দীপশ্রী রায়
আমার শহর, প্রিয় শহর জলপাইগুড়ি। কিন্তু ইদানীং এই শহরটায় রাতে একা নিজের বাড়িতে থাকলেও ভয় করে। নিরাপত্তার অভাব বোধ হয়। সবসময়েই আশঙ্কা থাকে, রাতবিরেতে কোনও অবাঞ্ছিত পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে না তো? নানা অজুহাতে কেউ কলিং বেল বাজিয়ে সাক্ষাৎ বিপদ হয়ে হাজির হবে না তো?
কেন এই আশঙ্কা? আমার শহর কি বদলে যাচ্ছে? সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যে ভাবে মহিলাদের ওপর অত্যাচার চলছে, তার রেশ কি আমাদের শহরেও আছড়ে পড়বে?
শনিবার বা রবিবার সন্ধ্যের পরে শহরের রাস্তাঘাট সুনসান হয়ে পড়ে। অন্যান্য দিনেও সন্ধ্যের পরে ফাঁকা হয়ে যায় শহরের অনেক রাস্তা। দু’যুগেরও বেশি সময় ধরে এই শহরে বসবাসের সুবাদে বলতে পারি, সুনসান রাতের রাস্তায় হাঁটতে আজকাল ভয় করে। অফিসের কোনও তরুণীকে সেই সব রাস্তা দিয়ে কাজে পাঠাতেও ভয় লাগে। বেশ কয়েক বার ভাবতে হয়। আমরা যাঁরা শহরে ঘোরাঘুরি করে কাজ করি, তাঁদের কাছে বিভিন্ন মোড়ে দাঁড়ানো রিকশা-ই ছিল ভরসা। রিকশা চালকদের মুখও চেনা ছিল। এখন শহর বেড়েছে। টোটো বেড়েছে তার কয়েকগুণ। কারা টোটো চালাচ্ছে, তাঁদের সম্পর্কে কোনও তথ্য কী কোথাও রাখা আছে? নেই। রাতের পরে একা টোটোতে উঠতে অনেকের মতো আমিও দ্বিধা করি। মুখ চেনা কোনও চালকের টোটো উঠতেই বরং স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। আবার ফাঁকা জায়গায় বা আবছা আঁধারে দু-তিন জন ছেলেকে জড়ো হয়ে থাকতে দেখলেই কেন জানি এক অজানা ভয় মনকে গ্রাস করে।
বিবেক, চেতনা, মনন সব খুইয়ে যুবসমাজের একটা অংশ অমানবিক হয়ে উঠেছে। শুধু যুবসমাজকেই বা দোষ দিই কেন? প্রৌঢ়রাও তো আছেন সন্দেহের তালিকায়। উন্মত্ততাকে প্রশ্রয় দেওয়াই যেন অনেকের একমাত্র কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তবে জলপাইগুড়ি শহর সৌন্দর্য, সবুজের শহর। শহরের শান্ত সুন্দর পরিবেশকে যে ভাবেই হোক রক্ষা করতে হবে আমাদের।
(লেখক সমাজসেবী, জলপাইগুড়ি শহরের একটি বেসরকারি সংস্থা চালান )
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy