বৈষ্ণবনগরে বিজেপির দলীয় সভায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর হাতে আবাস যোজনার দরখাস্ত দেওয়ার হুড়োহুড়ি। নিজস্ব চিত্র
মালদহে প্রথমে কেষ্টপুর এবং পরে গোলাপগঞ্জ বিএসএফ ক্যাম্পের মধ্যে বাসিন্দাদের কাছ থেকে আবাস যোজনার আবেদন নেওয়াকে ঘিরে বৃহস্পতিবার বিতর্কে জড়ালেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী কপিল মোরেশ্বর পাটিল। তৃণমূলের অভিযোগ, বিএসএফ ক্যাম্প সীমান্ত পাহারার কাজে ব্যবহৃত হয়। সেখানে সাধারণ মানুষকে ডেকে বৈঠক করে ও আবাস যোজনার আবেদনপত্র জমা নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যা করেছেন, তা রাজনীতি ছাড়া আর কিছুই নয়। মন্ত্রী অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, ক্যাম্পে বিএসএফের ‘সিভিক মিট’ ছিল। বিষয়টি দৈনন্দিন। এখানে এসে সাধারণ মানুষের সঙ্গে দেখা হয়েছে, কথা হয়েছে। সাধারণ মানুষকে ডাকা হয়নি। রাজনীতি করার অভিযোগ ঠিক নয়। এ দিকে, এ দিন বিকেলে বৈষ্ণবনগর বিধানসভার বেদরাবাদ এলাকায় কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই বিজেপির সভায় আবাস যোজনার আবেদন জমা নেওয়া নিয়ে তুমুল বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। বিজেপির জেলা নেতৃত্ব মাইক্রোফোন হাতে বারবার পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন। শেষ পর্যন্ত আবেদন জমা নেওয়া বন্ধ করে দেন বিজেপির জেলা নেতৃত্ব। এই সভা থেকেই মন্ত্রীর হাত দিয়ে গরিব মানুষদের শীতবস্ত্র বিলি করার ঘোষণা আগে মাইকে করা হলে শেষ পর্যন্ত আর তা দেওয়া হয়নি।
মালদহ জেলা সফরের তৃতীয় দিনে, বৃহস্পতিবার সকালে মালদহের রামকৃষ্ণ মিশনে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি, মিশন সংলগ্ন স্বামী বিবেকানন্দের মূর্তিতে মাল্যদান করেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী। এর পরেই তিনি চলে যান ইংরেজবাজার ব্লকের যদুপুর ২ পঞ্চায়েতের বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন কেষ্টপুর বিএসএফ ক্যাম্পে। সেখানে প্রথমে স্থানীয় গ্রামবাসীদের সঙ্গে সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন তিনি। মন্ত্রীকে কাছে পেয়ে আবাস যোজনা, বেহাল রাস্তা, পানীয় জলের সমস্যা তুলে ধরেন এই সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা। ওই আলোচনা চলাকালীন এই পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা বিজেপির সদয় মণ্ডল-সহ অনেক গ্রামবাসী মন্ত্রীর হাতে আবাস যোজনার আবেদনপত্র তুলে দেন। বিএসএফ ক্যাম্পে গ্রামবাসীদের সঙ্গে মন্ত্রীর এই আলোচনা নিয়ে বিতর্ক ছড়ায়। গ্রামবাসীদের ডেকে এনে বিএসএফ ক্যাম্পে সাক্ষাৎ কেন? মন্ত্রীর বিরুদ্ধে রাজনীতি করার অভিযোগ তোলে শাসক দল।
এর পরে, মন্ত্রী চলে যান ইংরেজবাজারের মহদিপুর বিএসএফ ক্যাম্প হয়ে কালিয়াচক তিন নম্বর ব্লকের গোলাপগঞ্জ বিএসএফ ক্যাম্পে। এখানেও প্রচুর মানুষ ভিড় করেছিলেন। মহিলাদের ভিড় ছিল বেশি। প্রতিমন্ত্রী এখানেও ওই বাসিন্দাদের কাছে অভাব-অভিযোগ শোনেন। বাসিন্দারা মূলত আবাস যোজনায় ঘর পাননি বলে অভিযোগ করেন। সেখানেও কালিয়াচক ৩ পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপি সদস্য তথা দলের মণ্ডল সভাপতি শেখর মণ্ডল মন্ত্রীর হাতে একগুচ্ছ আবেদনপত্র তুলে দেন বলে অভিযোগ।
তৃণমূলের রাজ্য নেতা কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর দাবি, ‘‘বিএসএফ ক্যাম্পে সাধারণ মানুষকে ডেকে বৈঠক করে, আবেদনপত্র জমা নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যা করেছেন, তা রাজনীতি ছাড়া আর আর কিছুই নয়।’’ যদিও প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘‘বিএসএফের ক্যাম্পে তাঁদের ‘সিভিক মিট’ ছিল। বিষয়টি দৈনন্দিন। ক্যাম্পে এসে সাধারণ মানুষের সঙ্গে দেখা হয়েছে, কথা হয়েছে। আমি এসেছি বলে সাধারণ মানুষকে ডাকা হয়নি। রাজনীতি করার অভিযোগ সঠিক নয়। মালদহে আবাস যোজনা নিয়ে প্রচুর মানুষের আক্রোশ রয়েছে। জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলব। প্রয়োজনে, আরও তদন্ত হবে।’’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘মালদহে তিন দিনের সফরে যা অভিযোগ পেলাম, তাতে মনে হচ্ছে, হাজার হাজার গরিব মানুষ আবাস যোজনার ঘর থেকে বঞ্চিত। যে সমস্ত আবেদনপত্র পেলাম সে সব নিয়ে আমি কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের সঙ্গে কথা বলব। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এই আবেদনগুলি নিয়ে পরে ফের সমীক্ষা করানো যায় কিনা তা-ওদেখা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy