মহম্মদ সেলিম। —ফাইল ছবি।
নিয়মের বেড়াজালে নতুনদের দলে অন্তর্ভুক্তিকরণে কোনও বাধা তৈরি করা যাবে না। এই ‘দুর্দিনে’ যাঁরা দলের কর্মসূচিতে আসছেন, অথচ দলের মধ্যে নেই, তাঁদের দলীয় কাঠামোর মধ্যে আনতে ‘উদার’ হওয়ার বার্তা দিল সিপিএম। রাজ্য কমিটির বৈঠক থেকে এই মর্মে সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশিই, রাজ্য কমিটির বৈঠকের দ্বিতীয় দিনেও অব্যাহত রইল দলের দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা সম্মেলন সংক্রান্ত বিতর্ক।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্মেলনে বেনজির অশান্তির ঘটনা ঘটেছিল গত ২১ ডিসেম্বর। জেলা কমিটির প্যানেল থেকে একাধিক তরুণ ও পরিচিত মুখকে বাদ দেওয়ায়, ১৮ জন নাম প্রত্যাহার করেছিলেন। সেই তালিকায় ছিলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রী মিলি চক্রবর্তী, প্রাক্তন মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের পুত্র সাম্য গঙ্গোপাধ্যায়, প্রাক্তন বিধায়ক রামশঙ্কর হালদার, তনুশ্রী মণ্ডল, চন্দনা ঘোষ দস্তিদার, সুব্রত দাশগুপ্তেরা। সোমবার রাজ্য কমিটির বৈঠকে ওই গণ নাম প্রত্যাহারকে উপদলীয় কার্যকলাপ বলে অভিহিত করেছিলেন জেলা সম্পাদক রতন বাগচী। তাঁকে সঙ্গত করেছিলেন ক্ষেতমজুর সংগঠনের নেতা তুষার ঘোষ। মঙ্গলবার পাল্টা সরব হলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে রাজ্য কমিটির অন্যতম সদস্য তথা প্রাক্তন বিধায়ক রাহুল ঘোষ।
উল্লেখ্য, রাহুলও জেলা কমিটির প্যানেল থেকে নাম প্রত্যাহার করেছিলেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমের সমীকরণে রতন, তুষারেরা যেমন শমীক লাহিড়ীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত দলের মধ্যে তেমন, রাহুলের পরিচয় তিনি সুজনের ঘনিষ্ঠ। সূত্রের খবর, রাজ্য কমিটির বৈঠকে রাহুল বলেছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্মেলনে কোনও উপদলীয় কার্যকলাপ হয়নি। বরং সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠের আধিপত্যবাদ কায়েম হয়েছে। যে ভাবে অপূর্ব প্রামাণিক, অনিরুদ্ধ চক্রবর্তী, অনির্বাণ ভট্টাচার্যের মতো তরুণ সর্বক্ষণের কর্মীদের জেলা কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, তার তীব্র সমালোচনা করেছেন রাহুল। যদিও রাহুল যে ভাবে সংখ্যা গরিষ্ঠের আধিপত্যবাদ বলেছেন, তাতে রাজ্য সম্পাদক সেলিম আমল দিতে চাননি বলেই খবর। তবে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঘটনা যে পার্টির স্বাস্থ্যের জন্য ভাল নয়, তা-ও উল্লেখ করা হয়েছে নেতৃত্বের তরফে।
জানুয়ারি মাস থেকে সিপিএমের দলীয় সদস্যদের পুনর্নবীকরণ প্রক্রিয়া শুরু। সম্মেলন পর্বের মাঝে তাতেও গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে জেলাগুলিকে। জোর দেওয়া হয়েছে নতুনদের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টিতে। অনেক সময়েই দেখা যায়, স্থানীয় স্তরে পুরনো দিনের নেতারা নতুনদের সদস্যপদ দিতে ‘আগমার্কা’ কথা বলে আগ্রহ নষ্ট করে দেন। সেই বিচ্যুতি কাটানোর বার্তা দেওয়া হয়েছে রাজ্য কমিটির বৈঠক থেকে। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘এখনও দলে কিছু লোক আছেন, যাঁরা নতুনদের উৎসাহ দেওয়ার বদলে শুষ্কংকাষ্ঠং কথা বলে নিরুৎসাহিত করেন। সেটাই রুখতে চাওয়া হয়েছে।’’
রাজ্য কমিটির বৈঠকে প্রস্তাব রাখা হয়েছে, এপ্রিল মাসে যাতে শ্রমিক, কৃষক এবং ক্ষেতমজুর সংগঠনের ডাকে ব্রিগেড করা যায়, সে ব্যাপারে উদ্যোগী হতে। যদিও সে বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি। অন্য সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনা করার কথা বলা হয়েছে দলের শ্রমিক, কৃষক এবং ক্ষেতমজুর সংগঠনের নেতৃত্বকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy