কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
উপাচার্য-রেজিস্ট্রার ‘বিরোধে’ মঙ্গলবার ফের সরগরম হয়ে উঠল কোচবিহারের পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়।
উপাচার্যের অভিযোগ, সেখানে ভাঙা হয়েছে রেজিস্ট্রারের অফিসঘরের তালা। একাধিক ‘সিসিটিভি ক্যামেরা’ও ভাঙা হয়। তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয় উপাচার্যের অফিসে। অফিসে ঢুকতে না পেরে দীর্ঘ সময় বাইরে দাঁড়িয়ে থাকেন উপাচার্য নিখিলেশ রায়। তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভও দেখানো হয়। বরখাস্ত হওয়া রেজিস্ট্রার আব্দুল কাদের সফেলি সে সময়েই পৌঁছন বিশ্ববিদ্যালয়ে। অফিসও করেন তিনি। উপাচার্য যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে একটি চেয়ারে বসে রয়েছেন, তাঁর পাশ দিয়ে বেরিয়ে যান রেজিস্ট্রার। তবে দু’জনের মধ্যে কথা হয়নি। ইতিমধ্যে সেখানে আন্দোলনরত তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এবং তৃণমূল প্রভাবিত কর্মচারী সংগঠনের মাঝে পড়ে যান উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সুবিনয় সাহা রায়। আন্দোলনকারীদের একাংশ তাঁকে ঘাড়ে ধাক্কা দেয়, নিগ্রহ করে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের দাবি। সুবিনয় বলেন, ‘‘ উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম। আমার সঙ্গে যা হয়েছে, তা ঠিক হয়নি।’’ এমনই পরিস্থিতির মুখোমুখি হন কয়েকশো ছাত্রছাত্রী।
উপাচার্য বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে। এক জন মন্ত্রী পিছন থেকে কলকাঠি নাড়ছেন। বরখাস্ত রেজিস্ট্রারও রয়েছেন তাঁদের মধ্যে। এ ভাবে তালা ভাঙিয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে পারেন না। আমি পুলিশকে মৌখিক ভাবে জানিয়েছি। এ বার এফআইআর করব। কেউ যদি ভেবে থাকেন এ ভাবে আমাকে ভয় দেখাবেন, তা হলে তিনি মূর্খের স্বর্গে বসবাস করছেন।’’ অফিসে পৌঁছে রেজিস্ট্রার বলেন, ‘‘আমি রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরের অধীন কর্মী। উচ্চশিক্ষা দফতর যেমন নির্দেশ দিয়েছে, সে ভাবেই এখন থেকে নিয়মিত কাজ করব। এই মুহূর্তে আর কিছু বলব না।’’
১০ মে একাধিক অভিযোগে রেজিস্ট্রারকে বরখাস্ত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্রদীপকুমার করকে রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। রেজিস্ট্রারের মূল অফিস ‘সিল’ করে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। প্রদীপবাবু অন্য একটি ঘরে বসে ওই দায়িত্ব সামলাতে শুরু করেন। সে সময় থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা যায়নি আব্দুল কাদের সফেলিকে। ওই বিষয়ে উচ্চ আদালতে একটি মামলাও চলছে।
এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ রেজিস্ট্রার পৌঁছন বিশ্ববিদ্যালয়ে। তার আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনে শামিল হয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এবং তৃণমূল প্রভাবিত কর্মচারী সংগঠন। তারা উপাচার্যের বিরুদ্ধেই একাধিক অভিযোগে সরব হয়। সফেলি দাবি করেন, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছে দেখতে পান, তাঁর অফিসের তালা খোলা রয়েছে। উপাচার্য দুপুরের পরে, অফিসে পৌঁছন। সেই সময় তাঁর অফিস ‘তালাবন্দি’ ছিল। অভিযোগ, অফিসঘরের সামনে পথ আটকে বসেছিলেন কয়েকজন ছাত্রছাত্রী। তাঁরা উপাচার্যের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। উপাচার্য আরও অভিযোগ করেন, তাঁর গাড়ি ভাঙচুর করা হবে বলে চালককে ভয় দেখিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পরে, তিনি অন্য একটি গাড়িতে ফিরেছেন।
আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের দাবি, ‘‘উপাচার্য সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের কথা চিন্তা না করেই নানা পদক্ষেপ করছেন। সে কারণেই আমরা আন্দোলন করছি।’’ কর্মচারী সংগঠনের সভাপতি রুহেল রানা আহমেদ বলেন, ‘‘আমাদের আট দফা দাবি মানা হয়নি। তার প্রতিবাদেই আন্দোলন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy