চড়া দাম আদার।
প্রায় সব রান্নাতেই আদা অপরিহার্য। মাছ, মাংস, ডিম সুস্বাদু করতে যেমন আদা প্রয়োজন, তেমনই নিরামিষ রান্নার ক্ষেত্রেও আদার আদর যথেষ্ট। কিন্তু সে আদার দামেই এ বারে হাত পুড়ছে গ্রাহকদের। গত এক সপ্তাহের মধ্যে কোচবিহার জেলায় আদার দাম কেজি প্ৰতি ১০০-১৫০ টাকা বেড়েছে। যে আদার দাম পাইকারি বাজারে ছিল কেজি প্রতি ৮০-৯০ টাকা, তা পৌঁছে গিয়েছে ২০০ টাকার উপরে। খুচরো বাজারে দাম আরও বেশি। সেখানে এক কেজি আদা কিনতে খরচ পড়ছে ২৫০-৩০০ টাকা। ব্যবসায়ীদের অনেকেই জানিয়েছেন, মণিপুরে টানা গণ্ডগোলের প্রভাব পড়েছে আদার দামের উপরে।
কোচবিহারে প্রয়োজনেরতুলনায় অনেক কম আদা উৎপাদন হয়। বাকি আদা আসেউত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্য ও কেরল থেকে। কিন্তু এ বার আদার উৎপাদন সার্বিক ভাবে কিছুটা কম হয়েছে। তার উপরে, মণিপুরে টানা গোলমালে ওই অঞ্চলে স্বাভাবিক যাতায়াত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তার জেরেই আদা বোঝাই ট্রাকও ঢুকছে না কোচবিহার তথা উত্তরবঙ্গের বাজারে। উদ্যান পালন দফতরের কোচবিহারের জেলা অধিকারিক বিপ্লব সরকার বলেন, ‘‘প্রয়োজনের একটা বড় অংশের আদা আসে বাইরে থেকে। ওই অঞ্চলের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে, আদার দাম কমবে বলে মনে করা হচ্ছে।’’
উদ্যান-পালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার জেলায় দু’শো হেক্টরের বেশি জমিতে আদা চাষ হয়। তবে সে উৎপাদিত আদা জেলার প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটাই কম। তাই প্রত্যেক মাসে কয়েক টন আদা বাইরের রাজ্য থেকে আনা হয়। মণিপুর, মেঘালয়ের মতো পাহাড়ি এলাকায় সব থেকে ভাল মানের আদা উৎপাদন হয়। ওই আদাই কোচবিহার তথা উত্তরবঙ্গের মানুষের আদার চাহিদা মেটায়। উত্তর-পূর্ব ভারতের যে কোনও রাজ্য থেকেই কোচবিহারের দূরত্ব অনেকটা কম। তাই সেখান থেকে আনলে, আদার দামও নিয়ন্ত্রণে থাকে। দিন দশেক কোচবিহারে খুচরো বাজারে আদা বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। তার পরেই আচমকা আদার দাম বাড়তে শুরু করে। আশঙ্কা রয়েছে, এমন চলতে থাকলে আদর দাম আরও বেড়ে যাবে।
কোচবিহারে জেলা ব্যবসায়ী সমিতির প্রাক্তন সম্পাদক তথা কাঁচামালের পাইকারি ব্যবসায়ী চাঁদমোহন সাহা বলেন, ‘‘মণিপুরে বেশ কয়েক দিন থেকে গোলমাল চলছে। মেঘালয়েও তার প্রভাব পড়েছে। ওই অঞ্চল থেকেই আদার জোগান হয়। সেখান থেকে গাড়ি তেমন ভাবে যাতায়াত করতে পারছে না। তাই আদা আনা যাচ্ছে না। দাম বেড়ে গিয়েছে।’’
ব্যবসায়ী সূত্রে খবর, কোচবিহারে প্রত্যেক দিন অন্তত পাঁচ থেকে ছয় মেট্রিক আদা বাইরে থেকে আসে। বাকি আদা স্থানীয় ভাবে উৎপাদন হয়। তবে বড় হোটেল বা খাবারের দোকানে রান্না সুস্বাদু করতে বাইরের আদার উপরেই ভরসা করেন। বণিক সংগঠন ‘ফোসিন’-এর সদস্য তথা দিনহাটা মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক রানা গোস্বামী বলেন, ‘‘মেঘালয়-মণিপুর থেকে যে আদা আসে, তা গুণে-মানে অনেক ভাল। আমাদের এখানে যে আদা উৎপাদন হয়, তা ততটা ভাল নয়। মণিপুরে গোলমাল ছড়িয়ে পড়ায়, তার প্রভাবে আদার দাম বাড়তে শুরু করে।’’ এক গৃহবধূ দীপালি দাস দাস বলেন, ‘‘মাঝেমধ্যে আনাজের দাম বেড়ে যায়। এ বার আদার দাম বেড়েছে। তাতে রান্নায় সমস্যা বেড়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy