শহরের পানীয় জল উত্তোলন কেন্দ্রে, সংস্কারের কাজ চলছে। জমে যাওয়া পলি সরাতে, উদ্যোগী কর্মিরা। ছবিঃ স্বরূপ সরকার।
সিকিমের দক্ষিণ লোনাক হ্রদে জলস্ফীতি বিপর্যয়ের জেরে, গজলডোবায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল তিস্তার বাঁধ। বর্ষার আগে তা মেরামত করা জরুরি। সে কাজ প্রাথমিক ভাবে চালু হলেও আজ, শুক্রবার থেকে পূর্ণোদ্যমে শুরু হবে। ওই কাজের জন্য ফুলবাড়িমুখী তিস্তা ক্যানালে জল আসবে না। তাতে শিলিগুড়ি শহরে জল সরবরাহের জন্য ফুলবাড়ি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে ক্যানাল থেকে জল মিলবে না। আপাতত, ক্যানালে মজুত যে জল রয়েছে তাতে কয়েক দিন চলবে। তবে যে কোনও সময় পানীয় জলের সমস্যা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রায় ২৪ দিন জলের সমস্যা চলতে পারে বলে জানিয়েছেন শিলিগুড়ি পুর কর্তৃপক্ষ। এই সময় ওয়ার্ডগুলোতে জলের সমস্যা মেটাতে জলের ট্যাঙ্ক পাঠিয়ে বা পাউচ বিলি করে বিকল্প ব্যবস্থা করছে পুরসভা।
পুরসভায় ২৪ ঘণ্টার জন্য কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সেখানে যোগযোগের ফোন নম্বর ৭৫৫৭০৩৫১৯৪। এর মধ্যেই পাইপ ফেটে ৩৬ থেকে ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডে এ দিন জলের সমস্যা দেখা দেয়। সকালে ওই সমস্ত এলাকায় জল মেলেনি অধিকাংশ জায়গায়। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘‘মানুষের অসুবিধা বুঝতে পারছি। কিন্তু আমরা নিরুপায়। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত তিস্তা বাঁধ সারানো জরুরি। না হলে, বর্ষায় জনবসতি এলাকা প্লাবিত হবে। সে জন্য এই কাজ সেচ দফতরকে করতেই হবে। এক মাসের কাজ। তাদের অনুরোধ করা হয়েছে দিনরাত্রি কাজ করে ১৫-২০ দিনে শেষ করার। আমরাও সেটা নজরদারিতে থাকব।’’
পুর কর্তৃপক্ষ জানান, ইতিমধ্যেই জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে দিয়ে বিকল্প ‘ইনটেক ওয়েল’-এর কাজ শুরু হয়েছে। মেয়রের অভিযোগ, ৪০ বছরে বামেরা তা করতে পারেনি। তাই এখন সমস্যা হবে। যে জল মজুত রয়েছে, তা থেকে তিন চার দিন এখন হয়তো জল মিলবে। তার পরে, ধীরে ধীরে জল সরবরাহ কমবে। তিস্তার জল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। পুরসভার আরও বক্তব্য, নতুন প্রকল্প এই বোর্ডের পরিকল্পনায় রয়েছে। সিপিএমের পুরপ্রতিনিধি শরদিন্দু চক্রবর্তী অবশ্য বলেন, ‘‘কথায় কথায় আগের বোর্ডকে দোষ না দিয়ে, এই পরিস্থিতি কী ভাবে সামলাবেন মেয়র, সেটা আগে দেখুন।’’
এই অবস্থায় বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে মেয়র জানান, লিঙ্ক ক্যানালে তিস্তার জল বন্ধ হলেও মহানন্দার জল পরিস্রুত করে শহরবাসীকে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। তাই পুরোপুরি জল বন্ধ হবে না। সরবরাহ কমবে। ৪৭টি ওয়ার্ডে ঘাটতি মেটাতে ২১টি জলের ট্যাঙ্ক বিভিন্ন এলাকায় পাঠানোর জন্য প্রস্তুত রয়েছে। তার মধ্যে পাঁচটি জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর দিচ্ছে। যাঁরা বিয়ে, শ্রাদ্ধের অনুষ্ঠানের জন্য অনেক আগে থেকে জলের ট্যাঙ্ক ‘বুক’ করেছিলেন, সেগুলো তাঁদের দিতে হচ্ছে। তিন হাজার জলের ‘পাউচ’ প্রতি বরোতে প্রতিদিন বিলি করতে দেওয়া হবে। মেয়র আরও জানান, বাসিন্দাদের অনুরোধ করা হচ্ছে, তিন-চার দিন পরে জলের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে রাখতে। তা হলে এই পরিস্থিতিতে মোকাবিলা করতে পুর কর্তৃপক্ষের সুবিধা হবে।
জল সরবরাহ বিভাগের মেয়র পারিষদ দুলাল দত্ত জানান, সেচ দফতর থেকে জানানো হয়েছে, মহানন্দায় এখন পাঁচ কিউমেক জল প্রবাহিত হয়। পানীয় জলের জন্য পুরসভার দরকার এক কিউমেক জল। তাই ‘ইনটেক ওয়েল’-এ জলস্তরের উচ্চতা ১০৭.৩৫ মিটার ধরে রাখতে পারলে, খুব বেশি সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তবে ভারী বৃষ্টি হলে জল ঘোলা হয়ে যাবে। তখন সমস্যা বাড়বে। এখন যে ‘ইনটেক ওয়েল’ আছে, তাতে পলি পড়ে সমস্যা হচ্ছিল। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় এ দিন পর্যন্ত সেই পলি পরিষ্কার করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy