বেডরুমে এসির ফাঁক দিয়ে সকালের দিকে একটি লেজ দেখা গিয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে তা টিকটিকির লেজ বলেই মনে হয়েছে। দুপুরে এসির অন্য একটি ফাঁক থেকে যখন একটি মুখ, দু’টি চোখ দেখা যায় সম্বিত ফেরে তখন। একটি সাপ লাফিয়ে পড়ে বিছানায়। পরে ঢুকে যায় ঘরের এক কোণে। সোমবার ইংরেজবাজার শহরের রামনগরের কাছারি এলাকায় অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) অনিন্দ্য সরকারের বাংলোয় শোওয়ার ঘরে হুলস্থুল পড়ে যায়।
ডাক পড়ে সর্পপ্রেমী বলে পরিচিত নিতাই হালদারের। বেশ কিছুক্ষণের চেষ্টায় সাপটিকে উদ্ধার করে তিনি ফিরে যান। কিছুক্ষণ পরে ফের এসির ফাঁক দিয়ে ঝুলতে দেখা যায় সাপের লেজ। ফের নিতাই এসে নানা কসরৎ করে তিনটে সাপ বের করেন। ফের সন্ধ্যার পরে এসির ফাঁক দিয়ে আরও লেজ ঝুলতে দেখা যায়। এ বার এসে গভীর রাত পর্যন্ত আরও চারটি সাপ উদ্ধার করেন নিতাই। সোমবার সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এমনই আতঙ্কের পরিবেশ ছড়িয়ে পড়েছিল অনিন্দ্য সরকারের সরকারি বাংলোয়। বাড়িতে আরও সাপ রয়েছে কিনা তার হদিস পেতে ওই ঘরের পাশাপাশি আর একটি বেডরুমের এসি খুলে মঙ্গলবার দেখা হয়। নতুন করে আর সাপ উদ্ধার হয়নি। তবে পরিবার নিয়ে কার্যত আতঙ্কিত অতিরিক্ত জেলাশাসক।
অনিন্দ্য বলেন, ‘‘এসির ভিতরে যে সাপ আস্তানা করতে পারে তা ভাবতে পারিনি। ওই ঘরে ছেলে ঢোকে। স্ত্রীও নানা কাজে সেই ঘরে যায়। ওই ঘরে রাত অবধি আমি বই পড়ি, মাঝেমধ্যে ঘুমোই। সোমবার অনেক রাত পর্যন্ত আটটি সাপ উদ্ধার হওয়ার পর থেকে পরিবার নিয়ে আতঙ্কে রয়েছি।’’
সর্পপ্রেমী নিতাই হালদার বলেন, ‘‘উদ্ধার করা আটটি বেত আঁচড়া সাপ বাংলোর একটি ঘরের এসিতে আস্তানা বেধেছিল। ওই সাপ নির্বিষ।’’ তিনি জানান, লাউডগা প্রজাতির সাপ বেত আঁচড়া। গাছেই তারা থাকে। সেগুলি বন দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সেগুলি জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)