Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Pesticides for tea garden

চা বাগানে অনুমোদিত কীটনাশক সহজলভ্য করতে যৌথ উদ্যোগ 

আগামী বছরের মধ্যে রাজ্যে চা পাতার নমুনা পরীক্ষার পরিকাঠামো তৈরির লক্ষ্যমাত্রা রেখে, কীটনাশকের ব্যবহার বিধির খসড়া প্রকাশ করেছে রাজ্য সরকার।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

অনির্বাণ রায়
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৪ ০৯:১৬
Share: Save:

চা বাগানে ব্যবহার করা যাবে এমন অনুমোদিত কীটনাশক বাজারে সহজলভ্য করতে চা পর্ষদ এবং রাজ্যের কৃষি দফতর যৌথ ভাবে উদ্যোগী হবে। রাজ্য সরকারের শিল্প ও বাণিজ্য দফতরের প্রকাশিত কীটনাশক ব্যবহারবিধির খসড়ায় এমনই জানানো হয়েছে। কৃষি দফতর উদ্যোগী না হলে, বাজারে অনুমোদিত কীটনাশক মেলা সম্ভব নয়। একই সঙ্গে চা পর্ষদ যদি কেন্দ্রীয় কৃষি ও সার মন্ত্রকের সঙ্গে সমন্বয় না রাখে, তবে সে সব কীটনাশক বাজারে না-ও এসে পৌঁছতে পারে। সে প্রেক্ষিতে, চায়ের কাপ থেকে ক্ষতিকারক রাসায়নিক দূরে রাখতে, কেন্দ্রীয় চা পর্ষদ এবং রাজ্যের কৃষি দফতরের সমন্বয় ঘটাচ্ছে রাজ্যের শিল্প-বাণিজ্য দফতর। জলপাইগুড়ির এক পদস্থ কৃষিকর্তার কথায়, “বার দুয়েক চা পর্ষদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। দ্রুত বৈঠকও হবে।” অনুমোদিত কীটনাশকও রাসায়নিক। সে কারণে পুরোপুরি জৈব সার প্রয়োগে উৎসাহ দেওয়া হলেও, রাসায়নিক সার প্রয়োগের ক্ষেত্রে একটি মধ্যবর্তী সময়সীমার কথা উল্লেখ রয়েছে। ধরা যাক, অনুমোদিত রাসায়নিক কীটনাশক চা বাগিচায় ছেটানো হল। তার কত দিন পরে পাতা তোলা যাবে তা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে। তাতে ক্ষতির আশঙ্কা একেবারে ন্যূনতমে নিয়ে আসা সম্ভব হবে বলে দাবি।

আগামী বছরের মধ্যে রাজ্যে চা পাতার নমুনা পরীক্ষার পরিকাঠামো তৈরির লক্ষ্যমাত্রা রেখে, কীটনাশকের ব্যবহার বিধির খসড়া প্রকাশ করেছে রাজ্য সরকার। সে খসড়া প্রস্তাবে ‘মোনোক্রোটোফস’, ‘এন্ডোসালফান’ এবং ‘অ্যাসিফেট’ জাতীয় কীটনাশকের ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ করতে বলা হয়েছে। চা পর্ষদ এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা সংস্থার অনুমোদিত ৫৬টি কীটনাশক বাজারে সহজলভ্য করতে বলা হয়েছে।

গত মার্চে চা পর্ষদ থেকে নির্দেশ দিয়ে জানানো হয়, ১ এপ্রিল থেকে তৈরি চায়ের নমুনা পরীক্ষায় নিষিদ্ধ কীটনাশক পাওয়া গেলে, সব চা ফেলে দিতে হবে এবং কারখানার লাইসেন্সও বাতিল করা হতে পারে। সে নির্দেশের পরে, উত্তরবঙ্গের চা উৎপাদনও থমকে যায়। ছোট চা চাষিরা সে সময়ে উত্তরবঙ্গে সফররত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্য সরকার ছোট চা চাষি, চা পর্ষদ-সহ চা উৎপাদক জেলার প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বসে সিদ্ধান্ত নেয়, নিষিদ্ধ কীটনাশকের ব্যবহার বন্ধ হবে। তবে সুষ্ঠু বিধিনিষেধের মাধ্যমে। এক বছরের লক্ষ্যমাত্রাও নেওয়া হয়। সে মতো রাজ্যের শিল্প ও বাণিজ্য দফতর কীটনাশক ব্যবহারবিধির খসড়া প্রকাশ করেছে।

খসড়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বাজারে নিষিদ্ধ তিন ধরনের কীটনাশকের বিক্রি আটকাতে কৃষি দফতর নজরদারি চালাবে। অনুমোদিত কীটনাশক বাজারে সহজলভ্য কি না, তা-ও কৃষি দফতর দেখবে। সব কৃষকেরা যাতে অনুমোদিত ওষুধই ব্যবহার করেন, সে জন্য চা পর্ষদ সচেতনতা শিবির করবে সকলকে নিয়ে। সচেতনতামূলক লিফলেট ছাপাতে হবে বিভিন্ন ভাষায়। প্রায় পঞ্চাশ হাজার ছোট চা চাষিকে সচেতন করে, নিষিদ্ধ কীটনাশক কমিয়ে আনার পরিকল্পনাও রয়েছে খসড়ায়। সেই সঙ্গে আগামী বছরের মধ্যে নমুনা পরীক্ষার পরিকাঠামো তৈরি করার সিদ্ধান্ত ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছেন চা চাষিরা। ছোট চা চাষিদের সর্বভারতীয় সংগঠনের (সিস্টা) সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “খসড়া প্রস্তাবকে স্বাগত জানাই। আমরাও চাই ,নিষিদ্ধ ক্ষতিকারক কীটনাশক ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করতে। এ জন্য সব দফতরের মিলিত সহযোগিতা এবং সচেতনতার প্রসার চাই।”

উত্তরবঙ্গের এক ক্ষুদ্র চা চাষির কথায়, “সমস্যা হচ্ছে, নিষিদ্ধ কীটনাশকের থেকে অনুমোদিত কীটনাশকের দাম বেশি। তাই পুরোপুরি নিষিদ্ধ কীটনাশকের প্রয়োগ বন্ধ করা কতটা সহজ হবে, সেটাই প্রশ্ন।”

অন্য বিষয়গুলি:

Tea Board Agriculture Department
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy