Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Robbery in Malda

রানাঘাট, পুরুলিয়ার মতো চাঁচলে সোনার দোকানে ডাকাতিতেও বিহার-যোগ! পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ

ডাকাতি করে পালানোর সময় এলোপাথাড়ি গুলিও চলে। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকটি মোটরবাইকের লুকিং গ্লাস ভেঙে চুরমার হয়ে যায়।

Malda dacoity

সোমবার সন্ধ্যায় ডাকাতির পর সেই সোনার দোকানের সামনে ভিড় মানুষের। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
চাঁচল শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ২০:০৩
Share: Save:

মালদহের চাঁচলে সোনার দোকানে ডাকাতিতেও বিহার-যোগ পাচ্ছে পুলিশ। সোমবার, বড়দিনে গয়নার দোকান থেকে কোটি টাকারও বেশি মূল্যের অলঙ্কার লুট করে পাঁচ জন। ডাকাতি করে পালানোর সময় এলোপাথাড়ি গুলিও চলে। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকটি মোটরবাইকের লুকিং গ্লাস ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও ডাকাতির ঘটনায় মঙ্গলবার চাঁচল থানার নেতাজি মার্কেটে অঘোষিত বন্‌ধ পালন করলেন ব্যবসায়ীরা। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে চরম অসন্তোষ ছড়িয়েছে ব্যবসায়ী মহলে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সোমবার সন্ধ্যায় ডাকাতি করে বাইকে উঠে ডাকাতদল পালানোর একটু পরেই ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। কিন্তু বড়দিন উপলক্ষে গোটা এলাকা যেখানে গমগম করছে, তার মধ্যে এত বড় ভয়াবহ ডাকাতি হয় কী ভাবে, এই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। এ নিয়ে তারা জেলা পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হচ্ছে বলে জানিয়েছে ব্যবসায়ী সমিতি।

চাঁচলের নেতাজি মার্কেটে যে অলঙ্কারের দোকান লুট হয়েছে, সেটা বেশ নামকরা। বেশ কয়েকটি শাখা রয়েছে ওই সংস্থার। চাঁচলের শোরুমের মালিক কর্ণ বিশ্বাস। তিনি রায়গঞ্জের বাসিন্দা। কর্ণ জানান, সোমবার সন্ধ্যায় যে ঘটনা ঘটল, তাতে আতঙ্কিত তিনি এবং সব কর্মচারী। তাই মঙ্গলবার আর দোকান খোলার সাহস পাননি কেউ। লুট হওয়া দোকানের ম্যানেজার মুক্তার আলি বলেন, ‘‘সোমবার রাত সাড়ে ৭টা বাজে তখন। হঠাৎ পাঁচ থেকে ছয় জনের সশস্ত্র একটি দল দোকানে ঢুকে পড়ে। ওদের প্রত্যেকের হাতে বন্দুক ছিল। মাথায় ছিল হেলমেট। কারও কারও মাথায় ছিল হনুমান টুপি। লুটের সময় আমাদের কয়েক জন কর্মীকেও মারধর করা হয়।’’ সিসিটিভিতে দেখা গিয়েছে, পাঁচ মিনিটের মধ্যে গোটা দোকান লুট করে নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। দোকানের ম্যানেজারের দাবি, যে পরিমাণ সোনার অলঙ্কার দুষ্কৃতীরা লুট করেছে, তার মূল্য কোটি টাকারও বেশি। ডাকাতি করে বেরোনোর সময় এলাকার কয়েক জন ডাকাতদলকে ধাওয়া করতে গেলে তারা এলোপাথাড়ি কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে।

দোকানের মালিক তথা চাঁচল ব্যবসায়ী সমিতির কর্মকর্তা কর্ণ বিশ্বাসের অভিযোগ, ‘‘এক মাসের ব্যবধানে চাঁচল এবং হরিশ্চন্দ্রপুরে ডাকাতির ঘটনা ঘটল। দুটোই সোনার দোকানে। এখানে পুলিশের ভূমিকায় আমরা সন্তুষ্ট নই। ডাকাতদল পালিয়ে যেতে পুলিশ ঘটনাস্থলে এল, এটাও কেন হবে? থানা থেকে এই বাজার তো ঢিলছোড়া দূরত্বে। এখনও পর্যন্ত পুলিশ কাউকে ধরতেও পারল না।’’ বস্তুত, গত কয়েক মাসের মধ্যে একের পর এক ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে রাজ্যে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ডাকাতদলের টার্গেট গয়নার দোকান। নদিয়ার রানাঘাট এবং পুরুলিয়া শহরে একই সংস্থার দু’টি গয়নার শোরুমে ডাকাতিতেও বিহার-যোগ পাওয়া গিয়েছিল। দুই ঘটনাতেই বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অন্য দিকে, চাঁচলে ডাকাতির ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভপ্রকাশ করে থানা ঘেরাও করে বিজেপি।

পুলিশ জানিয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে ডাকাতদলকে চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হচ্ছে, স্থানীয় দুষ্কৃতীদের পাশাপাশি বিহারের দুষ্কৃতীরাও ওই ডাকাতির ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে। যে হেতু হেলমেট পরে ডাকাতি হয়েছে, তাই অনেকেরই মুখ পরিষ্কার ভাবে বোঝা যাচ্ছে না। বিভিন্ন সূত্র ধরে ডাকাতদলের খোঁজ চালানো হচ্ছে বলে দাবি পুলিশের। মালদহ জেলা পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, ‘‘কত টাকার অলঙ্কার লুট হয়েছে, তা ওই দোকানের মালিকের সঙ্গে কথা বলার পর পরিষ্কার করে বলা যাবে। ইতিমধ্যে সিসিটিভির ফুটেজ় এবং নানা সূত্র ধরে ডাকাতদলকে ধরতে চিরুনিতল্লাশি শুরু হয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Dacoity in Malda jewellery theft West Bengal Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy