—প্রতীকী ছবি।
দুর্গাপুজো ও বিজয়া সম্মিলনী উপলক্ষে হাতে গোনা ক্লাব উদ্যোক্তাদের আয়োজিত জলসা এ বার দীপাবলিতে জমজমাট। বালুরঘাট সহ জেলা জুড়ে প্রায় প্রতিটি কালীপুজো কমিটির উদ্যোগে পুজোর দিন থেকে মণ্ডপগুলিতে জলসা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ভাই ফোঁটার পরদিন পর্যন্ত লাগাতার জলসার আয়োজনের হিড়িকে সংগীত শিল্পী থেকে স্থানীয় অর্কেস্ট্রা শিল্পীদের মুখে হাসি ফুটেছে।
এক সময় পুজো ও বিজয়া সম্মিলনী থেকে বালুরঘাটে পাড়ায় পাড়ায় পালা করে জলসার আসরের পুরনো ধারা হারিয়ে গিয়েছিল। এ বার নতুন করে দীপাবলির রাতে আলোর রোশনাইয়ের সঙ্গে করে মণ্ডপে জলসার আয়োজন উপলক্ষে হারানো বিচিত্রানুষ্ঠান সাড়া ফেলেছে।
শহরের বিগ বাজেটের বালুরঘাট ক্লাব, সাড়ে তিন নম্বর ক্লাব, মিলন সঙ্ঘ, যুবশ্রী, খেয়ালি সঙ্ঘ থেকে ছোট বাজেটের নবপ্রভাত, উত্তরণ, বীরসিংহ, সংকেত ক্লাবের মতো একাধিক শ্যামাপুজো উদ্যোক্তারা এ বারে জলসা অনুষ্ঠান আয়োজনে মেতেছেন। বাদ যাচ্ছে না এ জেলার তপন, গঙ্গারামপুর, কুমারগঞ্জ. কুশমণ্ডি ব্লকের ক্লাব ও পুজো উদ্যোক্তারাও।
বালুরঘাট শহরে বিগত ৭০ বছর পেরিয়ে আসা প্রাচ্য ভারতী ক্লাব প্রাঙ্গণে এ বারেও বিজয়া সম্মিলনী উপলক্ষে জলসা অনুষ্ঠিত হয়েছে। একই দিনে শহরের খাদিমপুর এলাকার প্রতাপ সঙ্ঘ পুজো কমিটি আয়োজন করেছিল জলসার। বরাবরের মতো এ বারে থানা আবাসন মহিলা পুজো কমিটির উদ্যোগে জলসায় অর্কেস্ট্রার বাজনায় স্থানীয় শিল্পীদের গুরুত্ব দেওয়া হয়।
পুজোর পর শহরের চার থেকে পাঁচটি ক্লাব আয়োজিত জলসা অনুষ্ঠানের পর রাতে আর কোথাও থেকে ভেসে আসেনি গান বাজনার সেই পরিচিত মেলোডির সুর। দীপাবলির মরসুমের শুরুতে ফের বালুরঘাটের সেই পুরনো ঐতিহ্য ফিরছে দেখে খুশি অনেকে।
বালুরঘাট ক্লাবের পুজো কমিটির কর্মকর্তা গোপাল রায় কিংবা সাড়ে তিন নম্বর মোড় ক্লাবের বিশ্বনাথ সাহার কথায়, ‘‘আগাম বায়না করেও চাহিদা মতো সঙ্গীত শিল্পী মিলছে না। অনেক আগেই অন্য ক্লাব থেকে তাদের বুক করে নেওয়া হয়েছে।’’
ইদানিং পুজো মরসুমে হাতে গোনা যে ক’টি জলসা অনুষ্ঠিত হয়, তাতে ডাক পড়ে স্থানীয় মেলোডি অর্কেস্ট্রার। চকভবানীর দেবাশিস ভট্টাচার্যের সিনথেসাইজারের পরিচালনায় জনপ্রিয় বাংলা, হিন্দি এবং কিশোর কুমারের গানে সঙ্গীত শিল্পীরা এবারে আসর মাত করতে বালুরঘাট এবং তপনের লস্করহাট এলাকার কালীপুজো কমিটির অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিতে ব্যস্ততা বেড়েছে। গানবাজনাকে পেশা করে আঁকড়ে থাকা দেবাশিসের কথায়, ‘‘আগের মতো আর জলসা অনুষ্ঠিত না হওয়ায় আমরা চরম আর্থিক সমস্যায় রয়েছি। ক্লাব উদ্যোক্তাদের নতুন করে জলসার আয়োজনে উৎসাহ ফিরে পাওয়ায় শিল্পীদের ভরসা বাড়ছে।’’ সাংস্কৃতিক কর্মী কমল দাস থেকে সঙ্গীত শিল্পী গৌতম মজুমদার বলেন, ‘‘সেই আসর, খুশির দোলা জলসা ফিরছে।’’
গান নাটকের সংস্কৃতিতে মোড়া বালুরঘাটে সত্তরের দশক থেকে রোজ পালা করে পাড়ায় পাড়ায় জলসার আসরে শুরুতে রবীন্দ্র, নজরুল, বাংলা আধুনিক গানের পর শেষ চমকটাই ছিল কিশোরের হিন্দি গানে। পুজোর সময় সেই ট্রাডিশন মুছে যেতে বসেছিল। ফের জলসার প্রাণসঞ্চারে সঙ্গীত শিল্পী চন্দন সাহা, দেবাশিস, গৌতম মজুমদারদের মন দুলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy