জয়ী: বাড়িতে রিয়া। নিজস্ব চিত্র।
কোমর থেকে নীচের অংশ অসাড়। সর্বক্ষণের সঙ্গী হুইলচেয়ার। মস্তিস্কে জমে জল, কোমরে বেরিয়ে রয়েছে একটি টিউমার। যাতে চামড়ার আস্তরণটুকু নেই। সর্বক্ষণ ওষুধ ও তুলো দিয়ে ঢেকে রাখতে হয়।
প্রতিকূলতার মধ্যে অদম্য জেদ হার মানতে পারেনি আলিপুরদুয়ার জংশনের রিয়া রায়কে। রিয়ার স্বপ্ন প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষিকা হবে। বছর দু’য়েক আগে মাধ্যমিক আটাত্তর শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করেছিল রিয়া।
ছোট বেলা থেকে তার অভিভাবকরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটেছেন চিকিৎসকার জন্য। তবে সে রকম ভাবে সম্পূর্ণ রোগ মুক্ত হতে পারেনি রিয়া। প্রতিকূলতা সঙ্গী করে হাসি মুখে ছোট বেলা থেকে ঘরে বসেই ছবি আঁকা, গল্পের বই পড়াকে সঙ্গী করে লড়াই চলছে।
উচ্চমাধ্যমিকের রেজাল্ট হাতে পেয়ে রিয়া জানিয়েছে, এখন লক্ষ্য কলেজ ভর্তি হওয়া। ইচ্ছে রয়েছে প্রাথমিক শিক্ষিকা হওয়ার। রিয়ার বাবা বকুলচন্দ্র রায় কেন্দ্রীয় সরকারের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। তিনি জানান, মেয়ের মস্তিস্কে জল জমে যায়। শরীরে হাড়ের গঠন অসম্পূর্ণ। মস্তিস্কে জলের জন্য দৃষ্টি শক্তিতেও সমস্যা। কোমরের দিকে টিউমারটি অসুরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। সেখান দিয়ে মস্তিস্কের জমা জল বের হয়। কোমরের নীচের অংশ অসাড় থাকায় নিয়মিত স্কুলে যেতে পারেনি সে। বাড়িতে সর্বক্ষণ নজরে রাখেন মা ববি রায়। তিনি জানান, ‘‘মেয়ের অদ্যম জেদ লড়াইয়ের সাহস জুগিয়েছে। আমরা চাই ও আরও পড়ুক। চিকিৎসার জন্য মাসে কয়েক হাজার টাকা খরচ। রাজ্য সরকার এগিয়ে এলে ভাল হয়।’’
রিয়ার উচ্চমাধ্যমিকে মোট প্রাপ্ত নম্বর ৩৩৬। বাংলায় ৫৭, ইংরেজিতে ৭২ কম্পিউটারে ৬০ ইতিহাসে ৬৪ রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ৬৫ দর্শন ৭৫ পেয়েছে। কাকা শ্যামল রায় জানান, ‘‘সকলেই পাশে রয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy