সুষ্ঠু চিকিৎসা পরিষেবা না-পেয়ে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন জ্বর, ডেঙ্গি আক্রান্তদের অনেককেই। শুধু তাই নয়, রবিবার বলে হাসপাতালে এদিন রক্তের প্লেটলেট কাউন্টের পরীক্ষাও বন্ধ রয়েছে। ডেঙ্গি পরিস্থিতে যেখানে অনেক রোগীর দুই বেলা প্লেটলেট কাউন্ট দেখতে হচ্ছে সেখানে ছুটির দিন হলেও কেন বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
জ্বর, মাথাব্যথা নিয়ে হাসপাতালে শুক্রবার ভর্তি হয়েছিলেন রেণু রজক। অভিযোগ, চিকিৎসক রোগীকে ঠিক মতো দেখছেন না। কী করবেন জানতে চইলে নার্স আয়ারা মুখ ঝামটা দিচ্ছেন। জ্বর না-কমলেও রোগীদের অনেককে ছুটি করিয়ে দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। চোখের সামনে এসব দেখে আর ভারসা রাখতে পারেননি কলাহাটির বাসিন্দা রেণুদেবীর স্বামী রমেশবাবু। রবিবার রেনুদেবীকে নিয়ে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল থেকে নিয়ে চলে আসেন।
তার উপর জায়গার অভাবে ওয়ার্ডের মেঝে, করিডরে, সিঁড়ির চাতালে একই শয্যায় দুই-তিনজন করে রোগী। পরিস্থিতি দেখে হাসপাতাল থেকে এদিন আর এক রোগী বিনোদিনীদেবীকে ছুটি করিয়ে নিয়ে যান আত্মীয়েরা।
চম্পাসারির বাসিন্দা প্রতিমা রায়ের অভিযোগ, জ্বর, গা ব্যথা, নিয়ে তাঁর মা পূর্ণিমাদেবীকে শনিবার রাত ১২টা নাগাদ ভর্তি করান। অথচ রবিবার বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদও স্যালাইন লাগিয়ে দিয়ে যায়নি কেউ। নার্স আয়াদের বারবার বলেছেন। কাজ হয়নি। উল্টে এক আয়া এদিন বলে দেন—‘‘এখন যেতে পারব না। শয্যায় বসে থাকুন। সময় পেলে যাব।’’ করিডরের শয্যায় জ্বরে মাকে কাতরাতে দেখে প্রতিবাদ করেন তিনি। নার্স, আয়াদের সঙ্গে তা নিয়ে বচসা বাঁধে। তাঁর দাবি, এক আয়া হুমকি দেন, ‘‘হাজার চেঁচালেও চিকিৎসা হবে না। যেখানে ভাল জায়গা হবে চলে যান।’’
এই পরিস্থিতিতে মায়ের কিছু হলে কে দায়িত্ব নেবে ভেবে নিরুপায় হয়ে তাই জিনিসপত্র গুছিয়ে চলে যেতে লিফটের দিকে যাচ্ছিলেন। সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের দেখে অন্য এক আয়া এসে স্যালাইন লাগাতে হাত ধরে ওয়ার্ডে নিয়ে যেতে টানাটানি শুরু করেন।
পরিষেবা না-পেয়ে হতাশায়, ক্ষোভে অনেকেই তাই রোগীদের নিয়ে চলে যাচ্ছেন অন্যত্র। হাসপাতালের সুপার অমিতাভ মণ্ডল বলেন, ‘‘কেন পরিষেবা ঠিক মতো মিলছে না, তা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। অকারণে যাতে রোগীদের ছুটি না-দেওয়া হয়, চিকিৎসা না পেয়ে যাতে কেউ চলে না যান তা দেখছি।’’
প্রতিমার অভিযোগ, ‘‘সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসে নার্স, আয়াদের এই ব্যবহার দেখে আঁতকে উঠেছি। চিৎকার, চেঁচামেচি করলেও রোগীকে দেখছে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy