জখম: পুলিশকর্মী। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে বৃষ্টির মধ্যেই তুমুল অশান্তি হল ধূপগুড়ির সাঁকোয়াঝোরা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতে। বিজেপি একক ভাবেই বোর্ড গঠন করতে পারত। কিন্তু বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া চলাকালীন এক বিজেপি প্রার্থী তৃণমূলকে সমর্থন করায় বোর্ড গঠনের সুযোগ ফস্কে যায় বিজেপির হাত থেকে। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে তৃণমূল সদস্যদের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন বিজেপি সদস্যরা। বিজেপির তিন জন ও তৃণমূলের দুজন সদস্য আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ। যাঁদের মধ্যে একজন অন্তঃসত্ত্বা মহিলা সদস্যও রয়েছেন। অভিযোগ, গন্ডগোল চলাকালীন বিজেপির ওই মহিলা প্রার্থীর পেটে লাথি মারায় অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।
এদিকে বিজেপি ও সিপিআইয়ের দু’জন প্রার্থীকে দলে টেনে তৃণমূল বোর্ড গঠন করেছে সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজপি কর্মী সমর্থকরা। বোর্ড গঠন স্থগিত রাখার দাবিতে গয়েরকাটায় সার্ক রোড অবরোধের ডাক দেওয়া হয়। অবরোধ তুলতে গেলে পুলিশের দিকে ছোড়া হয় ইট-পাথর। পাথরের ঘায়ে আহত হন বানারহাট থানার আইসি সহ তিন পুলিশ কর্মী। ভেঙে যায় জলপাইগুড়ির ডেপুটি পুলিশ সুপার ও বানারহাট থানার আইসি’র গাড়ির কাচ। বাধ্য হয়ে বিজেপি কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠি চালায় পুলিশ। ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল। আটক করা হয় ১৭ জন বিজেপি কর্মী সমর্থককে। গন্ডগোলের জেরে টানা তিন ঘণ্টা ওই সড়কে বন্ধ থাকে যান চলাচল।
জলপাইগুড়ির ডিএসপি ক্রাইম মানবেন্দ্র দাস বলেন, ‘‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। অবরোধকারীদের হটিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে অবরোধকারীদের ছোড়া পাথরে হাত ভেঙেছে থানার এক পুলিশকর্মীর। এ ছাড়াও আরও দুজন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন।’’
ধূপগুড়ির বিডিও রবি প্রসাদ মিনা বলেন, ‘‘বোর্ড গঠন চলাকালীন প্রার্থীদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়েছিল। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর সব দলের প্রার্থীদের উপস্থিতিতে ভোটাভুটির মাধ্যমে বোর্ড গঠন হয়। ফলে বোর্ড গঠন স্থগিত রাখার কোনও প্রশ্নই নেই।’’ স্থানীয় বিজেপি নেতা কৃষ্ণদেব রায়ের অভিযোগ, ‘‘আমাদের এক অন্তঃসত্ত্বা প্রার্থীকে মাটিতে ফেলে পেটে লাথি মারা হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনি জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি। আইন শৃঙ্খলার এই চূড়ান্ত অবনতির পরও প্রশাসন বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়াকে বানচাল ঘোষণা করেনি।’’
জলপাইগুড়ির তৃণমূল জেলা সম্পাদক রাজেশ কুমার সিংহ বলেন, ‘‘বিজেপি বোর্ড গঠন করতে পারবে না জেনেই এদিন রিটার্নিং অফিসারের সামনে ব্যালট পেপার ছিঁড়ে ফেলে। আমাদের পার্থীদের গায়ে হাত তোলে। এতে আমাদের দু’জন প্রার্থী আহত হন। তবে তারপরও বোর্ড গঠন আটকাতে পারেনি বিজেপি।’’
২৭ আসন বিশিষ্ট সাঁকোয়াঝোরা ১ পঞ্চায়েতের ১৪টি আসনে বিজেপি জিতেছিল। তৃণমূল পেয়েছিল ১২ টি ও সিপিআই পেয়েছিল ১টি। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বিজেপির এক প্রার্থী বিনোদ ওঁরাও তৃণমূলকে সমর্থন করেন। তাঁকেই পঞ্চায়েতের প্রধান করে তৃণমূল। একই ভাবে সিপিআইয়ের একমাত্র প্রার্থী সুধীর চন্দ্র রায় তৃণমূলকে সমর্থন করায় তাকে উপপ্রধান বানানো হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy