তিন দশকের বেশি সময় বাংলাদেশে সশরীরে যাওয়া হয়নি। কিন্তু মনটা বরাবর যেন ওপার বাংলাতেই পড়ে থাকে। আমার পূর্বসূরিরা তো সবাই ওখানেই ছিলেন। এখনও ঢাকাতে পিসতুতো দাদা ও তাঁর পরিবারের লোকেরা রয়েছেন। অন্য আত্মীয় স্বজনরাও বাংলাদেশের ময়মনসিংহ সহ বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে। ফোনে যোগাযোগ হয় মাঝেমধ্যে। কাঁটাতারের বেড়ার বিভাজনের দূরত্বটা যেন ফোনে কথা বলার সময় খানিকটা ঘুচে যায়। কিন্তু মনের ভার তো যায় না। কিন্তু ওদেশে অন্তত কোন অশান্তির বাতাবরণ নিয়ে চিন্তা ছিল না। কয়েকদিন থেকেই বাংলাদেশের নানা ঘটনার জেরে কিছুটা উদ্বেগ অবশ্য বাড়ছিল। পুরোহিত হত্যা থেকে ঢাকার গুলশন মার্কেটে রেস্তোরাঁয় সন্দেহভাজন জঙ্গি হামলার ঘটনা ওই উদ্বেগ কয়েকশো গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। যার জেরে শুক্রবার রাত থেকে দু’ চোখের পাতা এক করতে পারছি না। সব সময় মনের মধ্যে যেন একটা ভয় কাজ করছে। শুক্রবার রাতভর টিভি-র বিভিন্ন চ্যানেলের খবরে চোখ রেখেছি। মুম্বইয়ে হোটেলে জঙ্গি হামলার ধাঁচে ও পার বাংলায় এমনভাবে জঙ্গি হামলার খবরে খুব অসহায়ও লাগছে। সব সময় মনে হচ্ছে কী জানি, রাস্তাঘাটে চলাফেরার সময় আমার আত্মীয়েরা কোনও বিপদে পড়বে না তো! এমন সময়ে যদি এক ছুটে গিয়ে সবার পাশে থাকতে পারতাম তবে বোধহয় খানিকটা শান্তি পেতাম। কিন্তু একটা অন্য দেশে তো বললেই চট করে যাওয়া সম্ভব হয় না। তার উপরে ফোনেও যোগাযোগ করতে পারছি না। এ সব ভাবতেই নিজের অজান্তে চোখ ফেটে জল আসছে। ফোনে যোগাযোগটা করতে পারলে কাঁটাতারের ওই বিচ্ছেদের যন্ত্রণা এ ভাবে অনুভবের থেকে নিজেকে হাল্কা করতে প্রথমে চিৎকার করে কিছু সময় শুধু কাঁদব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy