২০ বছর আগে ঠাকুরনগরে এই মন্দির তৈরি করেছিলেন শরৎচন্দ্র। —নিজস্ব চিত্র।
কবিগুরু নাকি স্বপ্নে এসে পুজো চেয়েছিলেন। তার পর থেকে গত ২০ বছর ধরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তি গড়ে মন্দিরে পুজো হচ্ছে ‘উত্তরের শান্তিনিকেতনে’। মঙ্গলবার রবীন্দ্রনাথের ১৬২তম জন্মবার্ষিকীতে সাড়ম্বরে পুজো হল এখানে। বিতরণ হল ভোগও।
শিলিগুড়ি শহরের এক প্রান্তে ঠাকুরনগর। জায়গাটি লোকমুখে ‘উত্তরের শান্তিনিকেতন’ বলে পরিচিতি পেয়েছে। সৌজন্য জনৈক শরৎচন্দ্র দাস। তাঁর তৈরি এই মন্দিরই হয়তো একমাত্র মন্দির যেখানে রবীন্দ্রনাথকে দেবতা হিসেবে পুজো করা হয়। উল্লেখ্য, রবীন্দ্রনাথ নিজে ব্রাহ্ম ধর্মে দীক্ষিত ছিলেন। মূর্তিপুজোর বিরোধী তিনি।
২০ বছর আগে ঠাকুরনগরে এই মন্দির তৈরি করেছিলেন শরৎচন্দ্র। কয়েক বছর আগে তিনি মারা যান। এরপর থেকে মন্দিরের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন স্বামী সুধাকৃষ্ণ দাস গোস্বামী মহারাজ। স্থানীয়রা বলছেন ওই মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা স্বর্গীয় শরৎচন্দ্র স্বপ্ন দেখেছিলেন যে কবিগুরু তাঁর কাছে পুজো চাইছেন। তার পরই ঠাকুরনগরে ছোট্ট একটি মন্দির বানিয়ে রবীন্দ্রনাথের ছবি দিয়ে পুজো করা শুরু করেন তিনি। ধীরে ধীরে তাঁর ‘শিষ্য’ বাড়তে থাকে। গড়ে ওঠে আস্ত একটি মন্দির। পরবর্তীকালে কবিগুরুর বড় একটি মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয় সেখানে।
রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী এবং রবীন্দ্রনাথের প্রয়াণ দিবসে পুজোর পাশাপাশি মেলাও বসে এখানে। আগে প্রচণ্ড ভিড় হত ওই মেলায়। বাইরে থেকেও প্রচুর মানুষও আসতেন। কিন্তু এখন সে সব হয় না। তবে নিয়ম করে কবিগুরুর পুজো হয়। মঙ্গলবার রবীন্দ্রজয়ন্তীতে দেখা গেল ধূপকাঠি জ্বেলে মন্ত্র পড়ে পুজো হয় রবি ঠাকুরের। প্রসাদ বিলিও হয়।
এমনিতে রোজ নিয়ম করে দু’বেলা পূজিত হন কবিগুরু। মন্দিরের দায়িত্বে থাকা স্বামী সুধাকৃষ্ণ দাস গোস্বামী মহারাজ বলেন, “আমি খালি পুজো করি রোজ। আগে এখানে শিষ্যরা আসতেন। কিন্তু এখন কেউ আসতে চান না। আর নতুন প্রজন্ম তো ঠাকুরকে চেনেই না। তাই জায়গাটা খাঁ খাঁ করে। এখন আর মেলাও বসে না। আমি চলে গেলে এই মন্দির আদৌ থাকবে কি না জানা নেই।” তিনি চান মন্দিরটির উন্নতিকল্পে প্রশাসন সাহায্য করুক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy