ঘেরাও: বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকর্মীদের হাতে ঘেরাও হয়ে রয়েছেন রেজিস্ট্রার বিপ্লব গিরি। নিজস্ব চিত্র
২০ ঘণ্টারও বেশি সময় পার করে অবশেষে ঘেরাওমুক্ত হলেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিপ্লব গিরি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে রাতারাতি জারি হল নির্দেশিকা। তাতে বলা হয়েছে, নির্দিষ্ট বেতনের সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন চার হাজার ২০০ টাকা ভাতা মেনে নিয়ে শুক্রবার দুপুর দু’টোর মধ্যে কাজে যোগ দিতে হবে। না হলে পদক্ষেপ করার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। তার পরেই এ দিন দুপুরের মধ্যে আন্দোলন প্রত্যাহার করলেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তিভিত্তিক শিক্ষাকর্মীরা। বেলা ১২টা নাগাদ ঘেরাওমুক্ত হলেন রেজিস্ট্রার। এ দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার সাদেক আলিকে হেনস্থার অভিযোগে সাসপেন্ড করা হল আন্দোলনরত এক চুক্তিভিত্তিক শিক্ষাকর্মী কার্তিক রায়কে।
চাকরি স্থায়ী করা-সহ ১০ দফা দাবিতে নভেম্বর থেকে টানা এক মাস বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মবিরতি পালন করেছিলেন ১১৮ জন চুক্তিভিত্তিক শিক্ষাকর্মী। শিক্ষাকর্মীদের বক্তব্য, সে সব দাবি পূরণ না হওয়ায় সোমবার থেকে ফের তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন শুরু করেন। মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে, ফটকের বাইরে বিক্ষোভের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আধিকারিককে ঘেরাও করে রাখেন। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে মূল ফটকের বাইরে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। বিকেল ৩টে নাগাদ রেজিস্ট্রার বিপ্লব সেখানে পৌঁছলে গেটের বাইরে তাঁকে ঘেরাও করেন শিক্ষাকর্মীরা। পরে রাত ৮টা নাগাদ গ্রন্থাগার বিভাগের বাইরে রেজিস্ট্রারকে ঘেরাও করে রাখেন তাঁরা। রাতভর বসে থেকে শুক্রবার বেলা ১২টা নাগাদ ঘেরাওমুক্ত হন তিনি। এ দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে সহকারী রেজিস্ট্রার সিদ্ধার্থশঙ্কর মান্না শিক্ষাকর্মীদের কাজে যোগ দিতে নির্দেশিকা জারি করেন। তাতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের এগজ়িকিউটিভ কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের অন্তর্বর্তীকালীন ভাতা হিসেবে প্রতি মাসে যে চার হাজার ২০০ টাকা করে দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে, তাকে মান্যতা দিয়ে শুক্রবার বেলা ২টোর মধ্যে শিক্ষাকর্মীরা কাজে যোগ দেবেন কিনা তা লিখিত ভাবে জানাতে হবে। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার রাতেই চুক্তিভিত্তিক শিক্ষাকর্মী কার্তিককে সাসপেন্ড করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদত্যাগী উপাচার্য স্বাগত সেন। উপাচার্য জানিয়েছেন, শিক্ষাকর্মীদের আন্দোলন চলাকালীন ডেপুটি রেজিস্ট্রারকে হেনস্থা করেন ওই শিক্ষাকর্মী। সাসপেন্ড অবস্থায় তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে বারণ করা হয়েছে। তিনি বেতনও পাবেন না।
সূত্রের খবর, এই দু’টি ঘটনায় চাপে পড়ে যান আন্দোলনকারী শিক্ষাকর্মীরা এবং দুপুরে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন। ‘সারা বাংলা তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতি’-র গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি শুভায়ু দাস বলেন, ‘‘আমরা অন্তর্বর্তীকালীন ভাতা চাইনি। চাকরির স্থায়ীকরণ এবং রোপা ২০১৯ অনুযায়ী বেতন দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় এক প্রকার চাপ সৃষ্টি করে আন্দোলন প্রত্যাহারে বাধ্য করল। নতুন উপাচার্য না আসা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন স্থগিত রাখলাম।’’
রেজিস্ট্রার বিপ্লব গিরি বলেন, ‘‘আন্দোলনের নামে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে প্রায় ২০ ঘণ্টা ঘেরাও করে রাখা হয়। রাতের দিকে অসুস্থ বোধ করছিলাম। বাড়িতে ফিরতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা রাতভর ঘেরাও করে রাখেন। শেষ পর্যন্ত এগজিকিউটিভ কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত মেনে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন। চাইছি বিশ্ববিদ্যালয় স্বাভাবিক ভাবে চলুক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy