প্রিয় মানুষের সান্নিধ্যে এলে সেই ভাল লাগার প্রতিফলন হয় চোখেও। চোখের মণির মাঝখানে যে গভীর,কালো, বৃত্তাকার অংশ, তার পরিধি অনেকটা বেড়ে যায়। কিন্তু একই ঘটনা যদি অন্য সময়েও ঘটে? মনোবিদেরা বলছেন, চোখের তারার আকৃতি যখন তখন বেড়ে যাওয়া মানসিক সমস্যার ইঙ্গিতও হতে পারে!
চোখের তারা বা তারারন্ধ্র ঠিক করে দেয় চোখের লেন্সে কতখানি আলো প্রবেশ করতে পারবে। তবে আলোর পাশাপাশি মনের অন্ধকারের হদিস দেওয়ারও কি ক্ষমতা আছে তার! ক্লিনিকাল সাইকোলজিস্ট মেহজাবিন দোর্দি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘‘চোখের তারার আকার-আকৃতিতে নজর দিলে, এবং বিভিন্ন পরিস্থিতে তার প্রতিক্রিয়া খেয়াল করলে মনের স্বাস্থ্যের হদিস পাওয়া যায়।’’
চোখের তারা থেকে কী কী বোঝা যায়?

উদ্বেগ বা মানসিক চাপ
প্রিয়জনের সান্নিধ্যে থাকলে যেমন তারারন্ধ্র বড় হয়, ঠিক তেমনই মানসিক চাপ বা উদ্বেগে থাকলেও চোখের তারা আকারে বাড়তে পারে। আসলে বিপদের মুখোমুখি হলে শরীর এক ধরনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে— হয় লড়তে হবে নয়তো সেখান থেকে দ্রুত সরে যেতে হবে। চোখের তারার বড় হয়ে যাওয়া সেই প্রস্তুতিরই লক্ষণ।
মাদকাসক্তি
উত্তেজক মাদকের ব্যবহারে চোখের তারা আকারে বড় হবে। অন্য দিকে ব্যথা-বেদনার উপশমকারী ওষুধ বা আফিম ব্যবহার করলে চোখের তারা আকারে ছোট হবে।

স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা
দু’টি চোখের তারারন্ধ্র অসমান হলে তা স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যার ইঙ্গিত। মাথায় আঘাত লাগলে বা অটোইমিউন রোগ মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস হলেও তার প্রভাব পড়ে চোখের তারায়।
অটিজ়ম
শিশুদের চোখের তারার নড়াচড়া যদি অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, তবে তা অটিজ়মের লক্ষণ।
শারীরিক উত্তেজনা
চোখের তারার ঘন ঘন আকার বদল হওয়া শারীরিক উত্তেজনা বা মিলনেচ্ছার জন্যও হতে পারে। অবশ্য অতিরিক্ত ক্লান্তি বোধ এবং মেধাজনিত চাপের কারণেও এমন হতে পারে।
মনোবিদ বলছেন, এই সবই রোগের লক্ষণ। সত্যিই রোগ হয়েছে কি না, তা শুধু চোখের তারা দেখে নির্ণয় করে নিশ্চিত হওয়া যাবে না। তবে আগে থেকে সতর্ক হওয়া সব সময়েই ভাল। যাতে চোখের তারায় অস্বাভাবিক কিছু নজর করলে দেরি হওয়ার আগে নিরাময়ের বন্দোবস্ত করা যায়।