Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Education

গাড়িতে লাইব্রেরি, পড়াচ্ছেন দম্পতি

লকডাউনের সময় দম্পতির মনে হয়, গরিব পড়ুয়াদের বই তো পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

শিক্ষাব্রতী: বই তুলে দিচ্ছেন অনির্বাণ ও পৌলমী নন্দী। নিজস্ব চিত্র

শিক্ষাব্রতী: বই তুলে দিচ্ছেন অনির্বাণ ও পৌলমী নন্দী। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৬:১০
Share: Save:

লকডাউনের ফলে আজও স্কুল বন্ধ। স্মার্ট ফোন নেই বলে অধিকাংশ গ্রামীণ পড়ুয়ার বাড়িতে বসে পড়াশোনা করার সুযোগও খুব কম। এই ঘাটতি পূরণ করতেই এগিয়ে এসেছেন অনির্বাণ ও পৌলমী নন্দী। এই দম্পতি প্রথমে চালু করেন ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি। এ বারে ১০ টাকার বিনিময়ে শুরু করেছেন কোচিং-ও। গাড়িতে বই বোঝাই করে পৌঁছে যাচ্ছেন কখনও নকশালবাড়ি, ফাঁসিদেওয়া, কখনও অন্য কোনও চা বাগান লাগোয়া প্রত্যন্ত গ্রামে।

অনির্বাণ বছর তিনেক আগে খড়্গপুর আইআইটির রিসার্চ ফেলো হিসেবে গ্রামোন্নয়নের উপরে গবেষণা শুরু করেন। পৌলমী সোশ্যালওয়ার্ক নিয়ে পড়াশোনা করে আইআইটি’র প্রকল্পে রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট। কী ভাবে এই বই আর পড়ানোর কথা মাথায় এলো? অনির্বাণের কথায়, ‘‘গবেষণার কাজে প্রত্যন্ত এলাকায় গিয়ে মানুষের দুর্দশা দেখি। দেখলাম পড়াশোনা নিয়ে কচিকাঁচাদের সঠিক পরামর্শ দেওয়ার লোক নেই।’’ তার পরেই লাইব্রেরি করার সিদ্ধান্ত।

লকডাউনের সময় দম্পতির মনে হয়, গরিব পড়ুয়াদের বই তো পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু স্কুল যেখানে বন্ধ, সেখানে বাচ্চারা পড়াশোনা আদৌ করছে কি? তখন তাঁরা শুরু করলেন ১০ টাকার কোচিং। কিন্তু টাকা কেন? অনির্বাণদের কথায়, টাকাটা দিলে পড়ুয়াদের বাড়ি লোকেদের মধ্যে পড়তে পাঠানোর আগ্রহটা থাকবে, বিনে পয়সায় পড়ালে তা থাকবে না।

গঙ্গারাম চা বাগান, মেরিভিউ, জুরান্তি, কিলকোট চা বাগানের মতো ১৬টি চা বাগানে এবং ৩০টি গ্রামে তাঁরা পড়াশোনার এই ব্যবস্থা চালু করেছেন। ওই সমস্ত এলাকার অন্তত ১৬৪৬ জন পড়ুয়া এই ‘মোবাইল লাইব্রেরি’র সঙ্গে যুক্ত। ৬ হাজারেরও বেশি বই সংগ্রহ করা হয়েছে মানুষদের থেকে। ওয়েবসাইট বানিয়ে, সমাজমাধ্যমে প্রচার করে বই সংগ্রহ করেন তাঁরা। উৎসাহীরা ঠিকানা জানালে সেখানে গিয়ে বই সংগ্রহ করে আনা হয়। কোচিং ক্লাস চালাতে স্থানীয় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর উৎসাহী সদস্যদের শামিল করা হয়।

অনির্বাণের কথায়, ‘‘স্কুলের পড়াশোনার পাশাপাশি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হতে, কাজের জন্য কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, ইংরেজি বলতে শেখা, নার্সিং পড়তে পরামর্শ দেওয়ার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। ধীরে ধীরে অন্যান্য প্রত্যন্ত এলাকায় পৌঁছনোর লক্ষ্য রয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Education Library Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy