমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা। তার পরেও রবিবার হাতিটির মৃত্যুতে পরিবেশপ্রেমী সংগঠনগুলি প্রশ্ন তুলেছে, মাসখানেক আগে জখম হাতিটির সন্ধান মিললেও এত দিনে তাকে সুস্থ করে তোলা গেল না কেন! যদিও চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ মানেনি বন দফতর।
গত ২৩ নভেম্বর আপালচাঁদ জঙ্গল লাগোয়া গজলডোবার রাস্তার পাশে ফুট দশেক উঁচু পূর্ণবয়স্ক পুরুষ হাতিটিকে জলাশয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন এলাকাবাসী। বনকর্মীরা দাবি করেন, অন্য হাতির সঙ্গে সঙ্গিনী দখলের লড়াইয়ে লেজের পাশে গভীর ক্ষত হয়েছে তার। যন্ত্রণা থেকে আরাম পেতে হাতিটি ক্ষতস্থান জলে ডুবিয়ে রাখত। তার চিকিৎসায় ‘মেডিক্যাল বোর্ড’ গড়া হয়। হাতিটিকে কলাগাছে ভরে কিছু ওষুধ খেতে দেওয়া হয়। দিন দুয়েক পরে অস্ত্রোপচার করতে গেলে দেখা যায়, আর একটি কমবয়সি হাতি জখম হাতিটিকে আড়াল করে রয়েছে। বহু চেষ্টাতেও তাদের আলাদা করা যায়নি। ফলে ভেস্তে যায় অস্ত্রোপচারের চেষ্টা।
এর পরে হাতিটির চিকিৎসা কার্যত হয়নি, অভিযোগ এলাকাবাসী ও পরিবেশপ্রেমীদের। ‘ওদলাবাড়ি নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার সোসাইটি’র কর্মকর্তা নফসর আলি ও লাটাগুড়ির ‘গ্রিন লেভেল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’র সম্পাদক অনির্বাণ মজুমদারদের দাবি, বন দফতরের ‘উদাসীনতায়’ হাতিটির মৃত্যু হয়েছে। এলাকাবাসীর একাংশের বক্তব্য, বন দফতর যে ওষুধ দিচ্ছিল, তা হাতিটি খাচ্ছিল কি না, তা দেখা হয়নি। সঙ্গী হাতিটি সরে যাওয়ার পরেও অস্ত্রোপচারের উদ্যোগ কেন হল না, সে প্রশ্নও উঠেছে।
হাতিটিকে যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে ক্ষতস্থান গাছের গায়ে ক্রমাগত ঘষতে দেখেছেন এলাকাবাসী এবং বনকর্মীরা। ধীরে ধীরে সেটির শক্তি কমে আসছিল। শুঁড় দিয়ে ডাল ভেঙে পাতা খাওয়ার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেছিল। গত বৃহস্পতিবার বনমন্ত্রী ডুয়ার্সে এসে জখম হাতিটির খবর পান এবং দ্রুত চিকিৎসার নির্দেশ দেন। বন দফতরের দাবি, রবিবার সকাল থেকে চিকিৎসা শুরু হয়েছিল। দুপুরের পরে হাতিটির মৃত্যুর খবর মেলে।
রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) দেবল রায় বলেন, “যে বনকর্মীরা চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন, তাঁরা সবাই অন্তত ২০ বছরের অভিজ্ঞ। গাফিলতির কথা কেউ বলতেই পারেন। প্রথমে চিকিৎসা করতে অসুবিধে হয়েছিল কারণ, আর একটি হাতি এসে পাশে দাঁড়িয়েছিল। তবে জখম হাতিকে ওষুধ দেওয়া, নজরদারি চলছিল।” তাঁর সংযোজন: “আসলে ক্ষত গভীর ছিল। সংক্রমণ ছড়িয়ে যাচ্ছিল। তাই হাতিটিকে বাঁচানো গেল না।” বহু চেষ্টাতেও এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি মন্ত্রী বিরবাহার সঙ্গে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy