এই মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, মামলাকারী শিক্ষকের নাম পরিবর্তনের কারণ খতিয়ে দেখবে আরামবাগ থানা। — ফাইল ছবি।
চাকরির খাতায় নাম পরিবর্তন করতে চেয়ে আবেদন করেছিলেন এক শিক্ষক। নতুন নামের সঙ্গে যোগ রয়েছে অন্য এক ধর্মের। যদিও তিনি ধর্ম পরিবর্তন করেননি বলেই জানিয়েছেন। তা হলে কেন এই নাম পরিবর্তন? কলকাতা হাই কোর্টে মামলার শুনানির সময় প্রশ্ন তুললেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সোমবার তাঁর পর্যবেক্ষণ, ‘‘যে কেউ নাম পরিবর্তন করতেই পারেন। কিন্তু আমাদের সমাজে নামের সঙ্গে ধর্মের মিল দেখা যায়। এ ক্ষেত্রে নাম পরিবর্তনের উদ্দেশ্য পরিষ্কার নয়।’’
এই মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, মামলাকারী শিক্ষকের নাম পরিবর্তনের কারণ খতিয়ে দেখবে আরামবাগ থানা। নাম পরিবর্তনের নেপথ্যে অন্য কোনও উদ্দেশ্য লুকিয়ে রয়েছে কি না, খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দিতে হবে পুলিশকে। আগামী ৬ জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
বিষ্ণুপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কিরণ রায়চৌধুরী। আগে তাঁর নাম ছিল সৈয়দ আফিরুল মান্নান। আরামবাগ পুরসভার ৬ নম্বরের ওয়ার্ডের বাসিন্দা কিরণ সার্ভিস বুকে নাম পরিবর্তন করতে চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেন। সোমবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে ছিল তাঁর মামলার শুনানি। ওই শিক্ষকের বক্তব্য, হিন্দু ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন। আধার কার্ড, ভোটার কার্ড এবং প্যান কার্ডে নাম পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু সার্ভিস বুকে নাম পরিবর্তন করছে না হুগলি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। সেখানে বার বার আবেদন করেও কাজ হয়নি। মামলাকারীর পিটিশন কপি অনুযায়ী, ২০১৭ সালে আধার কার্ডে তাঁর নতুন নাম দেখা যায়।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, ‘‘আপনি নাম পরিবর্তন করেছেন। কিন্তু ধর্ম পরিবর্তন করেছেন কি? মুসলিম ধর্ম থেকে আপনি কি হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছেন?’’ উত্তরে মামলাকারীর আইনজীবী জানান, ধর্ম পরিবর্তন করা হয়নি। কিন্তু তাঁর মক্কেলের নাম পরিবর্তনের অধিকার রয়েছে। এই যুক্তিতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এর পরেই তিনি আরামবাগ থানার পুলিশকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেন। এক মাসের মধ্যে এ নিয়ে রিপোর্ট নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট।
২০১০ সালে ৩ মার্চ প্রাথমিক স্কুলের চাকরিতে যোগ দেন কিরণ। ২০১৭ সালে তিনি নাম পরিবর্তনের আর্জি জানান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদে। পিটিশন অনুযায়ী, মামলাকারীর বাবার নাম সৈয়দ আব্দুল মান্নান এবং মায়ের নাম বকুল চৌধুরী। তাঁর ভোটার কার্ড এবং প্যান কার্ডে মায়ের নাম লেখা রয়েছে। এই সব নথিতে বাবার নাম উল্লেখ নেই। এ বার এই নাম পরিবর্তন নিয়েই প্রশ্ন তুললেন বিচারপতি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy