স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) তাঁদের নিয়োগ সুপারিশ বাতিল করেনি এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদও বাতিল করেনি তাঁদের নিয়োগপত্র— এমনই দাবি করে রায়গঞ্জের দেবীনগর কৈলাসচন্দ্র রাধারানি বিদ্যাপীঠে শনিবার কাজে ফিরলেন ওই স্কুলের চাকরিহারা দুই শিক্ষিকা কৃষ্ণমৃত্তিকা নাথ ও প্রিয়াঙ্কা গুহ। তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ে কৃষ্ণমৃত্তিকা ও প্রিয়াঙ্কার চাকরি গিয়েছে। শুক্রবার তাঁরা স্কুলে আসেননি। এ দিন ফের এলেন। স্কুলে এসে কাজ করেছেন মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের চণ্ডীপুর হাই স্কুলের চাকরিহারা তিন শিক্ষকও।
রায়গঞ্জের স্কুলে এ দিন কৃষ্ণমৃত্তিকা বলেন, ‘‘কারও মুখের কথায় শিক্ষিকার চাকরি পাইনি। মেধার ভিত্তিতে এসএসসির সুপারিশে এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নিয়োগপত্র নিয়ে গত সাত বছর ধরে চাকরি করছি। এসএসসি আমার সুপারিশপত্র বা পর্ষদ আমার নিয়োগপত্র বাতিল করেনি। তাই স্কুলে এসে কাজে যোগ দিয়েছি।’’ একই বক্তব্য প্রিয়াঙ্কার। তাঁর সংযোজন— ‘‘রাজ্য সরকার এখনও কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করে বা লিখিত ভাবে আমাদের স্কুলে গিয়ে কাজ করতে নিষেধ করেনি। কার কথার ভিত্তিতে স্কুলে আসা বন্ধ করব?’’
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা রাখি বিশ্বাস জানিয়েছেন, এ দিন কৃষ্ণমৃত্তিকা ও প্রিয়াঙ্কা স্কুলের হাজিরা খাতায় সই করেছেন। রাখি বলেন, ‘‘কৃষ্ণমৃত্তিকা ও প্রিয়াঙ্কাকে স্কুলে কাজে যোগ দিতে নিষেধ করার বা তাঁদের বেতন বন্ধ করার বিষয়ে এখনও কোনও সরকারি নির্দেশ পাইনি। ফলে, ওঁরা স্কুলে এসেছেন। তবে, বিতর্ক এড়াতে ওঁদের পরীক্ষার নজরদারির দায়িত্ব দিইনি।’’ এ দিন কৃষ্ণমৃত্তিকা স্কুলে গিয়ে পঠনপাঠন পরিচালনা সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজ করেছেন। স্কুলের কন্যাশ্রী প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিয়াঙ্কা ওই প্রকল্পের নথি তৈরি সংক্রান্ত কাজ করেছেন।
উত্তর দিনাজপুর জেলা শিক্ষা দফতরের সমন্বয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সোমনাথ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আদালতের রায় সংক্রান্ত কোনও বিষয়ে মন্তব্য করব না। তবে, রাজ্য সরকার চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকা-শিক্ষাকর্মীদের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনেই পদক্ষেপ করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।’’
অন্য দিকে, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের চণ্ডীপুর হাই স্কুলের চাকরিহারা তিন শিক্ষকও এ দিন স্কুলে হাজির হয়ে পরীক্ষা পরিচালনা সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজ করেন। তাঁদের মধ্যে এক শিক্ষক অনিলচন্দ্র মণ্ডলের বক্তব্য, ‘‘আমরা মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি পেয়েছি। আমাদের নিয়োগকর্তা বা প্রধান শিক্ষক এখনও পর্যন্ত আমাদের স্কুলে আসতে নিষেধ করেননি।’’
তথ্য সহায়তা: বাপি মজুমদার
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)