তদন্তে: কেন্দ্রীয় দলের সদস্যেরা নিশিগঞ্জের রুনিবাড়িতে। নিজস্ব চিত্র
কারও বাড়ি কাঁচা, কারও আবার পাকা। আবাস যোজনার তদন্তে গিয়ে এমনই ছবি দেখলেন কেন্দ্রীয় দলের দুই সদস্য প্রদোষ শর্মা ও নমন কুমার। সোমবার কোচবিহার জেলার মাথাভাঙার নিশিগঞ্জ গ্রামে যান তাঁরা। সেখানে অভিযোগের তালিকায় নাম থাকা কয়েক জনের পাকা বাড়ি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন। আবার কাঁচা বাড়ি দেখে কেন তাঁদের নাম অভিযোগে এল, প্রশ্ন তোলেন তা নিয়েও। গত চার দিন জেলার চারটি গ্রামে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় দলের সদস্যরা। তার মধ্যে খোলটা-মরিচবাড়ির একটি দোতলা বাড়ির পরিবারের সদস্যের নাম আবাস তালিকায় থাকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা। বিজেপি যে অভিযোগ করেছে, অনেক ক্ষেত্রে সত্যতা পায়নি কেন্দ্রীয় দল।
বিজেপির ন্যাশনাল কাউন্সিল সদস্য নিত্যানন্দ মুন্সী দাবি করেন, ‘‘বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমাদের কেউই কেন্দ্রীয় দলের পরিদর্শনের সময় থাকতে পারেনি। তৃণমূলের হামলার আশঙ্কা ছিল। সে সুযোগে তৃণমূল নিজেদের চশমা দিয়ে কেন্দ্রীয় দলকে এলাকা ঘুরিয়েছে। তাই ঠিক তথ্য তারা পায়নি।’’ তৃণমূলের খোলটা-মরিচবাড়ি পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ক্ষিতীশচন্দ্র রায়ের পাল্টা দাবি, ‘‘বিজেপি ঠিক অভিযোগ করেনি, বুঝতে পেরেছেন কেন্দ্রীয় দলের সদস্যেরা। খোলটায় এক জনের বাড়ি দোতলা করার কাজ চলছে। তাঁর বাবার নাম তালিকায় আছে। তিনি তো আলাদাই থাকেন।’’
এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলটি পৌঁছয় নিশিগঞ্জ ২ পঞ্চায়েতের রুনিবাড়িতে। ন’জন উপভোক্তার বাড়িতে যান। দলটি গ্রামে পৌঁছলে, তাঁদের সামনেই বচসায় জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল ও বিজেপি সমর্থকদের বিরুদ্ধে। সাড়ে ১২ টা নাগাদ বড়শৌলমাড়ি পঞ্চায়েতের চা বাগান এলাকায় যায় দলটি।
নিশিগঞ্জ ২ পঞ্চায়েতের ৯৫টি পরিবারকে তফশিলি জনজাতি দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সেখানে একাধিক ঘরপ্রাপকদের বাড়িতে যায় দলটি। সঙ্গে ছিলেন কোচবিহার জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক সমীরণ মজুমদার ও মাথাভাঙা ২ ব্লকের বিডিও উজ্জ্বল সর্দার। উপভোক্তাদের কয়েকজনের পাকা ঘর থাকায় বিষ্মিত হন তাঁরা। এক উপভোক্তার জব-কার্ড না থাকলেও কী ভাবে তালিকায় নাম এল, তা নিয়ে সমীক্ষকদের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেন দলের সদস্যেরা। উত্তর দিতে পারেননি স্থানীয় প্রশাসনের কর্তারা।
বিজেপির ৭ নম্বর মণ্ডল সভাপতি উত্তম শীলের অভিযোগ, ‘‘আমরা আবাস যোজনায় দুর্নীতির তালিকা তুলে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তৃণমূল বাধা দিয়েছে।’’ তৃণমূলের ব্লক সভাপতি প্রদীপরঞ্জন রায় বলেন, ‘‘বিজেপি মিথ্যা অভিযোগ কেন্দ্রীয় দলের কাছে তুলে ধরার নাম করে আবাস তালিকার তদন্তকে অন্য পথে চালিত করতে চেয়েছিল। গ্রামবাসীরাই তা করতে দেননি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy